বাংলাদেশের উৎপাদন প্রতিযোগিতায় সর্বোচ্চ সুযোগ-সুবিধা পেতে ভারত থেকে অভিজ্ঞতা স্থানান্তর এবং বাইল্যাটেরায়াল ভ্যালু চেইন ইনেশেটিভ (বিভিসিআই)-এর বিষয় তুলে ধরে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এফবিসিসিআই) সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম নবনিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনার (এইচসি) বিক্রম কে দুরাইস্বামীর সঙ্গে এক যোগে কাজ করে আগামী দিনগুলিতে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্ক আরো মজবুত করতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করেন।
ভারতের হাই কমিশনার মতিঝিল ৬০-এ নতুন সংস্কারকৃত এফবিসিসিআই আইকন পরিদর্শনকালে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশি রপ্তানি, অটোমোবাইল, মোটরবাইক উপাদান উৎপাদন, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং, কোয়ান্টাম ইন্টারনেট, স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম, সাইবারসিকিউরিটি, স্কিল, ডিজিটাল সরঞ্জামসমূহের গবেষণা, উন্নয়ন ও উৎপাদন এবং যৌথ উদ্যোগের মাধ্যমে ভারতের অংশীদারি সমৃদ্ধি অর্জনের একটি সেরা উপায়।’
পরিদর্শনকালে এফবিসিসিআই সভাপতি হাই কমিশনারের সঙ্গে শেখ হাসিনার প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নে এফবিসিসিআইয়ের ভূমিকা ও ফেডারেশনের প্রথম বছরে টেকসইকে অগ্রাধিকার দেওয়া এবং পরের দুই বছরে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে ফ্রন্টলাইনার হিসেবে দেশীয় ও বৈশ্বিক কৌশলগত অংশীদারদের সঙ্গে ফেডারেশনের সক্ষতার কথা তুলে ধরেন। এছাড়া কভিড ১৯-এর সময় খাদ্য কর্মসূচি, ত্রাণ তহবিল, স্বাস্থ্যসেবা পণ্য, দেশের বেসরকারি খাতের পক্ষ থেকে এফবিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে সামাজিক প্রচেষ্টার কথাও তুলে ধরেন।
তিনি হাই কমিশনারের কাছে এফবিসিসিআিই ইমপ্যাক্ট ৪.০ সম্পর্কে অবহিত করেন, যার মধ্যে আছে এফবিসিসিআই এডিআর সেন্টার, টেক সেন্টার, স্কিল ল্যাব, এফবিসিসিআই ইনস্টিটিউট, এফবিসিসিআই ইউনিভাসির্টি, ইকোনমিক অ্যান্ড অ্যাপস্নায়েড রিসার্চ সেন্টার, মাল্টিপারপাস ওয়ার্কশপ/সেমিনার/স্কিলস অডিটোরিয়াম ও বিশ্বব্যাপী ফেডারেশনের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও আমাদের দেশের বেসরকারি খাতের শীর্ষ স্থানীয় সংস্থাগুলো এলডিসি-র বর্ধিত সুবিধাসমূহ, এসডিজি ২০৩০ এবং ভিশন ২০৪১ বাস্তবায়নের রোডম্যাপ ইত্যাদি।
তিনি বলেন, ‘অনেক ভারতীয় প্রতিষ্ঠান আমাদের ইমপ্যাক্ট ৪.০ উদ্যোগে এফবিসিসিআইয়ের সঙ্গে প্রাতিষ্ঠানিক অংশীদারিত্বে কাজ করতে পারে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের দুই দেশের মতো ঐতিহ্য এবং মানবতার অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক আর কোনো দেশে নেই। বাণিজ্য-সম্পর্কিত সমস্যাগুলো মোকাবেলায় আমরা নিবিড়ভাবে কাজ করব, যা আমাদের মানবতার ঐতিহ্য ও আমাদের নেতৃত্বের পরিপূরক সহযোগিতায় ভিশন বাস্তবায়নের দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।’
এছাড়া বাংলাদেশের রপ্তানি, জয়েন্ট ভেঞ্চার, এবং বিভিন্ন খাতে ভ্যালু চেইন চিহ্নিত করা এবং সে বিষয়ে কাজ করার আশ্বাসও দিয়েছেন শেখ ফজলে ফাহিম, যার মাধ্যমে বাংলাদেশ ও ভারত উভয়ই লাভবান হবে।
অন্যদিকে, বিক্রম কুমার দুরাইস্বামী বলেন, ‘খাদ্যে পর্যাপ্ততা, ভ্যাকসিন উৎপাদন, রিসোর্স জেনারেশন ইত্যাদিতে বাংলাদেশ অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছে। দুই দেশের মধ্যে প্রধান রাজনৈতিক সমস্যা সমাধান হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা দুই দেশের সম্পর্ককে আরো সুদৃঢ করতে অর্থনৈতিক সহযোগিতায় আরো বড় অংশীদারিত্বমূলক কাজে এগিয়ে যেতে পারি।’
এছাড়া দুরাইস্বামী গার্মেন্ট, কৃষি ব্যবসা, এপিআই, ফার্মাসিউটিক্যালস, অটোমোবাইল, পরিবেশ বান্ধব পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ইত্যাদির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জন্য ভারতের সহযোগিতার কথা তুলে ধরেন।
তিনি বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বাণিজ্য সুবিধার্থে নৌপথ ও রেলপথের সরাসরি সংযোগের কথাও উল্লেখ করেন।
এ সময় এফবিসিসিআইয়ের সহ সভাপতি মো. রেজাউল কারিম রেজনু সিআইপি, পরিচালক সুজিব রঞ্জন দাশ, মো. মুনির হোসেন, ভারতের ডেপুটি হাই কমিশনার বিশ্বদ্বীপ দে, বাণিজ্য কর্মকর্তা প্রমেশ বাসাল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
স্টকমার্কেটবিডি.কম/