বাণিজ্যিক ব্যাংকের লভ্যাংশ প্রদানের নীতিমালা প্রণয়ন

bbস্টকমার্কেটবিডি প্রতিবেদক :

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকে বার্ষিক লভ্যাংশ (ডিভিডেন্ট) ঘোষণায় নীতিমালা জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

সোমবার (১১ মে) বাংলাদেশ ব্যাংক এ সংক্রান্ত এক সার্কুলার জারি হয়েছে।

জারি করা সার্কুলার অনুযায়ী, মূলধন সংরক্ষণের ভিত্তিতে তিনটি ক্যাটাগরিতে সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ নগদসহ মোট ৩০ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করতে পারবে ব্যাংকগুলো। ২০১৯ সালের সমাপ্ত বছরের ঘোষিত লভ্যাংশ ৩০ সেপ্টেম্বরের আগে বিতরণ করা যাবে না।

ইতিমধ্যে কোনো ব্যাংক যদি লভ্যাংশ ঘোষণা করে থাকে, সেগুলোর লভ্যাংশের হার যদি এই সীমার বেশি হয়ে থাকে তা সংশোধন করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের জারি করা প্রজ্ঞাপন দেশের সব তফসিলি ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীর কাছে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।

সার্কুলারে বলা হয়েছে, (করোনা সংক্রমণে) সামগ্রিকভাবে ব্যাংকিং খাতে সৃষ্ট চাপ মোকাবেলা করে ব্যাংকগুলো যাতে বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনীতিতে যথার্থ অবদান রাখতে পারে সে লক্ষ্যে ব্যাংকগুলোর মুনাফা অবণ্টিত রেখে (কার্যত লভ্যাংশ না দিয়ে) মূলধন শক্তিশালী করার মাধ্যমে পর্যাপ্ত তারল্য বজায় রাখা একান্ত অপরিহার্য।

মূলত এবার লভ্যাংশ ঘোষণাকে নিরুৎসাহিত করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

স্টকমার্কেটবিডি.কম/আর

তামাকজাত দ্রব্যের ওপর সুনির্দিষ্ট করারোপ করার দাবি

cigarateস্টকমার্কেটবিডি প্রতিবেদক :

করোনার অর্থনৈতিক ক্ষতি পোষাতে ক্ষতিকর তামাকজাত দ্রব্যের ওপর সুনির্দিষ্ট করারোপ করার দাবি জানিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, তামাকজাত দ্রব্যের ওপর সুনির্দিষ্ট করারোপ করা হলে প্রায় ২০ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক ধূমপায়ী ধূমপান ত্যাগে উৎসাহিত হবে।

আর সম্পূরক শুল্ক ও ভ্যাট বাবদ আগামী অর্থবছরে চার হাজার ১০০ কোটি থেকে ৯ হাজার ৮০০ কোটি টাকা পর্যন্ত বেশি রাজস্ব আয় হবে।

বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোট (বাটা), বাংলাদেশ নেটওয়ার্ক ফর টোব্যাকো ট্যাক্স পলিসি (বিএনটিটিপি), টোব্যাকো কন্ট্রোল অ্যান্ড রিসার্চ সেল (টিসিআরসি) এবং ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ডিআইইউ) যৌথভাবে ওই সেমিনারের আয়োজন করে বলে আজ সোমবার (১১ মে) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

‘তামাকজাত দ্রব্যের ওপর সুনির্দিষ্ট করারোপের প্রয়োজনীয়তা’ শীর্ষক ওই সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. রুমানা হক।

আন্তর্জাতিক সংস্থা দ্য ইউনিয়নের কারিগরি পরামর্শক অ্যাডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলমের সঞ্চালনায় ওই আলোচনায় অংশ নেন সংসদ সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারী, রানা মোহাম্মদ সোহেল, মো. নুরুল ইসলাম তালুকদার, অধ্যাপক মাসুদা এম. রশীদ চৌধুরী ও নাজমা আকতার, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নাসিরুদ্দীন আহমেদ, জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের সমন্বয়কারী খায়রুল আলম সেখ, বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটের সমন্বয়কারী সাইফুদ্দীন আহমেদ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি ড. সৈয়দ মাহফুজুল হক, সাংবাদিক সুশান্ত সিনহা প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বে অন্যতম তামাক ব্যবসাবান্ধব দেশ। এ পরিস্থিতি বজায় থাকলে ২০৪০ সালের মধ্যে দেশকে তামাকমুক্ত করার প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। ফলে আসন্ন বাজেটে সব ধরনের তামাক পণ্যে বহু স্তরভিত্তিক কর পদ্ধতি বাদ দিয়ে সুনির্দিষ্ট করারোপের মাধ্যমে কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে হবে। এতে সরকার বাড়তি রাজস্ব পাবে এবং তরুণদেরও তামাক পণ্য থেকে দূরে রাখা যাবে। পাশাপাশি একটি গহণযোগ্য কর ব্যবস্থা প্রবর্তনের জন্য একটি যুগোপযোগী তামাক-কর নীতি প্রণয়ন করতে হবে।

বক্তারা আরো বলেন, এনবিআর প্রকাশিত গবেষণা গ্রন্থে তামাকজাত দ্রব্যে সুনির্দিষ্ট করারোপের কথা বলা হয়েছে। ফলে সিগারেটে সুনির্দিষ্ট করারোপে কোনো অসঙ্গতি বা জটিলতা নেই। এতে ত্রুটিপূর্ণ কর ব্যবস্থার কারণে প্রতিবছর তামাক কম্পানির ক্রমবর্ধমান মুনাফা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।

বক্তারা ধোঁয়াবিহীন তামাকের রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে বলেন, জর্দা, গুল, সাদাপাতা উৎপাদনকারী অধিকাংশ কম্পানির তথ্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাছে নেই। ফলে তারা কর আওতার বাইরে থেকে যাচ্ছে এবং সরকার বিপুল পরিমাণ রাজম্ব হারাচ্ছে।

সেমিনারে সংসদ সদস্যরা একটি সময়োপযোগী তামাক-কর ব্যবস্থার প্রবর্তন এবং তামাকজাত দ্রব্যের ওপর সুনির্দ্রিষ্ট কর আরোপের পক্ষে নিজেদের অবস্থান থেকে সোচ্চার থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

স্টকমার্কেটবিডি.কম/

ন্যাশনাল ব্যাংকের টাকার বস্তা গায়েব

nbl-smbdস্টকমার্কেটবিডি প্রতিবেদক :

পুরান ঢাকার বাবুবাজার এলাকায় ন্যাশনাল ব্যাংকের গাড়ি থেকে ৮০ লাখ টাকাসহ একটি বস্তা খোয়া যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ব্যাংকের দিলকুশা শাখার সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট হাবিবুর রহমান এ ঘটনায় রোববার রাতে কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা করেছেন।

যে গাড়ি থেকে টাকার বস্তা খোয়া গেছে, সেই গাড়ির দায়িত্বে থাকা ব্যাংকের একজন নির্বাহী কর্মকর্তা, একজন গাড়িচালক ও দুইজন নিরাপত্তাকর্মীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে কোতোয়ালি থানা পুলিশ।

থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, ন্যাশনাল ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের ওই গাড়ি রোববার পুরান ঢাকার বিভিন্ন শাখায় ঘুরে টাকা সংগ্রহ করে। পরে মতিঝিলে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের দিকে রওনা হয়।

বাবুবাজারে পৌঁছানোর পর গাড়িতে থাকা নিরাপত্তাকর্মীরা চিৎকার করে বলেন, টাকার একটি বস্তা পাওয়া যাচ্ছে না। ওই টাকার ব্স্তাটি বাংলাবাজার শাখা থেকে তোলা হয়েছিল। সেখানে ৮০ লাখ টাকা ছিল।

বাংলাবাজার শাখা এবং ওই গাড়ি যে পথ ধরে গেছে, তার আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হচ্ছে জানিয়ে ওসি বলেন, আটকদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তবে মামলায় তাদের নাম নেই।

ন্যাশনাল ব্যাংকের ডিএমডি এএসএম বুলবুল বলেন, এক ব্রাঞ্চ থেকে আরেক ব্রাঞ্চে যাওয়ার মাঝে কোথাও হয়ত ঘটনা ঘটেছে। এর পেছনে যারাই থাক না কেন, গাড়িতে আমাদের যে কর্মীরা ছিল, তাদের দায় নিতে হবে। সূত্র : বিডি নিউজ২৪

স্টকমার্কেটবিডি.কম/

বন্ধ হচ্ছে দেশের ৬০ শতাংশ ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টার: বিপিসিডিওএ

114624_bangladesh_pratidin_aস্টকমার্কেটবিডি প্রতিবেদক :

বাংলাদেশ প্রাইভেট হসপিটাল, ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিপিসিডিওএ) বলছে, রোগীশূন্য হয়ে পড়ায় ঢাকার বাইরে ৬০ ভাগ প্রতিষ্ঠান বন্ধের পথে। ঢাকায়ও বেশকিছু ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ রয়েছে। এছাড়া, ছোট ছোট কয়েকটি হাসপাতাল সেবা দেয়া বন্ধ রেখেছে।

দেশে প্রায় চৌদ্দ হাজার বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে।

এসব প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসক, নার্সসহ কর্মরত প্রায় এক লাখ মানুষ। বিপিসিডিও বলছে, রোগীর মাধ্যমে করোনা ছড়িয়ে পড়ায় আংশিক বা পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে অন্তত ১৫টি ক্লিনিক।

অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. মনিরুজ্জামান ভূঁইয়া বলেন, অনেক রোগীদের কাছ থেকে বেসরকারি হাসপাতালের অনেক ডাক্তার, নার্সরা করোনা পজিটিভ হয়েছেন।

তাই অনেক বেসরকারি হাসপাতালই বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ঢাকা শহরের প্রায় ১০ থেকে ১২ হাসপাতাল লকডাউন অবস্থায় আছে। জুলাই মাসের আগে হাসপাতালগুলোতে মনে হয় না রোগী আসবে বা আমরা ঘুরে দাঁড়াতে পারবো। আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রণোদনার বিষয়ে আহ্বান জানাচ্ছি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক সচল রাখতে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ডা. আয়েশা আক্তার বলেন, সামনের দিনে আমরা হাসপাতালগুলোকে তিনভাগে ভাগ করে সেবা দেয়ার পরিকল্পনা করেছি। যারা করোনা পজিটিভ থাকবে তারা একভাগে, যারা সন্দেহজনক তারা একভাগে আর সাধারণ রোগীরা একভাগে।

স্টকমার্কেটবিডি.কম/

প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে ডিএসই’র এক কোটি টাকার অনুদান

dse1স্টকমার্কেটবিডি প্রতিবেদক :

করোনাভাইরাস মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে এক কোটি টাকার একটি চেক হস্তান্তর করেছে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) কর্তৃপক্ষ।

রবিবার (১০ মে) সকালে ডিএসই’র চেয়ারম্যান মো. ইউনুসুর রহমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে তার মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউসের হাতে এ চেক তুলে দেন।

ডিএসই থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, করোনাভাইরাস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে এরইমধ্যে সরকার সব ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে৷ সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে৷ যান চলাচল বন্ধ করার পাশাপাশি জনসাধারণের চলাচল সীমিত করেছে৷ একইসঙ্গে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা পর্যায়ে লকডাউন ঘোষণা করেছে৷ এতে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে৷ এ অবস্থায় সামাজিক দায়বদ্ধতা কার্যক্রমের অংশ হিসাবে আজ কর্মহীন, দুস্থ ও ছিন্নমুল মানুষের সহায়তায় ডিএসই’র চেয়ারম্যান মো. ইউনুসুর রহমান পরিচালনা পর্ষদের পক্ষে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে এক কোটি টাকার একটি চেক হস্তান্তর করেন৷

আরো জানানো হয়, সামাজিক দায়বদ্ধতা কার্যক্রম হিসাবে ডিএসই আগেও পিলখালা হত্যা কান্ডের পর নিহত সেনাবাহিনীদের পরিবারের পাশে, নিমতলী অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া সেনাবাহিনীর একটা সেচ্ছাসেবী স্কুলে অর্থায়ন করেছে ডিএসই।

স্টকমার্কেটবিডি.কম/

প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে এক মাসের বেতন দিল সিএসই

CSE-Final-Logoস্টকমার্কেটবিডি প্রতিবেদক:

প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে অনুদান হিসেবে কর্মরত সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের এক মাসের বেতনের ২৫ লাখ টাকা জমা দিয়েছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই)।

রবিবার (১০ মে) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সিএসইর চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম ২৫ লাখ টাকার একটি চেক হস্তান্তর করেন।
এই চেক গ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব।

এ সময় স্টক এক্সচেঞ্জটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মামুন-উর-রশিদ উপস্থিত ছিলেন।

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, দরিদ্র ও করোনায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার লক্ষ্যে সিএসই পর্ষদের সব কর্মকর্তা-কর্মচারী তাদের এক মাসের মূল বেতনের টাকা মিলিয়ে ২৫ লাখ টাকা প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে হস্তান্তর করেন।

আসিফ ইব্রাহিম প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বের প্রশংসা করেন আর
শেয়ারবাজারের এই সংকট উত্তরণে ১ হাজার ৫০ কোটি টাকার প্রণোদনা বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন।

এসময় তিনি জানান, সিএসই চট্টগ্রামের ৪০০০ দরিদ্র ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের ত্রাণের সহযোগিতা পালন করে যাচ্ছে। এটা চলমান থাকবে।

স্টকমার্কেটবিডি.কম/

‘এ সময় শ্রমিক ছাঁটাই বা লেঅফ করা যাবে না’

garmetnsস্টকমার্কেটবিডি প্রতিবেদক :

ঈদ-উল-ফিতরের আগে তৈরি পোশাক শ্রমিকসহ কোন ধরনের শ্রমিক ছাঁটাই বা কারখানা লে-অফ ঘোষণা করতে পারবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। গত ৪ মে শ্রম প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভার কার্যবিবরণী থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

রবিবার মন্ত্রণালয়ের উপসচিব শাহীন আখতার স্বাক্ষরিত কার্যবিবরণীতে বলা হয়, সংশ্লিষ্ট সবার অবগতির জন্য নির্দেশক্রমে জানানো যাচ্ছে, গত ৪ মে শ্রম প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় নিম্ন লিখিত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

সিদ্ধান্ত মোতাবেক, ঈদ-উল-ফিতরের আগে মালিকপক্ষ কোন শ্রমিক ছাঁটাই বা লে-অফ ঘোষণা করবেন না। গত এপ্রিল মাসে যেসব শ্রমিক সম্পূর্ণ মাস কাজ করেছেন, তারা পূর্ণ মাসের বেতন-ভাতা পাবেন। যারা কাজ করেননি তারা মোট বেতন-ভাতার ৬৫ শতাংশ পাবেন। অর্থাৎ এপ্রিল মাসে শ্রমিকরা যতদিন কাজ করেছেন ততদিনের জন্য পূর্ণ মাসের হিসাবে বেতন-ভাতা পাবেন, বাকি সময়ের জন্য মোট বেতন-ভাতার ৬৫ শতাংশ হারে বেতন-ভাতা প্রাপ্য হবেন ।

ঘোষিত ৬৫ শতাংশের ৬০ শতাংশ এপ্রিল মাসের বেতন-ভাতা আকারে শ্রমিকরা পাবেন। অবশিষ্ট ৫ শতাংশ মে মাসের বেতনের সঙ্গে সমন্বয় করে শ্রমিকদের প্রদান করা হবে। আগামী ১৫ মে এর মধ্যে পুনরায় সভা আয়োজনের মাধ্যমে পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। কার্যবিবরণীতে আরও বলা হয়, এমতাবস্থায় বিষয়টি সংশ্লিষ্ট সবার অবগতি ও পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের শ্রম আইনের ভাষায়, লে-অফ হলো কোন কারখানায় কাঁচামালের স্বল্পতা, মাল জমে যাওয়া কিংবা যন্ত্রপাতি নষ্ট হওয়ায় শ্রমিককে কাজ দিতে না পারার অক্ষমতা প্রকাশ করা। শ্রম আইন অনুযায়ী, লে-অফ চলাকালে প্রথম ৪৫ দিনের ক্ষেত্রে পূর্ণকালীন শ্রমিকের মোট মূল মজুরি, মহার্ঘ্য ভাতার অর্ধেক দিতে হয় মালিককে। পরের ১৫ দিনের জন্য শ্রমিক পাবেন ২৫ শতাংশ মূল বেতন এবং বাড়ি ভাড়া।

স্টকমার্কেটবিডি.কম/

বাজারে আদা-পেঁয়াজের দাম আরো কমল

521219c027d95-onionস্টকমার্কেটবিডি প্রতিবেদক :

স্বাভাবিক হয়ে আসছে আদা আর পেঁয়াজের বাজার। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য দুটি দিয়ে ব্যবসায়ীরা ভোক্তার পকেট কেটেছেন বহু দিন। করোনার প্রভাব শুরুর পর থেকে সুযোগ বুঝে দাম বাড়িয়েছেন তাঁরা। জীবনধারণের বাড়তি খরচের চাপের মধ্যেও ৪০০ টাকায় আদা আর ৭০ টাকায় পেঁয়াজ কিনতে হয়েছিল মানুষকে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পাইকারি বাজারে আদার দাম এখন ১০০ থেকে ১৩০ টাকার মধ্যে। শ্যামবাজার ব্যবসায়ীদের তথ্য মতে, বাজারে এখন আমদানি করা তিন দেশের আদা পাওয়া যায়। পাইকারিতে মিয়ানমার থেকে আমদানি করা বার্মিজ আদা বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা কেজি, সবচেয়ে ভালো মানের বার্মিজ আদাও পাওয়া যায় ১১০ টাকার মধ্যে। এ ছাড়া ইন্ডিয়ান ছোট আদা পাওয়া যায় ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়। চায়না আদার দামও সর্বোচ্চ ১৩০ টাকা কেজি। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন ভারত থেকে আমদানি চালু হলে দাম আরো কমে আসবে।

তবে তুলনামূলক খুচরা বাজারে এখনো আদার দাম বেশি। বাজারগুলোতে সব ধরনের আদাই ১৫০ থেকে ১৬০ টাকার মধ্যে পাওয়া যায়। ব্যবসায়ীরা বলছেন, আদায় ব্যবসায়ীদের কিছুটা ঘাটতি দিতে হয়। এক বস্তা আদা কিনলে বিক্রি শেষ হওয়ার আগে কিছু নষ্ট হয়ে যায়। লাভ ছাড়াও সেই ঘাটতি খরচ যোগ হয় কেজিপ্রতি দামের সঙ্গে। এর পরও পাইকারি থেকে খুচরায় সর্বোচ্চ পার্থক্য থাকতে পারে ২০ টাকা পর্যন্ত।

রাজবাড়ী বাণিজ্যালয়ের ব্যবসায়ী মো. ইলিয়াস বলেন, শুনছি ভারত থেকে আবার আমদানি স্বাভাবিক হবে। তখন আদার দাম আরো কমে আসবে। তখন আমরা আরো কমে বিক্রি করতে পারব। এখনো আমরা যে দামে কিনছি তাতে কেজিতে দু-তিন টাকা কমিশন পেলেই বিক্রি করে দিচ্ছি। কাঁচামাল বেশি দিন রাখা যায় না। ১০০ টাকায় কিনলে খুচরায় তা ১৩০ পর্যন্ত বিক্রি করতে পারে। তবে পণ্যের পার্থক্যের সঙ্গে ঘাটতি কমবেশি হয়। যার ঘাটতি যেমন, সে সেভাবেই দাম ঠিক করে।

গত ২৬ মার্চ দেশে ছুটি শুরুর পর থেকে আদার দাম বাড়তে থাকে। অসাধু ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে পণ্যটির দাম বাড়ায়। বন্দরে পণ্য আটকে থাকায় এ সুযোগ নেয় তারা। রোজার আগে পণ্যটির দাম বেড়ে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয় খুচরা বাজারে। পরে বাজারে নানা অভিযান আর বন্দরে পণ্য খালাসের ব্যবস্থা করলে দাম ধীরে ধীরে কমে আসে।

এদিকে সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবি ২৫ টাকায় পেঁয়াজ বিক্রির ঘোষণা দেওয়ার পর থেকে খুুচরা বাজারেও দাম কমে আসছে। পাইকারি বাজারে এখন ৩৩ থেকে ৩৫ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ পাওয়া যাচ্ছে। খুচরা বাজারে এখন ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। গত সপ্তাহে যা ৫০ থেকে ৫৫ টাকার মধ্যে ছিল। পেঁয়াজের ব্যবসায়ীরাও তাকিয়ে রয়েছেন ভারত থেকে আমদানির দিকে।

কারওয়ান বাজারের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী খান অ্যান্ড সন্সের মালিক গৌতম ঘোষ বলেন, ইন্ডিয়া থেকে পেঁয়াজ আসছে শুনছি। সেটা এলে দাম আরো কমে যাবে। তাঁর দেওয়া তথ্য মতে, কারওয়ান বাজারে পাইকারিতে ১৭৫ টাকা পাল্লা (পাঁচ কেজি) বিক্রি হচ্ছে। খুচরায় ২০০ টাকা পাল্লা বা ৪০ টাকা কেজি। শ্যামবাজারে আরো একটু কম, মান ভেদে ৩২ থেকে ৩৩ টাকা কেনা যাচ্ছে। গত সপ্তাহে পাইকারিতে ৪০-৪২ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

স্টকমার্কেটবিডি.কম/

পাচারকৃত ও কালো টাকা বিনিয়োগে আনার দাবি

new takaস্টকমার্কেটবিডি প্রতিবেদক :

কর দেওয়ায় পিছিয়ে থাকলেও মুদ্রা পাচার আর কালো টাকার পাহাড় গড়ায় এগিয়ে বাংলাদেশের কতিপয় বিত্তশালী। কর্মসংস্থাননির্ভর বিনিয়োগে পিছিয়ে থাকলেও তাঁদের অনেকেই অবৈধ আয়ের বিপুল টাকা বিদেশে পাচার করে বিলাসী জীবন যাপন করছেন। অর্থনীতি বিনিয়োগ-খরায় থাকলেও কিংবা মহামারি দুর্বিপাকে সরকার তহবিল সংকটে মানুষের জীবন-জীবিকা টিকিয়ে রাখতে হিমশিম খেলেও মুদ্রা পাচারকারীচক্র বা কালো টাকার মালিকরা ঠিকই জীবন কাটাচ্ছেন আয়েশে। তবে করোনার অভিঘাত মোকাবেলায় সরকারের বড় অঙ্কের অর্থ সংস্থানে পাচারের অর্থ এবং বিপুল অঙ্কের কালো টাকা সহজ শর্তে মূলধারায় ফিরিয়ে আনার দাবি জোরালো হচ্ছে।

উদ্যোক্তা, অর্থনীতিবিদ ও রাজস্ব খাতের বিশ্লেষকরা মনে করেন, সরকারের অর্থের চাহিদা পূরণে ওই সব খাতের টাকা অর্থনীতিতে নিয়ে আসার এখনই উপযুক্ত সময়। তাঁদের মতে, রাজস্ব আয়ের নাজুক অবস্থাসহ বিভিন্ন উৎস থেকে সরকারের ধারদেনার প্রেক্ষাপটে বিনা প্রশ্নে কালো টাকা, অপ্রদর্শিত অর্থ এবং বিদেশে পাচার করা টাকা মূলধারায় বিনিয়োগের সুযোগ দিলে বিপুল অঙ্কের টাকা অর্থনীতিতে যোগ হবে। সরকারকে ধারকর্যের জন্য বিদেশে হাত পাততে হবে না আবার শিল্প ও সেবা খাতও চাঙ্গা হবে। করোনার কারণে সরকারের সামনে যে কঠিন চ্যালেঞ্জ, তা মোকাবেলা করা, অর্থনীতিকে স্থিতিশীল রাখাই হলো অগ্রাধিকার। প্রয়োজনে কর ছাড় দিয়ে হলেও এসব অর্থ বিনিয়োগে আনতে হবে বলে মনে করেন তাঁরা।

যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক সংস্থা গ্লোবাল ফিন্যানশিয়াল ইন্টিগ্রিটি বা জিএফআইয়ের প্রকাশিত সর্বশেষ গবেষণা প্রতিবেদনের তথ্য মতে, ২০১৫ সাল পর্যন্ত আগের ১১ বছরে বাংলাদেশ থেকে মোট আট হাজার ১৭৫ কোটি ডলার বা সাড়ে ছয় লাখ ৮৬ হাজার ৭০০ কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে। শুধু ২০১৫ সালেই পাচার হয়েছে এক হাজার ১৫১ কোটি ডলার বা প্রায় ৯৮ হাজার কোটি টাকা। সংস্থাটি তাদের ২০১৭ সাল পর্যন্ত তথ্যের ভিত্তিতে এই গ্লোবাল রিপোর্ট প্রকাশ করলেও ২০১৫ সালের পর বাংলাদেশের কোনো তথ্য তারা পায়নি। তবে ধারণা করা হয়, গড়ে বছরে প্রায় ৬৫১ কোটি ডলার বা ৫৫ হাজার কোটি টাকা করে অর্থ পাচার হয়েছে। তাহলে ওই অঙ্ক বর্তমানে প্রায় ১০ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাওয়ার কথা; যে টাকা দিয়ে বাংলাদেশের দুই অর্থবছরের বাজেট বাস্তবায়ন করা সম্ভব। সংস্থাটির তখনকার হিসাবে মুদ্রা পাচারের দিক থেকে বিশ্বে শীর্ষ ৩০ দেশের তালিকায় স্থান দেওয়া হয় বাংলাদেশকে। জিএফআই মনে করে, বাংলাদেশের মোট বাণিজ্যের ১৯ শতাংশই কোনো না কোনোভাবে পাচার হচ্ছে।

জাতিসংঘ বিনিয়োগ সংস্থা আংকটাডের তথ্য বলছে, বাংলাদেশে যত টাকা কর আদায় হয়, তার অন্তত ৩৬ শতাংশের সমান টাকা বিদেশে পাচার হয়। মূলত আমদানি-রপ্তানির আড়ালেই এ পরিমাণ টাকা পাচার হয় বলে সংস্থাটি মনে করে। ২০১৪-১৫ অর্থবছরের রাজস্ব আয়ের তথ্যের ভিত্তিতে আংকটাড এ প্রতিবেদন তৈরি করে। যেখানে দেখানো হয়, ওই অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৫০ হাজার ৬৪০ কোটি টাকা পাচার হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংক ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তারা জানান, এসব টাকা মূলত কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, আরব আমিরাতে পাচার হয়েছে। এ টাকায় পাচারকারীরা ওই সব দেশে বিলাসবহুল বাড়ি-গাড়ি করে আয়েশি জীবন যাপন করছেন।

শুধু যে দেশ থেকে টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে তা-ই নয়; অনেকে বিপুল অঙ্কের অবৈধ টাকা আয় করেন, অথচ কর দেন না। নানা উপায়ে ফাঁকি দেন। আয় গোপন করেন। বেনামে টাকা রাখেন। ব্যাংকের ভল্টে সোনাদানা বা ভিন্ন উপায়ে মজুদ রাখেন। যে টাকা কোনো বিনিয়োগে যায় না। বাড়ি, ফ্ল্যাট, গাড়ি, সোনা-গয়না বা বিলাসবহুল জীবনযাপনে ব্যয় করেন। প্রশ্ন উঠবে এই ভয়ে এ টাকা শিল্প-কারখানা বা কর্মসংস্থাননির্ভর খাতে বিনিয়োগ হয় না। ২০১৪ সালে অর্থ মন্ত্রণালয়ের করা ‘আন্ডারগ্রাউন্ড ইকোনমি অব বাংলাদেশ : অ্যান ইকোনমেট্রিক অ্যানালিসিস’ শীর্ষক গবেষণায়ও বলা হয়, ২০১১ সালে দেশের অর্থনীতিতে প্রায় ৬০ শতাংশ কালো টাকার উপস্থিতি ছিল। যার পরিমাণ সাড়ে পাঁচ লাখ কোটি টাকা। এটা চলতি অর্থবছরের বাজেটের চেয়েও বেশি। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করেন, কালো টাকার অঙ্ক এখন আরো বেশি হবে।

