শেয়ারবাজার হতে নতুন বিনিয়োগের লক্ষ্যমাত্রা ৪,৪০০ কোটি টাকা

DSE_CSE-smbdনিজস্ব প্রতিবেদক :

এক তথ্যচিত্রের মাধ্যমে অর্থমন্ত্রী দেখিয়েছেন, ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরে নতুন বিনিয়োগের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। আর ২০১৫-২০১৬ অর্থ বছরে শেয়ারবাজারে নতুন বিনিয়োগ হয়েছে ২ হাজার ৮২৯ কোটি টাকা, ২০১৬-২০১৭ অর্থ বছরে নতুন বিনিয়োগ এসেছে ৪ হাজার কোটি টাকা। ।

অর্থমন্ত্রীর বাজেট পুস্তিকায় শেয়ারবাজারের অর্জন নিয়ে বলা হয়েছে গত তিন অর্থবছরে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে ৩৭টি কোম্পানিকে আইপিও, ১৩টি কোম্পানিকে রাইট ইস্যু, ১৫টি কোম্পানিকে বন্ড ও ডিভেঞ্চার এবং ৫টি কোম্পানিকে প্রেফারেন্স শেয়ার ইস্যুসহ ৩০৬টি প্রাইভেট লিমিটেড ও ২৩৪টি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিকে মোট ৪৩ হাজার ৯২৮ কোটি টাকা মূলধন উত্তোলনের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

কোম্পানিগুলোর মূলধন উত্তোলন দেশের শিল্পায়ন, কর্মসংস্থান তথা দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে। শেয়ারবাজারে ভাল সিকিউরিটিজের যোগান বৃদ্ধিতে কার্যকর ভূমিকা রাখার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরে শেয়ারবাজারে আরো ৭টি স্টক ব্রোকার সনদ, ৯টি স্টক ডিলার সনদ, ৩টি এসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি সনদ, ১টি সিকিউরিটিজ কাস্টুডিয়ান সনদ, ডেট সিকিউরিটি ইস্যুর জন্য ১৫টি ট্রাস্টি নিবন্ধন সনদ, ৬টি ডিপজিটরি অংশগ্রহণকারী নিবন্ধন সনদ এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (অল্টারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট) রুল-২০১৫ এর অধীনে ২টি ট্রাস্টি নিবন্ধন সনদ ও ৪টি ফান্ড ম্যানেজার নিবন্ধন সনদ প্রদান করেছে। ইতোমধ্যে স্টক এক্সচেঞ্জ সমূহে স্বল্প মূলধনী কোম্পানির জন্য আলাদা প্লাটফর্ম গঠনের লক্ষ্যে নীতিমালা প্রণয়ন করে গেজেটে প্রকাশ করা হয়েছে। সিকিউরিটিজে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণে এক্সচেঞ্জেস ডিমিউচুয়ালাইজেশন আইন-২০১৩ প্রণীত হয়েছে।

শেয়ারবাজারে সিকিউরিটিজ লেনদেনে কারসাজি (ম্যানুপুলেশন) রোধ তথা স্বচ্ছতা আরো সুদৃঢ় করার লক্ষ্যে আধুনিক সার্ভেইল্যান্স সফটওয়্যার স্থাপন করা হয়েছে। জুন-২০১৬ পর্যন্ত স্টক এক্সচেঞ্জ সমূহে তালিকাভুক্ত কোম্পানির সংখ্যা ১৯২ এবং তালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজের সংখ্যা ৫৫৯তে দাঁড়িয়েছে।

এদিকে মূলধন উত্তোলনের ক্ষেত্রে দেখানো হয়েছে ২০১৫-২০১৬ অর্থ বছরে ১০টি কোম্পানি মূলধন উত্তোলন করেছে। ২০১৬-২০১৭ অর্থ বছরে ১১টি কোম্পানি মূলধন উত্তোলন করেছে। ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরে ১২টি কোম্পানি মূলধন উত্তোলনের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে। এছাড়া ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরে দেশব্যাপি ফিন্যান্সিয়াল লিটারেসি প্রোগ্রামের মাধ্যমে ৮ হাজার বিনিয়োগকারীকে শিক্ষা দেওয়া হবে।

শেয়ারবাজারের কার্যকারিতা বৃদ্ধিকরণ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, শেয়ারবাজার সুশৃঙ্খল এবং শক্তিশালী হলে মূলধন প্রাপ্তি সহজলভ্য হবে এবং দেশে নতুন নতুন শিল্প কারখানা স্থাপিত হবে। উক্ত শিল্প কারখানা সমূহে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে, যার ফলশ্রুতিতে দারিদ্র নিরসনের গতি ত্বরান্বিত হবে। এতে নারীদেরও অধিক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।

বাজেট পুস্তিকায় আরো বলা হয়েছে, অধিকতর কার্যকর শেয়ারবাজার প্রতিষ্ঠার এবং বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য শেয়ারবাজারের স্টক ব্রোকার ও সাব-ব্রোকার, শেয়ার হস্তান্তরকারী প্রতিনিধি, ইস্যু ব্যাংকার, মার্চেন্ট ব্যাংকার, ইস্যু নিবন্ধক ও ম্যানেজার, অবলিখক, পোর্টফলিও ম্যানেজার, বিনিয়োগ উপদেষ্টা এবং শেয়ারবাজারের সঙ্গে সম্পৃক্ত অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের কার্যকর সমন্বয়ের জন্য যথাযথ আইনি কাঠামো তৈরির পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। এ খাতে দক্ষজনবল তৈরির লক্ষ্যে বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ক্যাপিটাল মার্কেট গঠন করা হয়েছে। শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্ট দক্ষ জনবল তৈরির লক্ষে উন্নততর ও মানসম্মত প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য এ প্রতিষ্ঠানকে আধুনিকায়ন এবং সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

ইতোমধ্যে শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসিকে শক্তিশালী করার জন্য জনবল ও অন্যান্য সরঞ্জাম বৃদ্ধি করা হয়েছে। শেয়ারবাজারে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের সহায়তার লক্ষে পুন:অর্থায়ন কার্যক্রম চলছে বিধায় এ খাতকে দ্বিতীয় অগ্রাধিকার খাত হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

স্টকমার্কেটবিডি.কম/এমএ