পর্ব ২ : ১২০ কোটি টাকার বিনিয়োগে রিজেন্টের অর্জিত মুনাফা নিয়ে অভিযোগ

regent.smbdনিজস্ব প্রতিবেদক :

পাঁচ বছর আগের ৬৪ কোটি টাকার কোম্পানি, ছিল না কোনো উদ্বৃত্ত মূলধন, অথচ সে বছর কোম্পানিটি মুনাফা করে ১০ কোটি টাকা। সেই রিজেন্ট টেক্সটাইলের বর্তমান সম্পদ মূল্য দাঁড়িয়েছে ১৮৪ কোটি টাকা আর উদ্বৃত্ত মূলধনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় শত কোটি টাকার উপরে। কোম্পানিটি গত বছর ২০১৪ সালে কর পরবর্তী মুনাফা করেছে ১৪ কোটি টাকা। এ কোম্পানিটি আইপিওর মাধ্যমে শেয়ারবাজার থেকে উত্তোলিত অর্থের একটি বড় অংশ ব্যবসা সম্প্রসারণে বিনিয়োগ করতে চায়।

কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০১০ সালে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কোম্পানির জমি, কারখানা-মেশিন ও যন্ত্রাদির আর্থিক মূল্য ছিল ৬৪ কোটি টাকা। যা ২০১৪ সালে এসব সম্পদের মূল্য দাঁড়িয়েছে ১৮৪ কোটি টাকা। মূলত এই খাতে মূলধনটা বৃদ্দি পায় ২০১১ সালে। সেবছরে কোম্পানিটি এই খাতে বড় বিনিয়োগ করায় এই মূলধন বেড়ে ১৭৪.৬ কোটি টাকা হয়।

বিনিয়োগকারীদের অভিযোগ, বিগত বছরগুলো কোম্পানিটি যে হারে বিনিয়োগ বাড়িয়েছে সে অনুপাতে মুনাফা অর্জন করতে ব্যর্থ হয়েছে। বিনিয়োগ করে মুনাফা অর্জন নির্ভর করে ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনা পর্ষদের উপর, যেটার অভাব রয়েছে রিজেন্ট টেক্সটাইলের। আইপিও টাকার একটি বড় অংশ কারখানার পিছনে খরচ করতে চাইলে কোম্পানিটিকে আরো দক্ষ হাতে ব্যবস্থাপনার দাবি করেন।

অন্যদিকে শেয়ারহোল্ডার ইক্যুটিতে কোম্পানিটি উদ্বৃত্ত অর্থের পরিমাণ দেখিয়েছে প্রায় শত কোটি টাকা। গত ২০১০ সাল হতে ২০১৪ সাল পর্যন্ত কোম্পানিটির কাছে প্রায় ১০০ থেকে ১১০ কোটি টাকা উদ্বৃত্ত বা সঞ্চিতি আছে বলে আর্থিক প্রতিবেদনে দেখিয়ে আসছে।

এই বিপুল পরিমাণ টাকা নিয়ে আর প্রচুর পরিমাণে বিনিয়োগ বাড়িয়ে মুনাফা অর্জনের ধারাবাহিকতা নিয়ে কোম্পানিটি বিরূদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। ২০১০ সালে রিজেন্ট টেক্সটাইলের কর পরবর্তী মুনাফা ছিল ১০ কোটি টাকা আর পরের বছর বিনিয়োগ তিনগুন করেও ২০১১ মুনাফা অর্জন হয় ১৮ কোটি টাকা। ২০১২ সালে এই মুনাফা আবার কমে দাঁড়ায় ১৩ কোটি টাকা। সর্বশেষ প্রকাশিত গত ২০১৪ সালে কোম্পানিটির কর পরবর্তী মুনাফা হয়েছে ১৪ কোটি টাকা।

এর আগের ২০১১ সালে কোম্পানিটি জমি, কারখানা-মেশিন ও যন্ত্রাদিবাবদ প্রায় ১১০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে। সেই বড় মূলধন বিনিয়োগে পরের বছর তেমন কোনো সুবিধা পায়নি শেয়ারহোল্ডাররা।

রিজেন্ট টেক্সটাইল মিলস খ্যাতনামা হাবিব গ্রুপের একটি কোম্পানি। এই গ্রপের এয়ারলাইন্স ব্যবসাসহ বিভিন্ন ধরণের ব্যবসা রয়েছে। এপ্রসঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোম্পানিটির আর্থিক প্রতিবেদনের রূপকার ও আর্থিক বিভাগের প্রধান অঞ্জন কুমার ভট্টাচারিয়াকে পাওয়া যায়নি।

সংশ্লিষ্টদের মতে, একই খাতে কোম্পানটিতেই বিনিয়োগ করা হবে আইপিওর মাধ্যমে উত্তোলিত ৮২.৪৬ কোটি টাকা। আর বাকি অর্থ দিয়ে নতুন একটি পোশাক কারখানা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রিজেন্ট টেক্সটাইলের পরিচালনা পর্ষদ। বর্তমান পরিস্থিতিতে একটি পোশাক কারখানা করার উদ্যোগ রিজেন্ট টেক্সটাইলের কতটা যুক্তিযুক্ত আর এটা নির্ধারিত সময়ে বাস্তবায়ন সম্ভব কিনা তা বিবেচনা করা উচিৎ।

প্রসঙ্গ : শেয়ারবাজার থেকে ১২৫ কোটি টাকা নিয়ে রিজেন্ট টেক্সটাইল নিজেদের ব্যবসা আরো সম্প্রসারণ করতে চায়। এ অর্থের একটি বড় অংশ জমি, কারখানা-মেশিন ও যন্ত্রাদিবাবদ খরচ করবে রিজেন্ট টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড। পূর্বের ১২০ কোটি টাকার চেয়ে আইপিও টাকার বিনিয়োগ ফলপ্রসূ হয় সে দিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। পাশাপাশি কোম্পানিটি গত চার বছরে এই খাতে যে বিনিয়োগ করেছে তা নিয়ন্ত্রক সংস্থাদের সরেজমিন অনুসন্ধান দাবি করছেন তারা।

…..চলমান

স্টকমার্কেটবিডি.কম/বিএ/জেডএ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *