ডিএসইর ৩০ ট্রেক অনুমোদন দিল বিএসইসি

স্টকমার্কেটবিডি প্রতিবেদক :

নতুন কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই শেয়ারবাজারের প্রতি সাধারণ বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি, তারল্য সংকট দূর করা ও বাজার সম্প্রসারণ করতে কাজ করছে। শেয়ারবাজারে টাকার প্রভাহ বাড়াতে দেশে ও দেশের বাহিরে শেয়ারবাজারকে ছড়িয়ে দিতে কাজ চলছে। শেয়ারবাজারের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে অবদান বাড়াতে চায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের কমিশন।

জানা গেছে, শেয়ারবাজারকে আরও প্রসারিত করতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ডিজিটাল বুথের অনুমোদন ও শাখা অনুমোদনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি। শেয়ারবাজার সম্প্রসারণের অংশ হিসেবে প্রাথমিক পর্যায়ে ৩০টি ট্রেকের অনুমোদন দিয়েছে বিএসইসি।

অন্যদিকে নতুন ট্রেডিং রাইট এনটাইটেলমেন্ট সার্টিফিকেট (ট্রেক) ইস্যু করতে চায় ডিএসই। এরই অংশ হিসেবে চলতি বছরের ২ ফেব্রুয়ারি ডিএসইর ৯৯০তম পরিচালনা পর্ষদের সভায় ডিএসই সংশ্লিষ্ট আইনসমূহ, স্কীম, বিধিমালা ও প্রবিধানমালার বিধানাবলী মোতাবেক যোগ্যতার ভিত্তিতে ট্রেক দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এর পর প্রত্রিকায় ও ডিএসইর সাইটে আবেদন জমা দেওয়ার বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। প্রথম ধাপে এর মেয়াদ দেওয়া হয় ১৮ মার্চ পর্যন্ত। ওই সময়ে কাঙ্খিত আবেদন জমা না পড়ায় ২৮ মার্চ পর্যন্ত আবেদন গ্রহনের সময় বাড়ানো হয়। এই সময়ে মোট ৬৬টি প্রতিষ্ঠান ট্রেকের জন্য আবেদন করেছে। এর মধ্যে বিভিন্ন কারণে ১৫টি প্রতিষ্ঠানের আবেদন অযোগ্য বলে বাতিল করা হয়। যোগ্য ৫১টি প্রতিষ্ঠানের তালিকা ইতোমধ্যে বিএসইসিতে জমা দেয় ডিএসই। ডিএসইর পাঠানো তালিকা থেকে ৩০টি ট্রেকের অনুমোদন দিয়েছে বিএসইসি। এর আগে ২০২০ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর ট্রেক সংক্রান্ত আইনটি চুড়ান্ত করে কমিশন।

নতুন ট্রেক অনুমোদনের বিষয়ে বিএসইসির কমিশনার অধ্যাপক ড. শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, ট্রেক অনুমোদন একটি চলমান প্রক্রিয়া। প্রাথমিক পর্যায়ে কিছু প্রতিষ্ঠানকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বাকীগুলোর বিষয়ে পর্যায়ক্রমে অনুমোদন দেওয়া হবে।

অনুমোদন পাওয়া ৩০টি ট্রেক হলো- কবির সিকিউরিটিজ,মোনার্ক হোল্ডিংস, সোহেল সিকিউরিটিজ,যমুনা ব্যাংক সিকিউরিটিজ, আরএকে ক্যাপিটাল, স্নিকদা ইক্যুইটিস, ইন্টারন্যাশনাল সিকিউরিটিজ, সাউথ এশিয়া সিকিউরিটজ, ট্রিস্টার সিকিউরিটজ,৩আই সিকিউরিটজ, সোনালী সিকিউরিটজ,কেডিএস শেয়ার অ্যান্ড সিকিউরিটজ,আল হারমাইন সিকিউরিটজ, মির সিকিউরিটজ,টি.কে. শেয়ার অ্যান্ড সিকিউরিটজ,এনআরবি ব্যাংক সিকিউরিটিজ, এসবিএসি ব্যাংক ইনভেস্টমেন্ট, আমায়া সিকিউরিটজ, প্রোটেন্সিয়াল ক্যাপিটাল, তাকাফুল ইসলামি সিকিউরিটজ,বিএনবি সিকিউরিটজ, অগ্রনী ইন্স্যুরেন্স সিকিউরিটজ, মাহিদ সিকিউরিটজ,বারাকা সিকিউরিটজ,এএনসি সিকিউরিটজ, এসএফআইএল সিকিউরিটজ, তাসিয়া সিকিউরিটজ, ডেনিস্টি সিকিউরিটজ,ক্লিসটাল সিকিউরিটজ এবং ট্রেড এক্স সিকিউরিটজ লিমিটেড।

