স্টকমার্কেটবিডি প্রতিবেদক :
বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে শেয়ারবাজারে সাময়িক তারল্য সুবিধা প্রদান সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করা হয়েছে; যা দেশে কার্যরত সব তফসিলি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী বরাবর পাঠানো হয়েছে। তবে শেয়ারবাজারের এই তারল্য সুবিধা গ্রহণে ব্যাংককে ৯টি শর্ত পরিপালন করতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, এই তারল্য সুবিধা নিয়ে ব্যাংকগুলো সীমার মধ্যেই শেয়ারবাজারে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ বাড়ানোর সুযোগ পাবে। বর্তমানে একটি বাদে প্রায় সব ব্যাংকেরই শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ নির্ধারিত সীমার নিচে রয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, গত আগস্ট শেষে ব্যাংকিং খাতে অতিরিক্ত তারল্য রয়েছে প্রায় ৯২ হাজার কোটি টাকা, তবে প্রায় ৮৫ শতাংশই ট্রেজারি বিল ও বন্ডে বিনিয়োগ হিসেবে আছে। এই ট্রেজারি বিল ও বন্ডে রাখা বিনিয়োগের একটি অংশ বিকল্পভাবে শেয়ারবাজারে আনার লক্ষ্যে এই সুযোগ সৃষ্টি করল বাংলাদেশ ব্যাংক।
কয়েক মাস ধরে শেয়ারবাজারে মন্দাবস্থা চলছে। আর এই অবস্থায় পর্যাপ্ত অর্থ না থাকায় বাজারে সক্রিয় হতে পারেনি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা।
তারা বলছে, ব্যাংক নিজে এবং সহযোগী প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দেওয়ার মাধ্যমে ব্যাংক খাত থেকে শেয়ারবাজারে ২৫-৩০ হাজার কোটি টাকার জোগান আসার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
বর্তমানে শেয়ারবাজারে ৩০টি ব্যাংক তালিকাভুক্ত রয়েছে। খেলাপি ঋণের বিপরীতে প্রভিশন সংরক্ষণ ও পর্যাপ্ত আমানত না আসায় সংকটে রয়েছে বেশির ভাগ ব্যাংক।
শেয়ারবাজারসংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন নির্দেশনার ফলে দীর্ঘদিন ধরে চলা তারল্য সংকট কাটার পাশাপাশি পুঁজিবাজারে গতিশীলতা বাড়বে। সহযোগী প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগে ব্যাংক থেকে ঋণ পাবে, আবার ব্যাংকের মুনাফাও বাড়বে।
তারল্য সুবিধা গ্রহণে ৯ শর্ত : শেয়ারবাজার গতিশীল করতে তারল্য সরবরাহ নিশ্চিতকরণে ৯টি শর্ত দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ব্যাংক কম্পানি আইন অনুযায়ী, তারল্য সুবিধা গ্রহণেচ্ছু ব্যাংকের একক (Solo) ও সমন্বিত (Consolidated)) উভয় ভিত্তিতে বিবেচ্য মূলধন সর্বোচ্চ সীমার কম হতে হবে। সোলো ভিত্তিতে বিবেচ্য মূলধন উপাদানের ২৫ শতাংশ এবং সমন্বিত ভিত্তিতে বিবেচ্য মূলধন উপাদানের ৫০ শতাংশ কম হতে হবে। তারল্য সুবিধা গ্রহণের পরও বর্ণিত বিনিয়োগসীমা পরিপালন করতে হবে।
এই সুবিধায় পাওয়া অর্থ ব্যাংক নিজস্ব পোর্টফোলিওতে সরাসরি বিনিয়োগ অথবা সাবসিডিয়ারি কম্পানিকে বিনিয়োগের জন্য ঋণ দিতে পারবে। এই তারল্য বিনিয়োগের জন্য ব্যাংক ও সাবসিডিয়ারিকে পৃথক বিও হিসাব খুলতে হবে।
তারল্য সুবিধা গ্রহণের অর্থের পরিমাণ উল্লেখপূর্বক ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদন ও সদ্য খোলা বিও হিসাবের প্রমাণপত্রসহ মহাব্যবস্থাপক, ডিপার্টমেন্ট অব অফ-সাইট সুপারভিশন, বাংলাদেশ ব্যাংক বরাবর আবেদন করতে হবে। প্রদানযোগ্য তারল্য সুবিধার পরিমাণের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হবে।
স্টকমার্কেটবিডি.কম/জেড