টাকা পাচার ও অর্থনীতিতে কালো টাকার বিস্তার নিয়ে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন গবেষণা পর্যালোচনা করে জানা যায়, বাংলাদেশের এ চিত্র ক্রমেই ভয়ংকর হয়ে উঠছে। বাণিজ্যের আড়ালে মুদ্রা পাচার যেমন ঠেকানো যাচ্ছে না, আবার বিপুল অঙ্কের কালো টাকাও অর্থনীতির মূলধারায় আনা যাচ্ছে না। সরকার বিভিন্ন সময়ে কালো টাকা শর্ত সাপেক্ষে বিনিয়োগের সুযোগ দিলেও বাড়তি করের বোঝা আর অন্য আইনে শাস্তির বিধান থাকায় এ পথে অবৈধ অর্থের মালিকরা পা বাড়াননি।

রাজস্ব বিশ্লেষকরা বলছেন, পাচার রোধ করা গেলে বা অর্থনীতিতে কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ করে দিলে দ্বিগুণ শক্তি নিয়ে এগিয়ে যেতে পারত অর্থনীতি। বর্তমানে করোনার কারণে মানুষের জীবন-জীবিকা টিকিয়ে রাখতে অর্থের সংস্থান করা সরকারের সামনে চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে সরকার প্রায় এক লাখ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ দিয়েছে। এ টাকা জোগাতে সরকারকে ব্যাংকসহ বিভিন্ন উৎস থেকে সমন্বয় করতে হয়েছে, কিছু ক্ষেত্রে নীতি সহায়তা দিয়ে তহবিল জুগিয়েছে। রাজস্ব আয় কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় না থাকা, সঞ্চয়পত্রে কড়াকড়ি আরোপে গ্রাহকের সাড়া না পাওয়া, ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে নেওয়া সরকারের ঋণের কোটা পূরণ হয়ে যাওয়ায় সরকার টাকা জোগাতে বিদেশি উন্নয়ন সংস্থার কাছে ধরনা দিচ্ছে। শেষ পর্যন্ত কতটা সহায়তা পাওয়া যাবে তা এখনো নিশ্চিত নয়। এমন পরিস্থিতিতে করোনা আরো দীর্ঘায়িত হলে সরকারের সামনে আরো বিপুল অঙ্কের অর্থের চাহিদা তৈরি হবে, যা মেটানো কঠিন হবে। অনেকে টাকা ছাপিয়ে সংকট মোকাবেলার কথা বললেও বিভিন্ন মহল থেকে এ বিষয়ে আপত্তি তোলা হয়েছে। কৃত্রিমভাবে টাকার সংস্থান করলে মূল্যস্ফীতি বাড়াসহ আর্থিক খাতে বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা প্রকাশ করেন অর্থনীতিবিদরা। তাই এখন কালো টাকা ও পাচারের অর্থ অর্থনীতিতে ফেরাতে বিশেষ করছাড় দিয়ে বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগের পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা। কেউ বলছেন, আইন করে শাস্তির বিধান করে বিদেশ থেকে টাকা ফিরিয়ে আনা যাবে না। আর তা জটিল প্রক্রিয়া। তাঁরা মনে করেন, এখন সারা বিশ্বে করোনার বিস্তারে পাচারকারীরা আতঙ্কে আছেন।

যাঁরা বিলাসী জীবনের খোঁজে আমেরিকা-কানাডা, সিঙ্গাপুর-মালয়েশিয়ায় বাড়ি বানিয়েছিলেন, তাঁরাও আছেন মৃত্যু আতঙ্কে। উন্নত দেশে গিয়েও করোনার মহামারি থেকে বাঁচতে পারবেন এমন ভরসা নেই কারোর। তাই বিশ্লেষকরা মনে করেন, এখন ভালো সুযোগ-সুবিধা পেলে, কর ছাড় দিলে, কোনো প্রশ্ন না করলে অনেকেই টাকা ফিরিয়ে আনবেন।

এ ব্যাপারে অর্থনীতিবিদ ও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক ড. গৌর গোবিন্দ গোস্বামী গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, সরকারের আসছে বাজেটে নানা খাতে বিনিয়োগ লাগবে। এ জন্য বিপুল অঙ্কের অর্থ প্রয়োজন। ব্যাংক খাত, বিদেশি ঋণ ও অনুদানে পুরোটার সংস্থান করা যাবে না। আবার রাজস্বও ঠিকমতো পাওয়া যাবে না। এ জন্য যা করতে পারে সরকার, তা হলো বিশেষ বন্ড চালু করতে পারে যেখানে সবাই অপ্রদর্শিত আয় ও কালো টাকা বিনিয়োগ করবে। অথবা সঞ্চয়পত্রের কড়াকড়ি শিথিল করবে। কাউকে প্রশ্ন না করে, শুধু ভোটার আইডি ও ছবি দিয়ে খুব সহজে যাতে সেখানে বিনিয়োগ করতে পারে তার ব্যবস্থা রাখা যেতে পারে।

