রাইট শেয়ার ইস্যু নিয়ে কঠোর অবস্থানে নিয়ন্ত্রক সংস্থা

bsecনিজস্ব প্রতিবেদক :

নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) রাইট শেয়ার ইস্যুকৃত কোম্পানির জবাবদিহিতা বাড়িয়েছে। এর ফলে রাইটের মাধ্যমে শেয়ারবাজার থেকে অর্থ উত্তোলন কমছে। ২০১১ সালে ব্যাংক, বীমাসহ বিভিন্ন খাতের ২১টি কোম্পানি রাইট শেয়ার ইস্যু করলেও গত দেড় বছরে মাত্র দুটি কোম্পানি এর অনুমোদন পেয়েছে। এ সময়ের ব্যবধানে রাইট ইস্যু কমেছে ৮৬ দশমিক ৬১ শতাংশ।

মূলধন বাড়াতে কোনো কোম্পানি বিদ্যমান শেয়ারহোল্ডারদের কাছে নতুন করে যে শেয়ার বিক্রি করে তাই রাইট শেয়ার। অতীতে কোম্পানিগুলোর মধ্যে এভাবে মূলধন বৃদ্ধির জোর প্রবণতা থাকলেও কয়েক বছর ধরে তা ধারাবাহিকভাবে কমছে। গত পাঁচ বছরের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, রাইট ইস্যুর মাধ্যমে মূলধন সংগ্রহ ২০১১ সালের তুলনায় প্রায় ৮৭ শতাংশ কমেছে।

গত ২০১১ সালে ২১টি প্রতিষ্ঠান ১১৬ কোটি ৯৯ লাখ রাইট শেয়ার ছেড়ে বাজার থেকে ২ হাজার ৩৪১ কোটি টাকা মূলধন সংগ্রহ করে। এসব শেয়ারের অভিহিত মূল্য ছিল ১ হাজার ৮৫৮ কোটি টাকা। ২০১২ সালে নয়টি প্রতিষ্ঠান ৪৯ কোটি ৭৯ লাখ রাইট শেয়ার ছেড়ে মোট ৮৬৪ কোটি ৬২ লাখ টাকা নিয়েছে, অভিহিত মূল্যে যা ৪৯৭ কোটি ৯০ লাখ টাকা। ২০১৩ সালে আটটি প্রতিষ্ঠান ১৮ কোটি শেয়ার ছেড়ে বাজার থেকে ১৮০ কোটি ২৯ লাখ টাকা নিয়েছে।

গত ২০১৪ সালে নয়টি প্রতিষ্ঠান প্রিমিয়ামসহ ২ হাজার ৭০৮ কোটি টাকা নিয়েছে। এর মধ্যে প্রিমিয়াম ছিল ১ হাজার ২২৭ কোটি টাকা। সর্বশেষ ২০১৫ সালে ছয়টি কোম্পানি রাইটের আবেদন করলেও সে বছর কোনো রাইট অনুমোদন দেয়নি কমিশন। তবে চলতি বছরের শুরুতে সেখান থেকে দুটি কোম্পানির রাইট আবেদন অনুমোদন করে বিএসইসি।

নিয়ন্ত্রক সংস্থার দাবি, সিকিউরিটিজ আইনসহ অন্যান্য কমপ্লায়েন্স মেনে রাইট আবেদন করা কোম্পানির সংখ্যা কমে যাওয়া এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থার সতর্কতার কারণেই এমনটি হয়েছে।

বিএসইসি কর্মকর্তারা জানান, রাইটের জন্য আবেদন করা কোম্পানিগুলোর আর্থিক প্রতিবেদনে অনেক সময়ই আন্তর্জাতিক হিসাবমান (আইএএস) ও আন্তর্জাতিক নিরীক্ষামান (আইএসএ) অনুসরণ হয় না। অনেক ক্ষেত্রে কোম্পানির আর্থিক অবস্থা ও ঋণমান সন্তোষজনক ছিল না। এসব কারণে আবেদন করেও অনেক প্রতিষ্ঠান রাইট শেয়ার ইস্যুর অনুমোদন পাচ্ছে না। এছাড়া কয়েকটি কোম্পানির বিরুদ্ধে রাইটের অর্থ সঠিকভাবে ব্যবহার না করার প্রমাণ পাওয়ায় এ ব্যাপারে কমিশনও সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।

বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও ক্যাপিটাল ইস্যু বিভাগের প্রধান মাহবুবুল আলম এ প্রসঙ্গে বলেন, কোম্পানির বিগত কয়েক বছরের আর্থিক ভিত্তি ও সিকিউরিটিজ আইন পরিপালনের বিষয়ে নিরীক্ষা করে রাইট অনুমোদন দেয়া হয়। কিছু কিছু কোম্পানি কর্তৃক রাইটের টাকা অপব্যবহারের কারণে আইন আরো কঠিন করা হয়েছে।

রাইটের অর্থ সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে নেয়া হয় বিধায় তা খরচে বিএসইসির কাছে জবাবদিহি করতে হয় সংশ্লিষ্ট কোম্পানিকে। এসব কারণে কয়েক বছর ধরে কোম্পানির পক্ষ থেকে রাইট আবেদন কমেছে। এছাড়া মূলধন সংগ্রহের জন্য ব্যাংকঋণ ও বন্ড ইস্যুর মতো বিকল্প পন্থাগুলো আগের চেয়ে সহজ হওয়ার কারণেও রাইট ইস্যুর প্রবণতা কমছে বলে দাবি করছে বিএসইসি।

স্টকমার্কেটবিডি.কম/এম