অর্থ উদ্ধারে এপ্রিলে আরসিবিসির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে মামলা করবে বাংলাদেশ ব্যাংক

bbস্টকমার্কেটবিডি প্রতিবেদক :

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে চুরি হওয়া অর্থ উদ্ধারে ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশনের (আরসিবিসি) বিরুদ্ধে আগামী মাসে যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে মামলা করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক, নিউইয়র্ক ও সুইফটকে নিয়ে যৌথভাবে এ মামলা করা হবে।

রবিবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

মামলার প্রস্তুতি পর্যালোচনার জন্য ডাকা এ বৈঠকে অর্থমন্ত্রী সভাপতিত্ব করেন। বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব ইউনুসুর রহমানসহ অ্যাটর্নি জেনারেল অফিস, সিআইডি ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি নিউইয়র্ক ফেডে থাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে হ্যাকাররা ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি করে। এর মধ্যে শ্রীলংকায় যাওয়া দুই কোটি ডলার উত্তোলনের আগেই আটকানো সম্ভব হয়। তবে ফিলিপাইনের আরসিবিসি ব্যাংকে যাওয়া ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার অপরাধীরা তুলে নেয়। শুধু অর্থ চুরির জন্য আরসিবিসিতে বেনামে অ্যাকাউন্ট খোলা হয়।

চুরির অর্থ ম্যানিলার বিভিন্ন ক্যাসিনোর জুয়ার আসরে ব্যবহারের তথ্য পায় ফিলিপাইনের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পুরো ঘটনায় আরসিবিসির ভূমিকা ছিল সন্দেহজনক এবং এ ঘটনায় এরই মধ্যে ব্যাংকটিকে সে দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক বড় অঙ্কের জরিমানা করেছে। তবে আরসিবিসি সবসময়ই এ অপরাধে তাদের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করেছে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, অর্থ ফেরত আনতে মামলার বিষয় নিয়ে তারা আলোচনা করেছেন। আগামী মাসে নিউইয়র্কের আদালতে এ মামলা করা হবে। এ জন্য সিআইডিকে প্রয়োজনীয় তথ্য দিতে বলা হয়েছে।

মামলা করার জন্য কোনো ফার্ম নিয়োগ দেওয়া হয়েছে কি-না জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘নিয়োগ দেওয়া হয়নি। তবে আমেরিকার একটি ফার্মকে নিয়োগ দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।’

মুহিত জানান, এ মামলায় নিউইয়র্ক ফেডকে ‘পার্টি’ করা হবে। তারা পার্টি হতে রাজি হয়েছে কি-না জানতে চাইলে মুহিত বলেন, ‘না’। তবে এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক যোগাযোগ করছে।

বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, মামলা করার জন্য প্রস্তুত তারা। তবে সিআইডির তদন্ত প্রতিবেদন না পেলে সময়মতো মামলা করা যাবে না। বৈঠকে সিআইডি প্রতিনিধি বলেছে, এপ্রিলের মধ্যে এ প্রতিবেদন সিআইডির পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয়। তাদের আরও সময় লাগবে। কেননা মামলার তদন্তের জন্য ফিলিপাইন, চীন, উত্তর কোরিয়াসহ বিভিন্ন দেশে তথ্য চেয়ে চিঠি দিলেও ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না।

বৈঠক সূত্র জানায়, তথ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে প্রয়োজনে কূটনৈতিক তৎপরতা কাজে লাগানোর অনুরোধ করা হয়েছে সিআইডির পক্ষ থেকে।

বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, ‘অর্থ ফেরত আনতে মামলা অবশ্যই করা হবে। তবে কীভাবে মামলা করা হবে, তা নিয়ে আরও আলোচনা করতে হবে।’

চার্জশিট যাতে দ্রুত দেওয়া যায়, সে বিষয়ে সিআইডি গুরুত্বের সঙ্গে কাজ করছে বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

স্টকমার্কেটবিডি.কম/এসটি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *