স্টকমার্কেটবিডি প্রতিবেদক :
সরবরাহ বাড়ায় বাজারে কমতে শুরু করেছে বেশিরভাগ নিত্যপণ্যের দাম। চড়াদামে বিক্রি হওয়া সবজির দাম আবার নাগালের মধ্যে চলে এসেছে। দাম কমার তালিকায় আছে চাল, পেঁয়াজ, ব্রয়লার মুরগি। এছাড়া ইফতারি পণ্য হিসেবে খ্যাত ছোলা ও খেজুরের দাম আরও কমেছে। অপরিবর্তিত রয়েছে ভোজ্যতেল, চিনি, আটা ও ডালের দাম। রসুনের দাম কমলেও বেড়েছে আদার। দাম কমায় স্বস্তি ফিরে এসেছে নিত্যপণ্যের বাজারে। বেশিরভাগ পণ্যের দাম কমে দাম আরও কমার আভাস দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। শাক-সবজি বিক্রেতারা জানিয়েছেন লেবু, মরিচ, শসা, বেগুন, টমেটো ও গাজরের দাম রোজার শুরুতে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছিল। এখন দাম কমে তা প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। কাঁচা মরিচ বেড়ে হয়েছিল ৮০ টাকা, শসা বাজার ভেদে ৮০-১০০ টাকা, লম্বা বেগুণ ও ৮০ থেকে ৯০ টাকায়, লেবুর হালিও ৩০ থেকে ৮০ টাকায় উঠেছিল। তবে এসব সবজির দাম প্রায় অর্ধেক কমে আবার জায়গায় ফিরে এসেছে। রোজার শুরুতে ক্রেতারা বেশি করে নিত্যপণ্য কিনে নেয়ায় এখন বাজারে চাহিদাও কম।
শুক্রবার ও শনিবার কাওরান বাজার, ফার্মগেট বাজার, নিউমার্কেট কাঁচা বাজার, মোহাম্মদপুর টাউন হল মার্কেট ও রায়ের বাজার সিটি কর্পোরেশন কাঁচা মার্কেট ঘুরে নিত্যপণ্যের দরদামের এসব তথ্য পাওয়া গেছে। এছাড়া সরকারী বাজার নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা টিসিবিও বেশিরভাগ নিত্যপণ্যের দাম কমার তথ্য দিয়েছে। সাপ্তাহিক ছুটির দিন লকডাউনের মধ্যেও চড়াদামে বিক্রি হওয়া সবজি কিছুটা কমদামে পেয়ে খুশি ভোক্তারা। ফার্মগেট বাজার থেকে সবজি কিনছিলেন পূর্ব রাজা বাজারের বাসিন্দা মোকলেছুর রহমান। তিনি বলেন, লকডাউনের মধ্যেও বাজারে প্রচুর সবজি ও দাম নাগালের মধ্যে রয়েছে। রোজার শুরুতে যেদাম ছিল কমে তা অর্ধেকে নেমে এসেছে। ওই বাজার থেকে তিনি দুই কেজি শসা কিনছিলেন ৮০ টাকা দিয়ে। তিনি বলেন, রোজার শুরুতে প্রতিকেজি বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকা। এভাবে টমেটো, গাজর, ঢেঁড়স, কাঁচা মরিচসহ সব ধরনের সবজির দাম কমে এসেছে। দাম কমে প্রতিকেজি বেগুন ৬০-৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে।
সবজির পাশাপাশি মুদিপণ্যের দাম কমে গেছে। পেঁয়াজ, রসুন, ভোজ্যতেল, ছোলা ও চালের দাম কমেছে খুচরা বাজারে। দেশী মাছের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। গরু ও খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে আগের দামে। ব্রয়লার মুরগির দাম কমলেও পাকিস্তানী লেয়ারখ্যাত লাল মুরগির দাম এখনো চড়া। প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ২৬০-৩০০ টাকায়। দাম কমে প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৩০-১৪০ টাকায়। বাজার ও আকার ভেদে সোনালী মুরগি ২৬০ থেকে ২৮০ টাকা, দেশি মুরগি ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মোহাম্মদপুর টাউন হল মার্কেটের মুরগি বিক্রেতার মো. মিরাজ বলেন, আগের চেয়ে মুরগির দাম কমছে। তবে যে রকম কমার কথা ছিল তা কিন্তু কমে নি। আগে মুরগি পাওয়া না গেলেও এখন চাহিদা মতো পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া মাংসের মধ্যে খাসি ৭৮০ থেকে ৮০০ টাকা এবং গরু ৫৮০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ডিমের হালি ৩০ থেকে ৩২ টাকা। বাজারে প্রতিকেজি পেঁয়াজ দেশী ৩৫-৪০, আমদানিকৃত পেঁয়াজ ৩০-৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে। মুদি দোকানে প্রতিকেজি ছোলা ৬৫ থেকে ৭০ টাকা, সরু দানার মসুর ডাল ১০০ থেকে ১১০ টাকা, মোটা দানা ৬৫-৭০ টাকা, চিনি ৬২-৬৫ টাকা, খোলা সয়াবিন তেলের লিটার ১২৩ থেকে ১২৫ টাকা, ১ লিটারের বোতল ১৩৫ টাকায় টাকায় বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে। চাল মাঝারিমানের পাইজাম ও লতা ৫২-৫৬ এবং মোটা মানের স্বর্ণা ও চায়না ইরি বিক্রি হচ্ছে ৪৬-৫০ টাকায়। সরু নাজির ও মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৬০-৬৫ টাকায়। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বেশিরভাগ ক্রেতা রোজার আগেই চাহিদার চেয়ে বেশি পরিমাণ কিনে নিয়েছেন। এ কারণে বাজারে এখন পণ্যের চাহিদাও কম। সামনের দিকে নিত্যপণ্যের দাম আরও কমার আভাস দিয়েছেন মুদিপণ্যের ব্যবসায়ীরা।
স্টকমার্কেটবিডি.কম/