জনগনের সঞ্চয়কে বিনিয়োগের সুযোগ করে দিতে হবে: বিএসইসির চেয়ারম্যান

স্টকমার্কেটবিডি ডেস্ক :

বাংলাদেশের অর্থনীতি গত দশ বছরে অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। একইসাথে এসময় জনগণের মাথাপিছু আয়ও অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে জনগণের সঞ্চয় বেড়েছে। আর জনগণ এই সঞ্চয়কে বিনিয়োগের জন্য বিভিন্ন খাত খুজছে। শেয়ারবাজারকে এই সুযোগ নিতে হবে। আমাদের দেশের অর্থনীতির সাথে তাল মিলিয়ে শেয়ারবাজারের প্রসার হয়নি। শেয়ারবাজারের থেকে অর্থবাজারের আকার অনেক বেশি। আমরা যদি সরকারি এবং বেসরকারি বিভিন্ন অবকাঠামো এবং শিল্পায়নের জন্য প্রয়োজনীয় মূলধন সরবরাহ করতে পারি তবে শেয়ারবাজারে প্রসারতা বৃদ্ধি পাবে এবং একই সাথে ব্যাংকিং খাতের উপর চাপ কমবে।

গতকাল সোমবার বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম, কমিশনার খোন্দকার কামালুজ্জামান, অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক ড. মোঃ মিজানুর রহমান, মোঃ আব্দুল হালিমসহ ডিএসই নিকুঞ্জ টাওয়ার পরিদর্শনকালে বিএসইসি’র চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন৷

এসময় উপস্থিত ছিলেন ডিএসইর চেয়ারম্যান মোঃ ইউনুসুর রহমান, পরিচালক অধ্যাপক ড. মোঃ মাসুদুর রহমান, ব্রিগেডিয়ার জেনারের মোস্তাফিজুর রহমান, মোঃ মুনতাকিম আশরাফ, হাবিব উল্লাহ বাহার, অধ্যাপক ড. এ. কে. এম. মাসুদ, মোঃ রকিবুর রহমান, মোঃ শাকিল রিজভী, মোহাম্মদ শাহজাহান এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী ছানাউল হক৷

অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিএসইসি’র কমিশনারগণ বক্তব্য রাখেন। তারা বলেন, স্টক এক্সচেঞ্জকে কেন্দ্র করেই শেয়ারবাজারের সব ধরনের কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে স্টক এক্সচেঞ্জের কাছে বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা সব সময়ই বেশি। আমাদের সবার উদ্দেশ্য, শেয়ারবাজারকে সামনের দিকে এগিয়ে নেওয়া। এই লক্ষ্যে বিএসইসি ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ সমন্বিত ভাবে কাজ করে যাচ্ছে৷

তারা আরো বলেন বিনিয়োগকারীগণ শেয়ারবাজারে সুন্দর পরিবেশের অপেক্ষায় আছে৷ যদি বিনিয়োগকারী নিশ্চিত হয় যে, তাদের বিনিয়োগ নিরাপদ ও রিটার্ন আসবে তাহলে সেকেন্ডারি মার্কেট গতিশীল হবে৷ বৈঠকে কমিশনারগণ আরো বলেন, ইকুইটি বেজড কার্যক্রমের বাইরে আমরা বন্ড নিয়ে কাজ করব৷ শিল্পায়নের ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ নিয়ে কাজ করার পরিকল্পনা রয়েছে৷ সর্বোপরি সব ক্ষেত্রেই সুশাসন নিশ্চিত করা হবে৷ চ্যালেঞ্জ অনেক সময় সুযোগ তৈরি করে দেয়৷ এ জন্য স্টেকহোল্ডারদের নিয়ে সমন্বিভভাবে এগিয়ে যেতে চাই৷ রেগুলেটরের কাজ হচ্ছে মূলত ২ পক্ষের ভেতর সমন্বয় গড়ে তোলা৷ সমন্বয় সুনিশ্চিত করনের জন্য আইন কানুন আধুনিকায়ন করতে হবে এবং যারা প্রয়োগ করবেন তাদের আরো বেশি ভূমিকা রাখতে হবে৷

তার আগে ডিএসইর চেয়ারম্যান মোঃ ইউনুসুর রহমান নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান কমিশনারবৃন্দকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, নব্বই দশকের মাঝামাঝি সময় থেকেই শেয়ারবাজারের প্রসারতা বৃদ্ধি পেতে থাকে৷ পুঁজিবাজারের পরিধি বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে মতিঝিল অফিসে সকল সুযোগ সুবিধার সংকুলান না হওয়ায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃপক্ষ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ঢাকায় এক খন্ড প্লট বরাদ্দের আবেদন করেন৷ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুদুরপ্রসারী উন্নয়ন কল্পে এবং আন্তর্জাতিক মানের স্টক এক্সচেঞ্জ হিসাবে দাপ্তরিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে ১৯৯৭ সালে ঢাকার নিকুঞ্জে নাম মাএ মুল্যে ৪ বিঘা জমি বরাদ্দ দেন৷ এই বরাদ্দকৃত জায়গায় ডিএসই’র নিজস্ব অর্থায়নে অত্যাধুনিক সুযোগ সম্বলিত ডিএসই টাওয়ার নির্মিত হয়েছে৷

প্রথমবারের মত নির্মিত ডিএসই টাওয়ারে ঢাকা স্টক একচেঞ্জ অফিস, আপনি এবং আপনার কমিশনারবৃন্দ পরিদর্শনে এসেছেন৷ এজন্য ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পক্ষ থেকে ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী ছানাউল হক আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান৷

বিএসইসি’র নতুন কমিশন দায়িত্ব নেয়ার পর সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার মধ্যে সমন্বয়, সিকিউরিটিজ আইনের প্রয়োগ, আইন লঙ্ঘনকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া, মৌলভিত্তি সম্পন্ন কোম্পানির আইপিও দ্রুত অনুমোদন, প্রশ্নবিদ্ধ আইপিও আবেদন বাতিল, আর্থিক প্রতিবেদনের স্বচ্ছতা নিশ্চিতের পাশাপাশি প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানোর মতো বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। এতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও শেয়ারবাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা বেড়েছে। কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে সারাবিশ্বে শেয়ারবাজার ও অর্থনীতির উপর একটা নেতিবাচক প্রভাব পড়লেও বর্তমান কমিশনের নেতৃত্বে গত আগস্ট ও সেপ্টেম্বর এই দুই মাসে বিশ্বের সেরা শেয়ারবাজারের স্থান দখল করেছে বাংলাদেশ।

তিনি আরও আশা প্রকাশ করেন যে, মাননীয় চেয়ারম্যান ও কমিশনারবৃন্দের দক্ষ নেতৃত্বে আগামীদিনেও শেয়ারবাজারের এই বর্তমান ধারা অব্যাহত থাকবে।

পরে কমিশনের চেয়ারম্যান, কমিশনারবৃন্দ ডিএসই টাওয়ারের বঙ্গবন্ধু কণার, আইসিটি, সিসিবিএল, ব্রোকারেজ হাউস, ডিএসই’র ট্রেনিং একাডেমি, লাইব্রেরী, মালি্টপারপাস হল ও লাউন্স পরিদর্শন করেন৷

স্টকমার্কেটবিডি.কম/এম

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *