স্টকমার্কেটবিডি প্রতিবেদক :
২০১৮-১৯ অর্থবছরে বাংলাদেশে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হতে পারে বলে মনে করছে বিশ্ব ব্যাংক। বিশ্ব ব্যাংকের ‘বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেট’ প্রতিবেদনে এই প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার(২ অক্টোবর) বিশ্ব ব্যাংকের ঢাকা অফিসে এই প্রতিবেদন তুলে ধরেন বাংলাদেশে বিশ্ব ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন।
বাংলাদেশে বিশ্ব ব্যাংকের প্রধান জানান, বাংলাদেশ দ্রুত উন্নয়ন করছে। উন্নয়ন ধরে রাখতে সংস্কারমূলক পদক্ষেপ নিতে হবে। রফতানি ও রেমিটেন্সে প্রবৃদ্ধি যেন কমে না যায়, সেদিকে নজর রাখতে হবে। বিশ্বের ১০টি উদীয়মান দেশের মধ্যে বাংলাদেশ একটি। এজন্য শিক্ষা, প্রযুক্তি, মানবসম্পদ উন্নয়নে মনোযোগী হতে হবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, অভ্যন্তরীণ চাহিদা বৃদ্ধি, বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং রফতানি ও রেমিটেন্সের ইতিবাচক ধারায় বছর শেষে এই ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হবে।
প্রসঙ্গত, এই অর্থবছরের বাজেটে ৭ দশমিক ৮ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এর আগে সেপ্টেম্বরের শেষে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ এবছর ৭ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি পেতে পারে।
জাহিদ হোসেন বলেন, ‘গত কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশ ভালো প্রবৃদ্ধি অর্জন করছে। আগামীতেও এই ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আমরা মনে করি। তবে আর্থিক খাতে বেশ কিছু সংস্কার করতে হবে। এর মধ্যে ব্যাংক খাতের বিশাল অঙ্কের খেলাপি ঋণ আদায়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। মেগা প্রকল্পের কাজ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ করতে হবে।’ তিনি উল্লেখ করেন, ‘আমাদের জিডিপির পরিমাণ ৭ বা ৬ শতাংশ বড় কথা নয়, আমাদের গ্রোথ ধরে রাখতে হবে। মূল্যস্ফীতি কিছুটা নিম্নগামী, এটা ধরে রাখতে হবে।’
এদিকে, সরকারের গৃহীত বিভিন্ন মেগা প্রজেক্টের গুণগত মান ও খরচ নিয়ে প্রশ্ন আছে বলেও জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক। ভবিষ্যতে এসব প্রকল্প থেকে কী ধরনের অর্থনৈতিক সুফল আসবে, তা নিয়ে চূড়ান্ত কোনও হিসাব এখনও করা হয়নি।
প্রতিবেদনে খেলাপি ঋণের কারণে আগামী বাজেটে চাপ আসবে বলে সতর্ক করেছে বিশ্বব্যাংক। একইসঙ্গে বাজেটে চাপ মোকাবিলায় আর্থিক খাত সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছে সংস্থাটি।
বিশ্বব্যাংকের তথ্য মতে, বাংলাদেশে মূলধন ঘাটতি মোকাবিলায় ব্যাংক ঋণের সুদহার কমানো, সঞ্চয়পত্রের সুদহার কমানো ও রাজস্ব ব্যবস্থায় প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে। একইসঙ্গে রেমিটেন্স ধরে রাখতে হবে, যেটা গত কয়েক বছর কিছুটা কমে গেছে। এছাড়া রফতানি ও ব্যক্তি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে যেসব বাধা আছে তা দূর করতে হবে।
বিশ্বব্যাংক বলছে, অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য বিদ্যুৎ খাতে জোর দিতে হবে। এক হিসাবে বিশ্বব্যাংক জানায়, ২০১১-২০১৭ সাল পর্যন্ত ৪৭ শতাংশ মানুষ নতুন করে বিদ্যুতের আওতায় এসেছে। এ সময়ের মধ্যে বিদ্যুতের উৎপাদন বেড়েছে ৮০ শতাংশ। ২০৩০ সালের বিদ্যুতের চাহিদা মোকাবিলায় এখন থেকেই উৎপাদন দ্বিগুণ করতে হবে।
বিশ্ব ব্যাংকের প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে ঢাকায় সংস্থার আবাসিক প্রতিনিধি চিমিয়াও ফান ছাড়াও বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর এবং পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের (পিপিআরসি) চেয়ারম্যান হোসেন জিল্লুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
স্টকমার্কেটবিডি.কম/বি