শেয়ারবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ কম। আর এই বিদেশি বিনিয়োগ আনতে না পারা আমাদের ব্যর্থতা বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেন।
শনিবার (১৬ জুলাই) রাজধানীর মতিঝিলের মধুমিতা ভবনে ডিএসই ব্রোকারস এসোসিয়েশনের (ডিবিএ) নতুন অফিসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
এসময় তিনি বলেন, যুক্তরাজ্যের গণভোট বেক্সিটের পক্ষে যাওয়ায় চাপে পড়েছিল ভারতের শেয়ারবাজার। পরের দিনই ভারতের সূচক কমে ১০০০ পয়েন্ট। কিন্তু আমাদের উপর সে প্রভাব পড়েনি। এটা মোটেই খুশির কথা নয়।
তিনি জানান, আমাদের শেয়ারবাজারে বেক্সিটের প্রভাব না পরার কারণ, আমাদের বিদেশি বিনিয়োগকারী কম। আমরা বিদেশি বিনিয়োগ আনতে ব্যর্থ হচ্ছি।
এসময় তিনি বলেন, নতুন কোম্পানির আইপিও অনুমোদনের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা বেড়েছে। পাশাপাশি কোম্পানিগুলোকে আগের মতো আর জটিলতায় পড়তে হচ্ছে না। যা আগে ব্যাপক ছিল।
খায়রুল হোসেন বলেন, একটি শক্তিশালী শেয়ারবাজার গঠনের লক্ষে বিএসইসি নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এর অংশ হিসাবে পাবলিক ইস্যু রুলস-২০১৫ গঠন করা হয়েছে। এতে শেয়ারবাজারে আসতে হলে কোম্পানিগুলোকে অনেক বেশি তথ্য প্রদান করতে হয়। যাতে অনেক স্বচ্ছতা এসে গেছে।
এসময় শেয়ারবাজারের উন্নয়নে ডিবিএ’র কর্মকান্ডে স্বচ্ছতা ও বিনিয়োগকারীদের সাথে দূরত্ব কমিয়ে আনার আহবান করেন খায়রুল হোসেন। এছাড়া প্রত্যেকটি ব্রোকারেজ হাউজে গুজব ছড়িয়ে বিনিয়োগকারীদেরকে প্রভাবিত করা বন্ধ করার আহবান করেন।
খায়রুল হোসেন বলেন, শেয়ারবাজারের স্বার্থে অনেক সংস্কার করা হয়েছে এবং আরো সংস্কার দরকার আছে। তবে সংস্কারের কারনে কারো কাজে সমস্যা হলে তা সমাধান করা হবে।
এদিকে স্টক এক্সচেঞ্জের জন্য আগামি ডিসেম্বরে স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার আনার সময় শেষ হয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন খায়রুল হোসেন। কিন্তু ডিসেম্বরে এসে যদি সময় বাড়ানোর দাবি করা হলে, তা পুরো মার্কেটের জন্য দুঃসংবাদ হবে। এক্ষেত্রে সময় চাইলে হয়তো বাড়ানো হবে। তবে এই পার্টনার পাওয়ার জন্য স্টক এক্সচেঞ্জ যে কাজ করছে তা দেখাতে হবে।
কমিশনার অধ্যাপক স্বপন কুমার বালা বলেন, শেয়ারবাজারে ডিমিউচুয়ালাইজেশন পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে পারবে। বাজারের স্বার্থে ডিবিএ মার্কেট মেকিং রুল ও পলিসিগত বিষয়ে কাজ করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন ।
ডিবিএ’র প্রেসিডেন্ট আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, আগামী তিন মাসের মধ্যে সংগঠনটির নির্বাচন হবে। এই নির্বাচনে নতুন নেতৃত্ব উঠে আসবে। এর পর কমিশনের নেতৃত্বে সারা দেশে বিনিয়োগকারীদের আর্থিক শিক্ষাপ্রদান করা হবে।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) নতুন এমডি একেএম মাজেদুর রহমান বলেন, অর্থনীতির সঙ্গে শেয়ারবাজার অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। এতেদিন অর্থনীতির ব্যাংক সেক্টরে কাজ করেছি এখন শেয়াবাজার নিয়ে কাজ করবো। এটি আমার জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ এবং আমি সব সময় চ্যালেঞ্জিং কাজ করতে ভালোবাসি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে বিএসইসি’র চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেন ও সভাপতি হিসাবে ডিবিএ’র প্রেসিডেন্ট আহসানুল ইসলাম টিটু উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া বিএসইসি’র কমিশনার অধ্যাপক স্বপন কুমার বালা, সালাম শিকদার, ডিএসই’র চেয়ারম্যান বিচারপতি সিদ্দিকুর রহমান মিয়া, ব্যবস্থাপনা পরিচালক একেএম মাজেদুর রহমান, বিএসইসি-ডিএসই-সিএসইসির পরিচালকবৃন্দ ও ডিবিএ’র সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
স্টকমার্কেটবিডি.কম/এম