স্টকমার্কেটবিডি প্রতিবেদক :
সরকারি অধিকাংশ ব্যাংক বছরের পর বছর ঋণের বিপরীতে চাহিদামতো নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণ করতে পারছে না। তবে দুই বছর ধরে বেসরকারি খাতের কয়েকটি ব্যাংকও একই সমস্যায় পড়েছে।
স্ট্যান্ডার্ড, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ও শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকও সাম্প্রতিক সময়ে নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণ করতে পারছে না। ফলে এসব ব্যাংকের ঋণের মান ধীরে ধীরে খারাপ হচ্ছে। গত সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংক খাতে মোট নিরাপত্তা সঞ্চিতি ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ৮২৯ কোটি টাকা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, একটি ব্যাংক কতটা ভালো চলছে, তার কিছুটা দৃশ্যমান হয় পরিচালনার দিক থেকে ব্যাংকটি মৌলিক নিয়ম-কানুন মানতে পারছে কিনা, তা দিয়ে। এর মধ্যে অন্যতম হল, যে পরিমাণ ঋণ বিতরণ হয়েছে, তার বিপরীতে যথাযথ মানে নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণ করা। মূলত পরিচালন মুনাফা থেকেই এসব সঞ্চিতি সংরক্ষণ করতে হয়। ফলে এসব ঋণ আদায় না হলেও ব্যাংকের ভিত্তি ততটা নড়বড়ে হয় না। ব্যাংকগুলো ঝুঁকিতে কম পড়ে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বেসরকারি খাতের এবি ব্যাংকের খেলাপি ঋণ গত সেপ্টেম্বর শেষে বেড়ে হয়েছে ১ হাজার ৬৩০ কোটি টাকা, দুই বছর আগে যা ছিল ৯৭৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ দুই বছরে খেলাপি ঋণ প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে। এর ফলে ব্যাংকটি এখন চাহিদামতো নিরাপত্তা সঞ্চিতিও রাখতে পারছে না। ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১২৩ কোটি টাকা।
সোস্যাল ইসলামী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ গত সেপ্টেম্বরে বেড়ে হয়েছে ১ হাজার ৫৬২ কোটি টাকা, দুই বছর আগে যা ছিল ৭৩৮ কোটি টাকা। মালিকানা পরিবর্তনের পর এখন নিরাপত্তা সঞ্চিতির ঘাটতিও দাঁড়িয়েছে ৩৫৭ কোটি টাকা। এ ছাড়া ন্যাশনাল ব্যাংকের নিরাপত্তা সঞ্চিতি ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ২৬১ কোটি টাকা।
শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ গত সেপ্টেম্বরে বেড়ে হয়েছে ১ হাজার ৮১ কোটি টাকা, দুই বছর আগে যা ছিল ৭১৪ কোটি টাকা। ব্যাংকটির এখন নিরাপত্তা সঞ্চিতির ঘাটতি ১০২ কোটি টাকা। স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের খেলাপি ঋণ গত সেপ্টেম্বরে বেড়ে হয়েছে ১ হাজার ১৬৮ কোটি টাকা, দুই বছর আগে যা ছিল ৫২১ কোটি টাকা। এ কারণে এখন ৬২ কোটি টাকা নিরাপত্তা সঞ্চিতির ঘাটতিতে পড়েছে ব্যাংকটি।
এদিকে সেপ্টেম্বর শেষে বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের সঞ্চিতি ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৪২১ কোটি টাকা, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ৯৬ কোটি টাকা ও প্রিমিয়ার ব্যাংকের ৯৭ কোটি টাকা। এছাড়া রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকগুলো দীর্ঘদিন ধরে দুরবস্থার মধ্যে আছে। এর মধ্যে সোনালী ব্যাংকের নিরাপত্তা সঞ্চিতি ঘাটতি ৩ হাজার ৫৪৫ কোটি টাকা, বেসিক ব্যাংকের নিরাপত্তা সঞ্চিতি ঘাটতি ৩ হাজার ৫৪৮ কোটি টাকা, রূপালী ব্যাংকের নিরাপত্তা সঞ্চিতি ঘাটতি ১ হাজার ৩৫৩ কোটি টাকা এবং অগ্রণী ব্যাংকের নিরাপত্তা সঞ্চিতি ঘাটতি ৮৬৭ কোটি টাকা।
স্টকমার্কেটবিডি.কম/জেড