বাংলাদেশের ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক ঋণের তথ্য জানতে চায় সৌদি

স্টকমার্কেটবিডি ডেস্ক :

প্রকল্পে অর্থায়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক ঋণের তথ্য চায় সৌদি আরব। এ-সংক্রান্ত তথ্য বিনিময়ের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে ভবিষ্যতে একটি চুক্তির প্রস্তাবও দিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাবশালী দেশটি। তবে এ বিষয়ে নেতিবাচক মত দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি বলছে, কোনো রাষ্ট্রের কাছে এ ধরনের ঋণের তথ্য বিনিময়ের বিষয়টি বেআইনি।

সূত্র জানান, যোগাযোগ অবকাঠামো নির্মাণ, বিদ্যুৎ-জ্বালানিসহ বড় বড় প্রকল্পে সৌদি আরবের কাছে ৩৫ বিলিয়ন বা ৩ হাজার ৫০০ কোটি ডলারের ঋণ সহায়তা চেয়েছে বাংলাদেশ। এ ধরনের বড় প্রকল্পে অর্থায়নের আগে ওই প্রকল্পে যেসব ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যুক্ত থাকবে তাদের ঋণ সক্ষমতা সম্পর্কে তথ্য পেতে এ প্রস্তাব দেওয়া হয় সৌদি আরবের পক্ষ থেকে।

জানা গেছে, বাংলাদেশে বেশ কয়েকটি প্রকল্পে সৌদি উন্নয়ন তহবিলের অর্থায়ন আছে। নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীর ওপর সেতু নির্মাণে ৩৩২ কোটি টাকার ঋণ সহায়তা দিয়েছে এসডিএফ। গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে তিস্তা নদীর ওপর সেতু নির্মাণে ৫ কোটি ডলার দিয়েছে সৌদি আরব। শিকলবাহা ২২৫ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মিত হয়েছে সৌদি তহবিলে। তবে এসব প্রকল্পে সৌদি ঋণের পরিমাণ ছিল স্বল্প।

প্রতিষ্ঠানের ঋণের তথ্য দিতে হবে। সূত্রগুলো জানান, গত ফেব্রুয়ারিতে দুই দেশের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে ঢাকায় অনুষ্ঠিত যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের (জেইসি) সভায় সৌদি আরব ঋণসংক্রান্ত তথ্য বিনিময়ের ইস্যুটি গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরে। এরপর বিষয়টি নিয়ে বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) পক্ষ থেকেও সুপারিশ জানানো হয় বিদেশি বিনিয়োগের স্বার্থে যাতে গ্রাহক বা প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে ব্যাংক ঋণের তথ্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়; এমনকি এ-সংক্রান্ত ব্যাংক কোম্পানি আইনের আর্টিক্যাল ৪৫(২) ও ৪৬ (৩) পরিবর্তনের বিষয়েও সুপারিশ জানায় বিডা।

সৌদি আরবের এ প্রস্তাবের বিষয়ে সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো মতামতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকের তথ্য সংরক্ষণের গোপনীয়তার বিধান আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। আইনের বাইরে কোনোভাবেই এ ধরনের তথ্য বিনিময়ের সুযোগ নেই। মতামতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের উন্নয়নে এ দেশের প্রকল্পগুলোয় সৌদি উন্নয়ন তহবিলের অর্থ সহায়তার বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ পরিপ্রেক্ষিতে সৌদি অর্থায়নে গৃহীত কোনো প্রকল্পে যুক্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ঋণের তথ্য জাতীয় স্বার্থে দেশের ভিতরে আলোচনা করা যেতে পারে। কিন্তু সীমান্তের বাইরে ঋণের তথ্য বিনিময় করা বেআইনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা বিনিয়োগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক জগন্নাথ চন্দ্র ঘোষ বলেন, ‘ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে কেস টু কেস ভিত্তিতে ঋণের তথ্য চাইলে দেওয়া হয়। এর বাইরে আর কাউকে গ্রাহকের ঋণসংক্রান্ত তথ্য দেওয়ার বিষয়টি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আইন সাপোর্ট করে না। অবশ্য তারা (সৌদি) যদি প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণ প্রদানসংক্রান্ত কোনো তথ্য চায় সে বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের ইন্টারনাল ক্রেডিট রিস্ক বেইজড ইনফরমেশন রয়েছে। সেখান থেকে তথ্য নিতে পারে। কিন্তু এর বাইরে গ্রাহকের বা প্রতিষ্ঠানের ঋণের তথ্য দেওয়ার সুযোগ নেই।’ বাংলাদেশি প্রকল্পে সৌদি বিনিয়োগের বিষয়টি সমন্বয় করছে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)।

সংশ্লিষ্ট বিভাগের যুগ্মসচিব (মধ্যপ্রাচ্য) এ কে এম শাহাবুদ্দিন এ বিষয়ে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘সৌদি আরব আসলে গ্রাহকের ঋণবিষয়ক তথ্য নয়, তারা বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এ দেশের ঋণ প্রদান প্রক্রিয়া সম্পর্কে অভিজ্ঞতা নিতে চায়। সূত্র : বিডি প্রতিদিন

স্টকমার্কেটবিডি.কম/বিএ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *