বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নিয়ম অনুসারে উদ্যোক্তা পরিচালকদের ন্যূনতম শেয়ার ধারণের আইনি নির্দেশনা থাকলেও, তা তোয়াক্কার করছে না শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংক খাতের উত্তরা ব্যাংক লিমিটেড।
২০১১ সালের ২২ নভেম্বর কোম্পানির পরিচালকদের ন্যূনতম শেয়ার ধারণ নিয়ে একটি নির্দেশনা জারি করে বিএসইসি। ওই নির্দেশনায় বলা হয়, শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত সব কোম্পানির উদ্যোক্তা বা পরিচালককে ন্যূনতম ২ শতাংশ শেয়ার ধারণ করতে হবে। একই সঙ্গে উদ্যোক্তা-পরিচালকদের সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার থাকবে।
বিএসইসির এ নির্দেশনা মানছে না শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংকটি। সর্বশেষ, ২৮ ডিসেম্ভর ২০১৭ পযন্ত এ কোম্পানির পরিচালকদের কাছে ১২.৫৮ শতাংশ, সরকারের হাতে ২০.৩৫ শতাংশ, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের হাতে ২.২২ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে ৬৪.৮৫ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।
নির্দেশনা অনুযায়ী, এখনো এ কোম্পানির পরিচালকদের আরো ১৭.৪২ শতাংশ শেয়ার ধারন করতে হবে। নয়তো বিএসইসির নির্দেশনা পরিপালন হবে না।
এ প্রসঙ্গে উত্তরা ব্যাংকের নির্বাহী উপব্যবস্থাপক ও সচিব ইফতেখার জামান স্টকমার্কেটবিডিকে বলেন, আমাদের স্পন্সর ডিরেক্টরই নেই শেয়ার ধারণ করবে কে। তবে ২০১২ সালে বিএসইসি একটি চিঠি দিয়েছিলো, তার জবাবও আমরা দিয়েছি। তবে আমরা আইনের উর্দ্ধে নয়। যেহেতু বিএসইসি নির্দেশনা দিয়েছে তাই আমরা এটা মানবো। নির্দেশনা অনুযায়ী কোম্পানির পরিচালকেরা শেয়ার ধারণ করবেন।
ডিএসইর সূত্র অনুযায়ী, কোম্পানিটির মোট রিজার্ভ রয়েছে ৯৪০ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। পরিশোধিত মূলধন রয়েছে ৪০০ কোটি ৮ লাখ টাকা, অনুমোদিত মূলধন ৬০০ কোটি টাকা । ব্যাংকটির মোট শেয়ার সংখ্যা ৪০ কোটি ৮০ হাজার ৩শ ৩৭।
২০০৯ ও ২০১০ সালে যখন শেয়ারবাজার চাঙ্গা ছিল তখন তালিকাভুক্ত কোম্পানির অনেক উদ্যোক্তা-পরিচালক হাজার হাজার কোটি টাকার শেয়ার বাজারে বিক্রি করে দেন। পরে পরিচালকদের সম্মিলিত শেয়ার ধারণ খুব কমে যায়। এতে কোম্পানিগুলোর প্রতি পরিচালকদের দায়িত্ববোধ নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এ অবস্থায় ২০১১ সালের ২২ নভেম্বর কোম্পানির পরিচালকদের ন্যূনতম শেয়ার ধারণ নিয়ে একটি নির্দেশনা জারি করে বিএসইসি।
ওই নির্দেশনায় বলা হয়, শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত সব কোম্পানির উদ্যোক্তা বা পরিচালককে ন্যূনতম ২ শতাংশ শেয়ার ধারণ করতে হবে। একই সঙ্গে উদ্যোক্তা-পরিচালকদের সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার থাকবে। কোনো কোম্পানি এ শর্ত পূরণ না করা পর্যন্ত রাইট ইস্যুসহ বাজার থেকে নতুন করে মূলধন সংগ্রহ করতে পারবে না।
কোনো পরিচালক এ শর্ত পূরণ করতে না পারলে তার পদ হারাতে হবে। এ নির্দেশনা চ্যালেঞ্জ করে ওই বছরই ৪ কোম্পানির ১৪ পরিচালক আদালতে রিট করেন। শেষ পর্যন্ত পরিচালকদের রিট খারিজ করে বিএসইসির সিদ্ধান্ত বহাল রাখেন আদালত। পরে এটি কোম্পানি আইনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
কোম্পানিটি প্রতি বছর ঋণের সুদ বাবদ মোটা অংকের টাকা ব্যাং করে থাকে, যা শেয়ার হোল্ডাদের জন্য হতাশাজনক। ২০১৩ সালে কোম্পানটি এই খাতে ব্যয় করে ৮.১৯ কোটি টাকা। এছাড়া ২০১৪, ২০১৫ ও ২০১৬ ঋণের সুদের পরিমাণ ছিল ৮.২১ কোটি, ৭.৮০ কোটি, ৬.০৫ কোটি টাকা।
স্টকমার্কেটবিডি.কম/এমএ