আগামী ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটে আবাসন খাতের জন্য ২০ হাজার কোটি টাকার একটি তহবিল গঠন করার দাবি জানিয়েছে রিয়েল এস্টেট হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব)। একেই সঙ্গে ফ্ল্যাটের রেজিস্ট্রেশন ব্যয় কমিয়ে আনা, অপ্রদর্শিত আয়, শর্তহীন বিনিয়োগের সুযোগ এবং নতুন ভ্যাট আইনে এ শিল্পের কাঁচামাল রডের উপর মূল্যসংযোজন কর দেড় শতাংশ করারও দাবি করেছে সংগঠনটি।
শনিবার সকালে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে রিয়েল এস্টেট হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
এ সময় বলা হয়, বর্তমানে আবাসন খাতে যথাযথ অর্থ প্রবাহ না থাকা ও নির্মাণ ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় এ খাতের ক্রেতারা কোনো বিনিয়োগে যাচ্ছে না। ফলে নতুন করে আবাসন খাত আরো সংকটের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২০০৮-০৯ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের আওতায় আবাসন খাতে সিঙ্গেল ডিজিট সুদে দীর্ঘমেয়াদী ঋণ ব্যবস্থার প্রচলন ছিল। যা এই খাতে ক্রেতাদের জন্য অনেক ফলপ্রসু ভূমিকা রেখেছিল। অনেকে নিজের কিছু মূলধন নিয়ে প্রায় ভাড়ার টাকায় ফ্ল্যাটের মালিক হয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ করে এই ঋণ সুবিধা বন্ধ হয়ে যায়, যার ফলে এই খাত সংকটের মধ্যে পতিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন রিহ্যাব এর ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট লিয়াকত আলী ভূইয়া, ভাইস প্রেসিডেন্ট আবদুল কৈয়ুম চৌধুরী, রিহ্যাবের পরিচালক জহির আহমেদ এবং রিহ্যাবের কো-চেয়ারম্যান কামাল মাহমুদ।
সংগঠনের নেতারা জানান, সিঙ্গেল ডিজিট সুদে ৩০ বছরের কিস্তিতে ঋণ দিলে ক্রেতা সাধারণ ভাড়া সমান কিস্তিতে ঋণ পরিশোধ করতে পারবে। এক্ষেত্রে সরকার বাংলাদেশ বিল্ডিং ফিন্যান্স কর্পোরেশনকে তহবিল প্রদানের মাধ্যমে আবাসন খাতে ঋণ বৃদ্ধি করতে পারে। এ অবস্থায় আবাসন খাতে বাংলাদেশ ব্যাংক সিঙ্গেল ডিজিট সুদে ৩০ বছর মেয়াদে দীর্ঘমেয়াদী রি-ফাইন্যান্সিং চালুকরণ জরুরি, যাতে মাসিক কিস্তি বাসা ভাড়ার সমান হয়।
নেতারা জানান, সেকেন্ডারি বাজার ব্যবস্থার প্রচলন একদিকে যেমন এই শিল্পকে এগিয়ে নেবে, বাজারে অর্থের লেনদেন বাড়বে, অন্যদিকে সরকারও তার রাজস্ব আয় বৃদ্ধি করতে সক্ষম হবে। যে সকল ফ্ল্যাট প্রথম বিক্রয়ের পর ৫ বছরের মধ্যে পুনরায় বিক্রয় হবে, কেবল মাত্র সে সকল রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে ১ শতাংশ হারে বিক্রয়ের জন্য সেকেন্ডারি মার্কেট চালু করা আবশ্যক। ৫ বছরের বেশি সময়ের ক্ষেত্রে ২ শতাংশ করা দরকার। ফলে নামমাত্র রেজিস্ট্রেশন ব্যয় নির্ধারণ করে সেকেন্ডারি বাজার ব্যবসা। তার প্রচলন করা জরুরি।
নেতারা বলেন, প্রতিটি নির্মাণ সামগ্রীর প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি ভ্যাট সরকার পাচ্ছে ফ্যাক্টরি ও পাইকারি বিক্রেতা থেকে। ভবন নির্মাণকালে অধিকাংশ ডেভেলপার সরাসরি নগদ অর্থে বিভিন্ন প্রকার নির্মাণ সামগ্রী ও সেবা ক্রয় করে থাকে। ফলশ্রুতিতে ভ্যাট ও উৎস কর সংগ্রহের দায়িত্ব পালন সম্ভব হয় না। এছাড়া অনেক নির্মাণ আইটেমের সরবরাহকারী প্রাতিষ্ঠানিকভাবে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে না তাই এই সকল ভেন্ডরের কাছ থেকে কাগজপত্র সংগ্রহ করা যায় না। ফলে ডেভেলপাররা মারাত্বকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এ অবস্থায় সাপ্লায়ার ভ্যাট ও উৎস কর সংগ্রহের দায়িত্ব থেকে বৎসরের জন্য ডেভেলপারকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
স্টকমার্কেটবিডি.কম/এমএ