ই-কমার্সে নতুন আইন ও নিয়ন্ত্রক না আনার দাবি ই-ক্যাবের

স্টকমার্কেটবিডি প্রতিবেদক :

দেশের ই-কমার্স সেক্টরের সাম্প্রতিক সময়ে সৃষ্ট নানা সমস্যার পরিপ্রেক্ষিতে নতুন আইন ও নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ সৃষ্টি না করে প্রচলিত আইন সংশোধন ও মনিটরিংয়ের দাবি জানিয়েছে ই-কমার্স ব্যবসায়ীদের সংগঠন ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব)।

ই-ক্যাব নেতারা বলেছেন, ই-কমার্স খাতে ক্রেতার আস্থা ফিরিয়ে আনতে ও কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে উদ্যোক্তাদের নিয়ে সরকারের সঙ্গে একযোগে কাজ করবেন তারা।

সোমবার বিকেলে রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁ হোটেলে মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ই-ক্যাবের কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্যরা। ই-ক্যাবের জেনারেল ম্যানেজার জাহাঙ্গীর আলম শোভনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন সহ-সভাপতি সাহাব উদ্দিন শিপন ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াহেদ তমাল।

মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে ডিজিটাল কমার্স সেলের সক্ষমতা বাড়িয়ে ইউবিআইডি, সেন্ট্রাল কমপ্লেইন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, সেন্ট্রাল লজিস্টিক ট্র্যাকিং প্লাটফর্ম তৈরির মাধ্যমে এই খাতে দীর্ঘস্থায়ী সমাধানের কথা তুলে ধরেন ই-ক্যাব নেতারা। বর্তমানে গেটওয়ে আটকে থাকা অর্থ ছাড়, ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে ৩০ শতাংশ শুল্ক ছাড়সহ অন্যান্য সমস্যার দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য সরকারকে অনুরোধ জানিয়েছে তারা।

ই-ক্যাবের পরিচালক আশীষ চক্রবর্তী বলেন, ‘আমরা জানি ট্রেড অ্যাসোসোসিয়েশন কোনো প্রতিষ্ঠানের আর্থিক হিসাব দেখতে বা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। এক্ষেত্রে যেসব সমস্যা হয়েছে সেগুলো সমাধানের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ও আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা কাজ করছে। ই-ক্যাব থেকেও অনবরত দাবি ও চিঠি দেওয়ার মাধ্যমে বিষয়গুলো কতৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। তাই সকলের উচিৎ পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের জন্য কাজ করা।’

ই-ক্যাবের পরিচালক সাঈদ রহমান বলেন, ‘দুয়েকজনের জন্য পুরো ইকোসিস্টেম ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে না। গ্রাহক ও মার্চেন্টদের শত শত কোটি টাকা আটকে আছে আইনি প্রক্রিয়ার কারণে। এই অবস্থা হয়তো বেশি দিন থাকবেনা। কিন্তু এর কারণে ক্ষতিগ্রস্থ অনেক উদ্যোক্তার ব্যবসা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তাই শুধু নীতি পলিসি নয়, আর্থিক বিনিয়োগ ও ঋণ সুবিধার মাধ্যমে তাদের পাশে থাকা উচিৎ সরকারের।’

এর আগে স্বাগত বক্তব্যে ই-ক্যাবের সহ-সভাপতি সাহাব উদ্দিন শিপন বলেন, ‘ঝুঁকিপূর্ণ ব্যবসা পদ্ধতির কারণে শুধু যে ক্রেতা এবং মার্চেন্টরা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তা নয়; বরং নেতিবাচক বার্তাও ছড়িয়ে পড়েছে। এতে করে এই খাতে যে বিদেশি বিনিয়োগ আসার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে তা এখন অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। যেসব প্রতিষ্ঠান সঠিকভাবে ব্যবসা করছে যাদের সফলতার গল্প আছে সেগুলোও তুলে আনা প্রয়োজন।’

তবে ই-কমার্স নীতিমালা মেনে ব্যবসা পরিচালনা করে ও ক্রেতাদের সঠিক,মানসম্পন্ন সেবা প্রদানের মাধ্যমে ই-কমার্স খাতে ক্রমাগত প্রবৃদ্ধি ফিরিয়ে আনা যাবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

ই-ক্যাবের অর্থ সম্পাদক মোহাম্মদ আব্দুল হক অনু বলেন, ‘এখনও নানা সীমাবদ্ধতার মধ্য দিয়ে এখাতের উদ্যোক্তারা কাজ করছে। ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো এই খাতে বিনিয়োগে অনীহা দেখায়। প্রান্তিক পর্যায়ে সেবা দেয়া এখনো সহজ হয়ে উঠেনি। এসময় এ ধরনের ধাক্কা এ খাতের গতিকে ক্ষতিগ্রস্থ করেছে। কিন্তু যারা সঠিকভাবে ক্রেতাদের সেবা দিতে চায় তারা কিন্তু পিছু হটেনি। আর ক্রেতারাও সেবা গ্রহণ করছে। সঠিক সেবার মাধ্যমে আবার প্রবৃদ্ধির ধারায় ফিরে আনতে আমরা কাজ করে যাব।’

ই-ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াহেদ তমাল, ই-ক্যাবের পরিচালক জিয়া আশরাফ, আসিফ আহনাফ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাসিমা আক্তার নিশাও মিট দ্য প্রেসে ই-কমার্স নানা খাতের নানা সঙ্কট ও সম্ভাবনার কথা বলেন।

স্টকমার্কেটবিডি.কম/আহমেদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *