স্টকমার্কেট ডেস্ক :
ব্যাংক কোম্পানি আইনের ২৮ (১) ও ৪৯ (চ) ধারায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঋণ মওকুফের ক্ষমতা কেন অবৈধ ও অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। সরকারের অর্থ সচিব, ব্যাংকিং বিভাগের সচিব, আইন সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং অপারেশন বিভাগের জেনারেল ম্যানেজারকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী ও বিচারপতি ইকবাল কবির সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে গত মঙ্গলবার এ রুল জারি করেন।
ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার পর গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত যেসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ঋণ মওকুফ করা হয়েছে তার তালিকা চেয়েছেন আদালত। আগামী ৩০ দিনের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে এ তালিকা দিতে বলা হয়। তাছাড়া ঋণ মওকুফ পাওয়া কোম্পানি বা ব্যক্তিরা দেশের অন্য কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ গ্রহণ করেছেন কি-না, করে থাকলে তার পরিমাণ কত, তা উল্লেখ করে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে বিশেষ বার্তাবাহকের মাধ্যমে আদালতের এ আদেশ সংশ্লিষ্টদের পোঁছে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তী আদেশের জন্য আগামী ২ এপ্রিল দিন ধার্য করা হয়েছে।
আদালতের আদেশের বিষয়টি গনমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মনিরুজ্জামান। তিনি বলেন, গত ২৬ ফেব্রুয়ারি একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত ‘শতকরা ৬০ ভাগ খেলাপি ঋণ দেখিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে ৩০ হাজার কোটি টাকা গায়েব’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এ প্রতিবেদন আমলে নিয়ে আদালত স্বপ্রণোদিত হয়ে রুল জারি করেন।
আইনের ৪৯ (চ) ধারায় বলা হয়েছে, ‘ঋণ শৃংখলার স্বার্থে বাংলাদেশ ব্যাংক সাধারণভাবে সকল ব্যাংক-কোম্পানি বা কোনো বিশেষ ব্যাংক-কোম্পানি বা বিশেষ শ্রেণীর ব্যাংক-কোম্পানির জন্য ঋণ শ্রেণীকরণ ও সঞ্চিতি সংরক্ষণ, ঋণ মওকুফ, পুনঃতফসিলীকরণ কিংবা পুনর্গঠন সংক্রান্ত বিষয়সমূহে বাধ্যতামূলকভাবে অনুসরণীয় নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবে।’
আর ২৮ (১) ধারায় বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমোদন ব্যতিরেকে, কোনো ব্যাংক-কোম্পানি উহার নিকট হইতে নিম্নবর্ণিত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক গৃহীত ঋণ বা উহার অংশ বা উহার উপর অর্জিত সুদ মওকুফ করিবে না।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে, গত বছরের সেপ্টেম্বর শেষে অবলোপন করা ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪৫ হাজার কোটি টাকা। আর খেলাপি ঋণের পরিমাণ হচ্ছে ৬৪ হাজার কোটি টাকা।
স্টকমার্কেটবিডি.কম/