করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশের অন্যতম শীর্ষ ব্যবসায়ী, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বাবুল মারা গেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তার বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর।
রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে (সাবেক এ্যাপোলো) চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার বিকেলে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এই হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে ও তিন মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
বিশিষ্ট শিল্পপতির মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও মন্ত্রীসভার সদস্যগণ। এক শোক বার্তায় রাষ্ট্রপতি মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।
গত ১৪ জুন নুরুল ইসলাম বাবুলের করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে। ওইদিনই তাকে এভার কেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। করোনায় তার কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিশিষ্ট এই শিল্পোদ্যোক্তার চিকিৎসায় এভার কেয়ারের চিকিৎসক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব) মাহবুদের নেতৃত্ব ১০ সদস্যবিশিষ্ট মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়। এর বাইরে চীনের চার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এবং সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালের দুই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক টেলিকনফারেন্সের মাধ্যমে পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু অবশেষে মৃত্যুর কাছে হেরেই গেলেন। আজ মঙ্গলবার বাদ জোহর যমুনা ফিউচার পার্ক মসজিদ প্রাঙ্গণে জানাজা শেষে বনানী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
যমুনা গ্রুপের পরিচালক ড. মোহাম্মদ আলমগীর আলম জানিয়েছেন, মঙ্গলবার বাদ জোহর যমুনা ফিউচার পার্কের সামনে সীমিত পরিসরে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। জানাজা শেষে মরহুমকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বনানী কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হবে।
যমুনা গ্রুপ বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্প গ্রুপ। ১৯৪৬ সালে জন্ম নেয়া নুরুল ইসলাম বাবুল ১৯৭৪ সালে যমুনা গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করেন। মেধা, দক্ষতা, পরিশ্রম ও সাহসিকতার মাধ্যমে একে একে শিল্প ও সেবা খাতে গড়ে তোলেন ৪১টি প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে ৫০ হাজারের বেশি মানুষ কাজ করছে এই গ্রুপে। নুরুল ইসলাম গণমাধ্যম দৈনিক যুগান্তর ও স্যাটেলাইট টেলিভিশন যমুনা টেলিভিশনেরও প্রতিষ্ঠাতা। নুরুল ইসলামের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে যমুনা গ্রুপ, দৈনিক যুগান্তর ও যমুনা টেলিভিশন পরিবারে। এই কঠিন সময়ে অভিভাবকের চলে যাওয়া মেনে নিতে পারছেন না প্রতিষ্ঠানটির কর্মীরা।
এশিয়ার সবচেয়ে বড় শপিংমল যমুনা ফিউচার পার্ক, যমুনা নির্মাণাধীন মেরিয়টস হোটেলসহ শিল্প ও সেবা খাতে শীর্ষ স্থান ধরে রেখেছে গ্রুপটি। ইলেকট্রনিক্স, বস্ত্র, ওভেন গার্মেন্টস, রাসায়নিক, চামড়া, মোটরসাইকেল, বেভারেজ টয়লেট্রিজ, নির্মাণ এবং আবাসন খাতে ব্যবসায় অন্যতম এই গ্রুপ। এই সফল শিল্প উদ্যোক্তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে দেশের রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক অঙ্গনসহ শিল্প খাতে।
স্টকমার্কেটবিডি.কম/