এনবিআরের সাবেক আয়কর নীতির সদস্য ড. সৈয়দ আমিনুল করিম কালের কণ্ঠকে বলেন, আসছে অর্থবছরে সরকার কর অবকাশ বা কর অব্যাহতি তুলে দিতে পারবে না। এতে শিল্প ও সেবা খাত দুর্বল হয়ে যাবে। এমনিতেই তাদের ব্যবসা নাজুক অবস্থায়। এ ক্ষতি পুষিয়ে উঠতেই অনেক সময় লাগবে। ফলে ধরে নেওয়া যায়, রাজস্ব আয় কম হবে। তখন সরকারকে ব্যয় মেটানোর জন্য যে অর্থের প্রয়োজন হবে তার বড় উৎস হতে পারে পাচারের টাকা, অপ্রদর্শিত আয় ও কালো টাকা বিনা প্রশ্নে মূলধারায় নিয়ে আসা। এখন সরকারের বিপুল অর্থের প্রয়োজন। টাকা ছাপিয়ে টাকার সংস্থান কোনো বাস্তবসম্মত উপায় নয়। এ নিয়ে নীতিনৈতিকার প্রশ্ন তুলবেন অনেকে। আমার মনে হয়, এখন এসব ভাবার সময় নেই। প্রতিটি দেশই তাদের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে সম্ভব সব পদক্ষেপ নেবে। আগে টিকে থাকতে হবে। এ টাকা বিনিয়োগে আনতে আইনে সংশোধনী আনতে হবে। বলতে হবে, অন্য আইনে যাই থাকুক, এই বিনিয়োগের অর্থের উৎস নিয়ে দুদক বা অন্য সংস্থা প্রশ্ন তুলতে পারবে না।

এ ব্যাপারে আবাসন খাতের সংগঠন রিহ্যাবের প্রেসিডেন্ট আলমগীর শামসুল আলামীন গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, এখন এমন এক পরিস্থিতি যখন অর্থনীতি রীতিমতো স্থবির। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো অর্থনীতিতে টাকার প্রবাহ বাড়ানো। অলস অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগে আনতে হবে। এ জন্য কোনো প্রশ্ন করা যাবে না। সরকারের কোনো সংস্থাও কোনো আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারবে না। বিশেষ করছাড়ে আগামী পাঁচ বছরের জন্য এ সুযোগ দেওয়া হলে সরকারের ওপর চাপ কমবে। শিল্প-কারখানা, আবাসন, হাসপাতাল, টেক্সটাইল, গার্মেন্টসহ বিভিন্ন খাতে যেখানে বিপুলসংখ্যক মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে, সেখানে বিনিয়োগের অনুমোদন দেওয়া যেতে পারে। এখানে গুরুত্বপূর্ণ হলো, করছাড় এবং কোনো সংস্থার পক্ষ থেকে প্রশ্ন না করার বিধান থাকতে হবে। অন্যথায় সুযোগ দিলেও তেমন কাজে আসবে না।

এনবিআর সূত্র জানায়, বর্তমান অর্থবছরে বিশেষ ক্ষেত্রে কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে ১০ শতাংশ কর দিয়ে বিনিয়োগ করা যাবে। তবে নানা শর্তের কারণে এ সুযোগে তেমন সাড়া নেই বলে জানা যায়। এনবিআরের আয়কর বিভাগ সূত্র থেকে জানা যায়, ১৯৭৫ সাল থেকে বিভিন্ন সময়ে কালো টাকা বৈধ করার সুযোগ দেওয়া হয়। তবে বেশির ভাগ সময়ই নানা শর্তের কারণে অবৈধ টাকার মালিকরা তাতে সাড়া দেননি। ১৯৭৫ সালে সেনাশাসন আমলে সাদা হয় দুই কোটি ৭৫ লাখ টাকা। ১৯৭৬ থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত সেনাশাসন ও বিএনপি আমলে সাদা হয় ৫০ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। ১৯৮২ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত সেনাশাসন ও জাতীয় পার্টির আমলে বৈধ হয় ৪৫ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। ১৯৯১ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত বিএনপির আমলে বৈধ হয় ১৫০ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। ১৯৯৭ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ শাসনামলে সাদা হয় ৯৫০ কোটি ৪১ লাখ টাকা। ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি আমলে বৈধ হয় ৮২৭ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। ২০০৭ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে বৈধ হয় ৯ হাজার ৬৮২ কোটি টাকা। ২০০৯ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ আমলে বৈধ হয় এক হাজার ৮০৫ কোটি টাকা। আর ২০১৪ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ আমলে বৈধ হয় ৮৫৬ কোটি ৩০ লাখ টাকা।

স্টকমার্কেটবিডি.কম/