শেয়ারবাজার উন্নয়নে এনবিআরকে ডিএসইর একগুচ্ছ প্রস্তাব

dseস্টকমার্কেটবিডি প্রতিবেদক:

দেশের শেয়ারবাজারের উন্নয়নে আসন্ন বাজেটে করণীয় নিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) একগুচ্ছ প্রস্তাব দিয়েছে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক একচেঞ্জে (ডিএসই)।

এসবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: ডি-মিউচ্যুয়ালাইজড এক্সচেঞ্জের কর অবকাশ সুবিধা বৃদ্ধি করা, করমুক্ত আয় ও করমুক্ত ডিভিডেন্ড আয়ের পরিমাণ বাড়ানো, বহুজাতিক কোম্পানি ও স্থানীয় ব্লু-চিপ কোম্পানিগুলো এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্তকরণে আরও অধিকতর উৎসহিত করতে তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির করের ব্যবধান বাড়ানো ইত্যাদি।

মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) এনবিআরের কার্যালয়ে ডিএসইর পক্ষ থেকে পাঠানো বাজেট প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন পরবর্তী স্টক এক্সচেঞ্জকে প্রচলিত নিয়মে পূর্ণ কর অব্যাহতির পরিবর্তে ২০১৪-১৫ অর্থবছর হতে ৫ (পাঁচ) বছর মেয়াদী ক্রমহ্রাসমান হারে কর অবকাশ সুবিধা দেয়া হয়। তবে সরকার দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার জন্য স্টক এক্সচেঞ্জের আবেদনের প্রেক্ষিতে দ্বিতীয় বৎসরও পূর্ণ কর অবকাশ প্রদান করেন।

উল্লেখ্য, আয়কর ধারা ৫৩ বিবিবি, ৫৩এম, ডিভিডেন্ড ট্যাক্স এবং বিও অ্যাকাউন্ট চার্জ ইত্যাদি বাবদ সরকার ২০১৭-১৮ অর্থ বৎসরে প্রায় ৩৭৭ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছে। অন্যদিকে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ২০১৭-১৮ অর্থবছরে মাত্র ৭৭ কোটি টাকা লেনদেন ফি আয় করে যা সরকারি কোষাগারে জমাকৃত করের মাত্র ২০ (বিশ) শতাংশ। লেনদেন ২৫০০ কোটি টাকায় উন্নীত হলে এ সকল খাত হতে সরকার বাৎসরিক ১০০০ কোটি টাকার বেশী রাজস্ব আয় করবে (বিবরনী সংযুক্ত)। অর্থাৎ এক্সচেঞ্জ এর আয়ের উপর করের পরিবর্তে ট্রেড বৃদ্ধির মাধ্যমে সরকার অধিকতর লাভবান হতে পারে ।

ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশনের পূর্বে এক্সচেঞ্জের আয় করমুক্ত ছিল। এখন যদি আয়কর আরোপ করা হয় তবে সরকার, এক্সচেঞ্জসমূহসহ দেশের সকল বিনিয়োগকারী প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে, যা নিম্নে উপস্থাপিত হলো:

১। বর্তমানে ডিএসই পরিচালন ক্ষতির সম্মুখীন। এমতাবস্থায়, এক্সচেঞ্জ-এর আয়ের উপর যদি কর আরোপ করা হয় সেক্ষেত্রে এক্সচেঞ্জ তার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার স্বার্থে লেনদেন ফি’র হার বাড়িয়ে দিতে বাধ্য হবে, যা প্রকারান্তে সাধারণ বিনিয়োগকারীর উপরই বর্তাবে। ফলতঃ বর্তমান প্রেক্ষাপটে শেয়ারবাজারের উপর বিরূপ প্রভাব পড়বে যা শিল্প ও বাণিজ্যিক উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করবে।

২। করের কারণে লেনদেন ফি বাড়িয়ে দিলে ট্রেডের পরিমাণ ব্যাপক হারে হ্রাস পাবে, ফলশ্রুতিতে এই খাতেও প্রচুর রাজস্ব হ্রাস পাবে।

৩। ডিএসই ২০১৭-১৮ অর্থবছরে শুধুমাত্র ৬ কোটি টাকা নেট পরিচালন মুনাফা করেছে, সুতরাং এখনই যদি আবার এই আয়ের ওপর করারোপ করা হয় সেক্ষেত্রে স্টক এক্সচেঞ্জ অতি শীঘ্রই পরিচালন মূলধনের ঘাটতির সম্মুখীন হবে, যা সরকারের ডিমিউচ্যুয়ালাইজড্ এক্সচেঞ্জ-এর সফলতার ব্যাপারে ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ও স্বদিচ্ছার ব্যাত্যয় ঘটাবে বলে প্রতীয়মান হয়।

৪। বর্তমানে দেশের প্রায় ১ কোটি লোক প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে শেয়ারবাজারগুলোর ওপর নির্ভর করে জীবিকা নির্বাহ করছে। এমতাবস্থায়, দেশে স্বচ্ছ ও স্থিতিশীল শেয়ারবাজার গঠনের জন্য উপরোক্ত বিষয়ের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেড পরবর্তী তিন অর্থবছর (২০১৬-১৭, ২০১৭-১৮, ২০১৮-১৯) -এর জন্য পূর্ণাঙ্গ কর অবকাশ প্রাপ্তির ন্যায্য দাবীদার।

স্টকমার্কেটবিডি.কম/এম

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *