আবারও নীতি সুদহার বাড়াল যুক্তরাষ্ট্র

স্টকমার্কেটবিডি ডেস্ক :

এ সপ্তাহেই বিশ্বব্যাংক বলল, মূল্যস্ফীতি মোকাবিলায় বিশ্বের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো যেভাবে নীতি সুদহার বৃদ্ধি করছে, তাতে আগামী বছর বিশ্বে মন্দার আশঙ্কা আছে। সেই পূর্বাভাসের রেশ কাটতে না কাটতেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ আবারও নীতি সুদহার বৃদ্ধির ঘোষণা দিল।

এবার একধাক্কায় শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশীয় পয়েন্ট হারে নীতি সুদহার বৃদ্ধি করেছে ফেডারেল রিজার্ভ। এ নিয়ে চলতি বছর মোট পাঁচবার নীতি সুদহার বৃদ্ধি করল বিশ্বের শীর্ষ পর্যায়ের অর্থনীতির দেশটি। ফেডারেল রিজার্ভ যে ব্যবস্থা নিয়েছে, সেটিকে এভাবে ব্যাখ্যা করা যায়: মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে যা যা করা দরকার সবই করা হবে, তাতে মন্দা দেখা দিলেও কিছু আসে–যায় না।

ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েল নীতি সুদহার বৃদ্ধির ঘোষণায় বলেন, ‘মূল্যস্ফীতির রাশ টানতে হবে আমাদের। তবে আমরা যদি নির্বিঘ্নে এ কাজ করতে পারতাম, তাহলে ভালো হতো। কিন্তু নির্বিঘ্নে করার জো নেই।’

বিশ্বের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর অন্যতম প্রধান কাজ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখা। যখন কোনো দেশে মূল্যস্ফীতির হার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, তখন অর্থপ্রবাহের রাশ টানা হয়। আর সেটি করতে গিয়ে বাড়ানো হয় নীতি সুদহার। অর্থাৎ কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে যে হারে ঋণ দেয়, তা কিছুটা বাড়িয়ে দেয়। তাতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ঋণের খরচ বেড়ে যায়।

এতে মানুষ ঋণ গ্রহণে নিরুৎসাহিত হন। যাঁদের নিতান্ত প্রয়োজন, তাঁরা ছাড়া অন্য কেউ সাধারণত ঋণ নিতে আগ্রহী হন না।Ñএতে বাজারে চাহিদায় ভাটা পড়ে, মূল্যস্ফীতিও নিয়ন্ত্রণে আসে।

ফেডারেল রিজার্ভের নীতি সুদহারের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ৩ থেকে ৩ দশমিক ২৫ শতাংশ। তবে এখন তারা বলছে, চলতি বছর তা ৪ শতাংশ অতিক্রম করে যেতে পারে।

তবে এবারের মূল্যস্ফীতি ঠিক চাহিদা বৃদ্ধির কারণে নয়, এটি ঘটছে মূলত সরবরাহব্যবস্থার কারণে। গত বছরের মাঝামাঝি সময় থেকে বিশ্বের প্রায় সব দেশ থেকে কোভিডজনিত বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করা হয়। তখন হুট করেই চাহিদা অনেকটা বেড়ে যায়। তখন থেকেই মূল্যস্ফীতি বাড়তে শুরু করে, তবে ফেডারেল রিজার্ভ বা বিশ্বের অন্যান্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক তখন মনে করেছিল, এটা সাময়িক। ফলে তারা তখন নীতি সুদহার বৃদ্ধি করেনি।

তবে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে পরিস্থিতির ভয়াবহ অবনতি হয়। সরবরাহব্যবস্থা বিঘ্নিত হওয়ার কারণে বিশ্বের প্রায় সব দেশেই মূল্যস্ফীতি বাড়তে শুরু করে। তখন নিরুপায় হয়ে বিশ্বের প্রায় সব দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক নীতি সুদহার বৃদ্ধি করার পথে হাঁটতে থাকে।

ব্যাংক অব ইংল্যান্ড, ইউরোপিয়ান সেন্ট্রাল ব্যাংক, রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া থেকে শুরু করে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডের মতো দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো নীতি সুদহার কয়েক দফায় বাড়িয়ে দেয়।

স্টকমার্কেটবিডি.কম//

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *