গত বছরের নভেম্বরে হঠাৎ করেই ৫শ’ ও হাজার রুপির নোট বাতিল করে বড় চমক দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। উদ্দেশ্য ছিল ডিজিটাল লেনদেন বাড়ানো, কালো টাকা প্রতিরোধ করা ও জঙ্গি তহবিলের উৎস ঠেকানো। নোট বাতিলের সেই সিদ্ধান্তের ফলে ডিজিটাল লেনদেন বেশ খানিকটা তাৎক্ষণিক বাড়লেও পরে আবার কমেছে।
তবে সব মিলিয়ে সরকারের নিজস্ব লক্ষ্যমাত্রার ধারে কাছেও পৌঁছানো যায়নি। সূত্রের খবর, সেই কারণে মোদি সরকার চাইছে, এবার চেকের মাধ্যমে লেনদেনও বাতিল করে দিতে। কারণ সরকার মনে করছে চেক মারফত লেনদেন আটকাতে পারলে কিংবা চেকের ব্যবহার কমাতে পারলে ডিজিটাল লেনদেন আরও বাড়বে। পাশাপাশি চেক ছাপানোর খরচও কমবে।
সূত্রের খবর এবার ব্যাঙ্কগুলোর পক্ষ থেকে চেক ইস্যু বন্ধ করে দিতে পারে সরকার। অল ইন্ডিয়া ট্রেডার্স কনফেডারেশনের সেক্রেটারি জেনারেল প্রবীণ খান্ডেলওয়াল সম্প্রতি ডিজিটাল রথের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলেন, ডিজিটাল লেনদেনকে আরও উৎসাহিত করতে চেক বইয়ের সুবিধা তুলে দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি বলেছেন, এখন নোট প্রিন্ট করতে ২৫ হাজার কোটি রুপি খরচ হয় আর সেগুলির সুরক্ষার জন্য খরচ হয় আর ছয় হাজার কোটি রুপি। চেক বই ছাপানোর খরচও কম নয়। এই খরচের অনেকটাই বাঁচানো সম্ভব হবে যদি নগদ ও চেক লেনদেন বন্ধ বা কমানো যায়। তাঁর এই মন্তব্যের পরেই চেক বই তুলে দেওয়ার সম্ভাবনা জোরালো হয়েছে।
কিন্তু চেক তুলে দিলে কতটা ক্ষতি হবে? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখনও চেকের মাধ্যমেই বেশিরভাগ ব্যবসায়িক লেনদেন হয়ে থাকে। সূত্রের খবর, ৯৫ শতাংশ লেনদেনই নগদ অথবা চেকের মাধ্যমে হয়। নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর নগদ লেনদেনের পরিমাণ যত কমেছে, চেকের মাধ্যমে লেনদেনের পরিমাণ ততই বেড়েছে। ফলে এখন হঠাৎ করে চেক তুলে দিলে সমস্যা বাড়বে।
সূত্রের খবর, নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের পর গত ডিসেম্বরে ডিজিটাল লেনদেন সর্বোচ্চ (প্রায় ১শ’ কোটি রুপি) পর্যায়ে পৌঁছেছিল। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে তা কমে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৮৭ কোটি রুপিতে।
সামগ্রিকভাবে ডিজিটাল লেনদেন বেড়েছে ৩১ শতাংশ। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছনোর জন্য শেষে চেক বাতিলের পথেই হাঁটতে পারে মোদি সরকার। তাতে যাবতীয় ডিজিটাল লেনদেন যে বাড়বে তাতে কোনও সন্দেহ নেই।
এখন মোদি সরকার কবে থেকে চেকবই বাতিল করেন সেটাই দেখার।
স্টকমার্কেটবিডি.কম/