বিমা খাতে আগ্রহী বিনিয়োগকারীরা: বাড়ছে দর

insurenceনিজস্ব প্রতিবেদক :

সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে এসে দরপতনের মাত্রা কমেছে দেশের শেয়ারবাজারে। দিন শেষে প্রায় অপরিবর্তিত ছিল উভয় স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক। তবে দশমিক ২৫ শতাংশের বেশি কমেছে ব্লু-চিপ সূচক। শেষ পর্যন্ত দরবৃদ্ধি পাওয়া কোম্পানির সংখ্যাই বেশি ছিল। বিনিয়োগকারীদের মূল ঝোঁক ছিল সাধারণ বীমা খাতের শেয়ারে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দরবৃদ্ধির শীর্ষ ১০ তালিকায় নয়টিই ছিল এ খাতের কোম্পানি। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) এ তালিকায় জায়গা করে নেয় আটটি সাধারণ বীমা কোম্পানি।

পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, আগের দিনের ধারাবাহিকতায় প্রথম ৭০ মিনিটের লেনদেনে সূচক টানা কমেছে। পরবর্তী ১ ঘণ্টায় সূচক ঊর্ধ্বমুখী থাকলেও বাকি সময় মিশ্র প্রবণতার মধ্য দিয়ে লেনদেন চলে।

বাজার-সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, গতকাল শেয়ারবাজারে বিক্রয়চাপ আগের দিনের তুলনায় কমেছে, যা সাম্প্রতিক নিম্নমুখী ধারা অবসায়নের ইঙ্গিত বহন করছে। রোববার পর্যন্ত টানা ছয় কার্যদিবসে কমে ৪ হাজার ৫৩৪ পয়েন্টে নেমে আসে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স। গতকাল সূচকটি দশমিক শূন্য ১ শতাংশ কমেছে। বিপরীতে সিএসইর ব্রড ইনডেক্স সিএসসিএক্স দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ বেড়ে দাঁড়ায় ৮ হাজার ৪৭৫ দশমিক ৯৩ পয়েন্টে।

তবে বড় মূলধনি বেশির ভাগ শেয়ারের দর আগের দিনের তুলনায় কমেছে। ডিএসইর নির্বাচিত কোম্পানিগুলোর সূচক ডিএস ৩০ দশমিক ২৬ শতাংশ কমে দাঁড়ায় ১ ৭৩৬ দশমিক ৩৬ পয়েন্টে। সিএসই ৩০ সূচকও একই হারে কমে দাঁড়ায় ১২ হাজার ৬৫৬ দশমিক ৩৫-এ।

লেনদেনকৃত সিকিউরিটিজগুলোর মধ্যে ডিএসইতে দাম বেড়েছে ১৪৮টির, কমেছে ১২৬টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৪৯টির। সিএসইতে ১২১টির দরবৃদ্ধির বিপরীতে কমেছে ১০০টি সিকিউরিটিজের বাজারদর।

খাতভিত্তিক চিত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, উভয় বাজারে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের কেন্দ্রে ছিল সাধারণ বীমা খাতের কোম্পানিগুলো। গতকাল এ খাতের বাজার মূলধন ৪ দশমিক ১৬ শতাংশ বেড়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নানা সমস্যার মধ্যেও প্রথমার্ধে আয় প্রবৃদ্ধি দেখিয়েছে সাধারণ বীমা খাতের বেশির ভাগ কোম্পানি। এছাড়া দীর্ঘমেয়াদি নিম্নমুখী প্রবণতায় এসব কোম্পানির শেয়ারদর অনেক কমে এসেছে। মূলত এ কারণেই অনেক বিনিয়োগকারী সাধারণ বীমার শেয়ারে আগ্রহী হয়েছেন।

দরবৃদ্ধিতে এর পর ছিল সিমেন্ট দশমিক ৭৯, বস্ত্র দশমিক ৬, মিউচুয়াল ফান্ড দশমিক ৪৪, এনবিএফআই দশমিক ৩৩ এবং প্রকৌশল খাতের বাজার মূলধন বেড়েছে দশমিক ২৫ শতাংশ।

বিপরীতে শেয়ারদর গড়ে সবচেয়ে বেশি কমেছে খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের কোম্পানিগুলোর, ২ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ। এর পর যথাক্রমে পাট ২ দশমিক শূন্য ২, কাগজ-মুদ্রণ ১ দশমিক ৩৭, সেবা-আবাসন দশমিক ৫৩ ও টেলিযোগাযোগ খাতের দশমিক ৩২ শতাংশ দরপতন ছিল উল্লেখযোগ্য। বাজার মূলধন কমেছে ব্যাংক, সিরামিক, প্রকৌশল, ওষুধ-রসায়ন ও চামড়া খাতের কোম্পানিগুলোরও।

বিনিয়োগকারীদের কাছে দিনের খবরগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল সরকারি সঞ্চয়পত্রের বিক্রি নিরুত্সাহিত করতে অর্থমন্ত্রীর ইঙ্গিত। প্রতি বছর দুই বার জাতীয় সঞ্চয়পত্রের সুদের হার পর্যালোচনার কথা জানিয়েছেন তিনি।

এদিকে কেনাবেচা আগের দিনের তুলনায় কমেছে। ডিএসতে সারা দিনে ৩২৩ কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের ১০ কোটি ৮০ লাখ ১০ হাজার ৫৭৪টি শেয়ার বা ইউনিট হাতবদল হয়, যার বাজারদর ছিল ৪১০ কোটি ৫৫ লাখ ৫৩ হাজার ৮৮৮ টাকা। আগের দিন স্টক এক্সচেঞ্জটিতে ৫৬৫ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছিল।

লেনদেনের ভিত্তিতে (টাকায়) ডিএসইতে সবার উপরে ছিল এমজেএল বাংলাদেশ, ন্যাশনাল টিউবস, বিএসআরএম লিমিটেড, ফার কেমিক্যাল, শাহজিবাজার পাওয়ার, আলহাজ টেক্স, বিবিএস, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, এপেক্স ফুডস ও মিথুন নিটিং।

দরবৃদ্ধির শীর্ষে ছিল যথাক্রমে— ফার কেমিক্যাল, মার্কেন্টাইল ইন্স্যুরেন্স, কন্টিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্স, অগ্রণী ইন্স্যুরেন্স, গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্স, নর্দার্ন ইন্স্যুরেন্স, ফেডারেল ইন্স্যুরেন্স, এশিয়া প্যাসিফিক ইন্স্যুরেন্স, কর্ণফুলী ইন্স্যুরেন্স ও বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স।

স্টকমার্কেটবিডি.কম/এম

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *