বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, বালু, তুরাগ ও দেশের গুরুত্বপূর্ণ অন্যান্য নদ-নদীর নাব্যতা এবং নদীর স্বাভাবিক গতিপ্রবাহ অব্যাহত রাখা সংক্রান্ত টাস্কফোর্সের ৩৭তম সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, ঢাকাসহ সব মহানগরীর শিল্প কারখানাগুলো বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে স্থানান্তর করবে সরকার।
আজ রবিবার সচিবালয়ে এক সভা শেষে টাস্কফোর্সর প্রধান নৌমন্ত্রী শাজাহান খান সাংবাদিকদের বলেন, “ঢাকাসহ আটটি বিভাগে বড় বড় শহরে যেখানে শিল্পাঞ্চল আছে সেখানে যাতে নতুন করে কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে না পারে সে ব্যাপারে আমরা নির্দেশনা দিচ্ছি।
“যে শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো শহরের মধ্যে আছে সেগুলোকে ইকনোমিক জোনগুলোতে (বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল) নিয়ে যাব, ১১০টি ইকনোমিক জোন রয়েছে। ঢাকাসহ সব মহানগরীর শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোকে অর্থনৈতিক জোনে যেতে হবে, যেভাবে হাজারিবাগ থেকে ট্যানারি সাভারে নিয়ে গেছি।”
প্রায় পাঁচ দশকের টানাপড়েন ও আইনি লড়াইয়ের পর ঢাকার হাজারীবাগ থেকে চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানাগুলো সাভারের চামড়া শিল্প নগরীতে স্থানান্তরের কাজ শুরু হয় গতবছর। গত নবেম্বরের তথ্য অনুযায়ী, ৩৫ শতাংশ ট্যানারি সাভারে চামড়া শিল্প নগরীতে স্থানান্তরিত হয়েছে।
সাভার চামড়া শিল্প নগরীতে ইপিটি সমস্যার সমাধানে শিল্প মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলেও জানান নৌমন্ত্রী।
“ইটিপির কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত যেন যারা কাজ করছে তাদের বিল না নেওয়া হয় সে বিষয়ে আমরা নির্দেশনা দিয়েছি।”
ঢাকার চারপাশের নদীগুলোতে স্থাপিত পিলারের মধ্যে এক হাজার ১৫৪টি নিয়ে আপত্তি পাওয়ার কথা জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, পুনঃজরিপ করে ৭৬২টি পিলার পুনঃস্থাপন করা হয়েছে, বাকিগুলোও করা হবে।
“জরিপ কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত নদীর তীরে কেউ যাতে কোনো স্থাপনা নির্মাণ করতে না পারে সেজন্য জেলা প্রশাসকদের নির্দেশনা দেওয়া হবে।”
যারা নদী দখল-দুষণ করছে তারা আইন মেনে না চললে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে তাদের জেল-জরিমানা করা হবে বলে জানান নৌমন্ত্রী।
তিনি বলেন, নদীর তীর অবৈধ দখলমুক্ত করতে বিআইডব্লিউটিএর অধীনে কিছু লোক নিয়োগ দেওয়া হবে, যাতে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ চালানো যায়।
ঢাকার ১৩টি খাল উদ্ধারে কাজ শুরুর কথা জানিয়ে নৌমন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে কিছু কাজ শেষ হয়েছে। কিন্তু দেখা গেছে, অভিযানের পরেও নতুন করে খালগুলোকে ভরাট করে বিভিন্ন কাজে লাগানো হচ্ছে।
“আমরা টাস্কফোর্স কমিটির মন্ত্রী এবং কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে পরিদর্শন করব।… টিমের সঙ্গে ম্যাজিস্ট্রেট থাকবে, খালগুলোকে উদ্ধারে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
সভায় উপস্থিত ছিলেন ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ, পরিবেশ ও বনমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ; বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু ছাড়াও টাস্কফোর্সর সদস্যরা ।
স্টকমার্কেটবিডি.কম/এমএম