স্টকমার্কেটবিডি প্রতিবেদক :
বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ৪৪ শিল্পোদ্যোক্তাকে ২০২১ সালের জন্য বাণিজ্যিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি তথা সিআইপি সম্মাননা দিয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়। ‘সিআইপি (শিল্প) নীতিমালা ২০১৪’ অনুযায়ী বাংলাদেশের বেসরকারি খাতে শিল্প স্থাপন, পণ্য উৎপাদন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, জাতীয় আয় বৃদ্ধিসহ দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এ সম্মাননা দেওয়া হয়েছে।
গতকাল রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে এ সম্মাননা দেওয়া হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। বিশেষ অতিথি ছিলেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন, এফবিসিসিআইর প্রেসিডেন্ট মো. জসিম উদ্দিন। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানা।
নির্বাচিত ব্যক্তিদের শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে একটি পরিচয়পত্র (সিআইপি কার্ড) দেওয়া হয়। এর মাধ্যমে তারা আগামী এক বছরের জন্য জাতীয় ও সিটি করপোরেশনের অনুষ্ঠানে নাগরিক সংবর্ধনায় দাওয়াত, ব্যবসাসংক্রান্ত কাজে ভ্রমণের সময় বিমান, রেলপথ, সড়ক ও জলপথে সরকারি যানবাহনে আসন সংরক্ষণে অগ্রাধিকার পাবেন। বিমানবন্দরে ভিআইপি লাউঞ্জ ব্যবহারের সুবিধা পাবেন। স্ত্রী, সন্তান ও নিজের চিকিৎসার জন্য সরকারি হাসপাতালে বিশেষ সুবিধা পাবেন। এ ছাড়া সরকারের শিল্পবিষয়ক নীতিনির্ধারণী কমিটিতে তাদের অন্তর্ভুক্ত করা যাবে।
অনুষ্ঠানে কৃষিমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকারের সঠিক দিক ও নীতি-নির্দেশনায় বাংলাদেশে ইতোমধ্যে নীরব শিল্প বিপ্লব সংঘটিত হয়েছে। শিল্প খাতে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে সরকার ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলেছে। শিল্প-কারখানায় আধুনিক ও পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির প্রয়োগ বাড়ানো হয়েছে। জাতীয় অর্থনীতিতে শিল্প খাতের অবদান কয়েকগুণ বেড়েছে।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, সম্প্রতি চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ঢেউ বাংলাদেশে এসে লেগেছে। এর ফলে দেশে জ্ঞানভিত্তিক ও পরিবেশবান্ধব সবুজ শিল্পায়নের নতুন ধারা সূচিত হয়েছে। এ ধারা গতিশীল করতে শিল্প মন্ত্রণালয় বেসরকারি খাতকে সম্ভব সব ধরনের নীতি সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশ ২০৪১ সালের আগেই উন্নত ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্রে পরিণত হবে।
শিল্প প্রতিমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে মধ্যম আয়ের বাংলাদেশকে উন্নত বিশ্বের কাতারে পৌঁছাতে হলে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবকে কাজে লাগাতে হবে এবং দেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখতে হবে।
২০২১ সালের জন্য এনসিআইডি কোটায় ছয়জন এবং অন্যান্য ক্যাটাগরিতে ৩৮ জনকে সিআইপি সম্মাননা দেওয়া হয়েছে।
এনসিআইডি ক্যাটাগরি: জাতীয় শিল্প উন্নয়ন পরিষদ বা এনসিআইডি ক্যাটাগরিতে সিআইপি হলেন এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম; বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের সভাপতি কামরান তানভিরুর রহমান, বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিল অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন, ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফআইসিসিআই) সভাপতি রুপালী হক চৌধুরী, বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সভাপতি একেএম সেলিম ওসমান এবং বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (বিসিআই) সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী।
বৃহৎ শিল্প (উৎপাদন): এ ক্যাটাগরিতে সিআইপি হলেন স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা অংশীদার এরিক এস. চৌধুরী; বিএসআরএম স্টিলসের চেয়ারম্যান আলী হুসাইন আকবর আলী, প্রাণ ডেইরির চেয়ারম্যান ইলিয়াস মৃধা, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোবারক আলী, জাবের অ্যান্ড জুবায়ের ফেব্রিক্সের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ জাবের, এসিআইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. আরিফ দৌলা, পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. মোস্তাফিজুর রহমান, আবদুল মোনেম লিমিটেডের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক এএসএম মাঈনউদ্দিন মোনেম, ফারিহা নিট টেক্সের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মামুন ভূঁইয়া, স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী, হ্যামস গার্মেন্টেসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী সফিকুর রহমান, বাদশা টেক্সটাইলসের উদ্যোক্তা পরিচালক কামাল উদ্দিন আহাম্মদ, মীর সিরামিকের পরিচালক মাহরীন নাসির, ডিউরেবল প্লাস্টিকের পরিচালক উজমা চৌধুরী, রানার অটোমোবাইলসের চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান খান, উইনার স্টেইনলেস স্টিল মিলসের চেয়ারম্যান সোহেল রানা, তাসনিয়া ফেব্রিক্সের উদ্যোক্তা পরিচালক আহমেদ আরিফ বিল্লাহ, সোহাগপুর টেক্সটাইল মিলসের চেয়ারম্যান আব্দুল হাই সিকদার, এনভয় টেক্সটাইলসের চেয়ারম্যান কুতুবউদ্দিন আহমেদ এবং কনফিডেন্স পাওয়ার হোল্ডিংসের ভাইস চেয়ারম্যান ইমরান করিম।
বৃহৎ শিল্প (সেবা): এ বিভাগে সিআইপি হলেন এসটিএস হোল্ডিংসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক খন্দকার মনির উদ্দীন, এসবি টেল এন্টারপ্রাইজেসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাকারিয়া শাহিদ, দ্য সিভিল ইঞ্জিনিয়ার্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী আতিকুর রহমান, কনকর্ড রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের চেয়ারম্যান এসএম কামাল উদ্দিন এবং ইস্টার্ন হাউজিংয়ের চেয়ারম্যান মনজুরুল ইসলাম।
মাঝারি শিল্প (উৎপাদন): এ বিভাগে সিআইপি হলেন বিশ্বাস পোলট্রি অ্যান্ড ফিশ ফিডসের চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান, ইনসেপ্টা ভ্যাকসিনের ভাইস চেয়ারম্যান আক্তার জাহান হাসমিন মুক্তাদির, অকো-টেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুস সোবহান, জিন্নাত নিটওয়্যারসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল জব্বার, রোমানিয়া ফুড অ্যান্ড বেভারেজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হুমায়ুন কবির বাবলু, প্রমি এগ্রো ফুডসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এনামুল হাসান খান, মাসকো পিকাসোর পরিচালক ফাহিমা আক্তার, টর্ক ফ্যাশনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মূহাম্মদ কামাল উদ্দিন, জিন্নাত অ্যাপারেলসের চেয়ারম্যান আব্দুল ওয়াহেদ এবং মেসার্স সিটাডেল অ্যাপারেলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহিদুল ইসলাম।
ক্ষুদ্র শিল্প (উৎপাদন): এ বিভাগে সিআইপি হলেন রংপুর ফাউন্ড্রির পরিচালক চৌধুরী কামরুজ্জামান এবং এরফান এগ্রো ফুডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহবুব আলম। এ ছাড়া মাইক্রো শিল্প ক্যাটাগরিতে নির্বাচিত হয়েছেন মাসকো ডেইরি এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী এমএ সবুর।
স্টকমার্কেটবিডি.কম/