আবেদন করা ৬৬টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বাকী ৩৬টি হলো- আমার সিকিউরিটিজ, বেঙ্গ জিন জিউ টেক্সটাইল,ওয়িংস ফাইন, মিনহার সিকিউরিটিজ, বিপ্লব হোল্ডিং, অ্যাসোসিয়েট ক্যাপিটাল সিকিউরিটিজ, বিরিচ, অ্যাসুরেন্স সিকিউরিটিজ অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট, ব্রিজ স্টক অ্যান্ড ব্রোকারেজ, ফারইস্ট শেয়ার অ্যান্ড সিকিউরিটিজ, কোলম্বিয়া শেয়ার অ্যান্ড সিকিউরিটজ, টি.এ মার্চেন্টডাইজিং,রাহমান ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট,ফারিহা নিট টেক্সটাইল, ট্রাস্ট রিজোনাল ইক্যুইটি, এনসি সিকিউরিটজ,ইসলামিক ফিন্যান্স ইনভেস্টমেন্ট, এমকেএম সিকিউরিটজ, জাপান সোলারটেক (বাংলাদেশ), এন ওয়াই ট্রেডিং, এইচএসবি সিকিউরিটজ, স্মার্ট শেয়ার অ্যান্ড সিকিউরিটজ, ইনোভা সিকিউরিটজ, গিবসন সিকিউরিটজ, সিভিসি সিকিউরিটজ, বি অ্যান্ড বিএসএস ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল, বেসিক ব্যাংক সিকিউরিটিজ, বিনিময় সিকিউরিটজ, রিলিফ এক্সচেঞ্জ, এসকিউ ক্যাবল অ্যান্ড ওয়্যার, ইম্পিরোর সিকিউরিটজ অ্যান্ড ওয়েলথ ম্যানেজমেন্ট মিরপুর সিকিউরিটজ, ম্যাটরিক্স সিকিউরিটজ,এসএমই ইনফরমেটিকস এবং বাংলাদেশ এসএমই কর্পোরেশন এবং ডিপি৭ লিমিটেড।

সূত্র মতে, প্রাথমিক শেয়ারহোল্ডারদের বাইরে ট্রেক পাওয়ার যোগ্যতার শর্তে বলা হয়েছে-কোম্পানি, সংবিধিবদ্ধ সংস্থা বা কমিশন থেকে অনুমোদন পাওয়া দেশী কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ট্রেক নিতে চাইলে তাদের পরিশোধিত মূলধন লাগবে ৫ কোটি টাকা। একই সাথে জামানত হিসেবে রাখতে হবে আরও ৩ কোটি টাকা।

অন্যদিকে বিদেশী কোন প্রতিষ্ঠানের সাথে যৌথভাবে ট্রেক নিতে চাইলে তাদের মূলধন লাগবে ৮ কোটি টাকা। জামানত হিসেবে রাখতে হবে ৪ কোটি টাকা।

বিদেশী প্রতিষ্ঠান এককভাবে নিতে চাইলে তার পরিশোধিত মূলধন লাগবে ১০ কোটি টাকা। জামানত রাখতে হবে ৫ কোটি টাকা।একই সাথে সার্বক্ষনিক নীট সম্পদের পরিমাণ পরিশোধিত মূল ধণের ৭৫ শতাংশের বেশি হবে না।

অন্যদিকে ট্রেক নেওয়ার জন্য ডিএসইতে আবেদন করতে হবে ১ লাখ টাকা দিয়ে। এই টাকা ফেরত পাওয়া যাবে না। কোন প্রতিষ্ঠানের বরাবর ট্রেক ইস্যুর সিদ্ধান্ত হলে তাকে রেজিস্ট্রেশন বাবদ দিতে হবে আরও ৫ লাখ টাকা।

সূত্র মতে, ট্রেক পাওয়ার জন্য এক লাখ টাকা ফি দিয়ে নির্ধারিত ফরমে আবেদন করতে হবে। এই ফি ব্যাংক ড্রাফট বা পে-অর্ডারের মাধ্যমে এক্সচেঞ্জ বরাবর জমা দিতে হবে। আবেদন পাওয়ার পর তা যাচাই-বাছাই করে এক্সচেঞ্জ ৪৫ কার্যদিবসের মধ্যে তা মঞ্জুর করবে অথবা বাতিল করবে। আবেদন মঞ্জুর হলে নিবন্ধন ফি বাবদ পাঁচ লাখ টাকা এক্সচেঞ্জ বরাবর ব্যাংক ড্রাফট বা পে-অর্ডার করতে হবে।

ডিএসইর পক্ষ থেকে বলা হয়েছিলো, ট্রেক পেতে আবেদন করা কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন কমপক্ষে ১০ কোটি টাকা হতে হবে। এছাড়া ট্রেক পেতে আবেদন করা ফরমের মূল্য ১০ লাখ টাকা,নিবন্ধন ফি দুই কোটি টাকা করার প্রস্তাব দিয়েছিলো ডিএসই।

গত ২৪ মার্চ ‘ট্রেডিং রাইট এনটাইটেলমেন্ট সার্টিফিকেট বিধিমালা ২০২০’ খসড়া করে তা জনমত যাচাইয়ের জন্য মতামত চায় বিএসইসি। এ খসড়া চূড়ান্ত করতে ১৫ এপ্রিলের মধ্যে সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে মতামত চাওয়া হয়। চুড়ান্ত আইনে এক্সচেঞ্জের প্রত্যেক প্রাথমিক শেয়ারহোল্ডার ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন আইনের আওতায় একটি করে ট্রেক (ব্রোকারেজ হাউস) পাওয়ার অধিকার রাখেন।

স্টকমার্কেটবিডি.কম/

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *