প্লাস্টিক খাতের উন্নয়নে বিশেষ টাস্কফোর্স গঠনের পরামর্শ

স্টকমার্কেটবিডি প্রতিবেদক :

দেশের প্লাস্টিক খাতের উন্নয়নে বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণের মাধ্যমে একটি বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন করা যেতে পারে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস। গতকাল শনিবার ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণ-পরবর্তী সময়ে টেকসই রপ্তানি বৃদ্ধি: প্লাস্টিক খাতের কৌশল নির্ধারণ’ শীর্ষক ওয়েবিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব বলেন, দেশের অর্থনৈতিক সক্ষমতা বেড়েছে। উদ্যোক্তাদের দক্ষতাও বাড়ছে। সরকার দেশের বেসরকারি খাতের অগ্রগতির জন্য সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। এই সহায়তা অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, ‘বেসরকারি খাতের সহায়তায় আমরা সব সমালোচনা মোকাবিলা করতে পেরেছি। অর্থনৈতিক ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখতে পেরেছি।’

তিনি বলেন, এলডিসি-পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার পাশাপাশি প্লাস্টিক খাতের সার্বিক উন্নয়নে একটি বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন করা যেতে পারে। এ খাতের উন্নয়নে শুল্ক্কমুক্ত সুবিধা সম্প্রসারণ, অন্যান্য প্রণোদনা প্রদান, রপ্তানি পণ্যের জাহাজীকরণের মাশুল কমানো এবং সম্ভাবনাময় দেশগুলোর সঙ্গে মুক্তবাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের ওপর তিনি জোর দেন তিনি।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, এলডিসির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় রপ্তানি বাড়াতে পণ্যের বহুমুখীকরণের কোনো বিকল্প নেই। এ ক্ষেত্রে প্লাস্টিক খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। এ খাতের বিকাশে নীতি সহায়তা, বিশ্বমানের টেস্টিং ল্যাবরেটরি স্থাপন, উৎপাদিত পণ্যের পেটেন্ট স্বত্ব, নতুন পণ্য উদ্ভাবন, দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি, এসএমইর সক্ষমতা বাড়ানো দরকার। তিনি বলেন, প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহে নজর দিতে হবে। কারণ এসব বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব।

ডিসিসিআই সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, দেশের জিডিপিতে প্লাস্টিক খাতের অবদান ০.৩৩ শতাংশ। এ খাতের মাধ্যমে দেশে প্রায় ১৫ লাখ লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়েছে। বৈশ্বিক বাজারে বাংলাদেশের প্লাস্টিক খাতের অংশ ০.৬ শতাংশ। তবে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের পর এ খাতের পণ্য রপ্তানিতে নানামুখী চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে।

মূল বক্তব্যে বাংলাদেশ প্লাস্টিক পণ্য প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিপিজিএমইএ) সভাপতি শামীম আহমেদ বলেন, ২০২০-২১ অর্থবছরে প্লাস্টিক খাতের মোট রপ্তানির পরিমাণ ছিল প্রায় এক বিলিয়ন ডলারের বেশি। এ খাতের স্থানীয় বাজারের পরিমাণ প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা। প্রতিবছর প্রায় ৪ দশমিক ৫ শতাংশ হারে বাড়ছে রপ্তানি।

ওয়েবিনারে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদস্য (অডিট কাস্টমস) ড. শহীদুল ইসলাম বলেন, প্লাস্টিক পণ্যের স্থানীয় চাহিদার প্রায় ৮০ শতাংশই স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত পণ্যের মাধ্যমে মেটানো হয়ে থাকে। রপ্তানি বহুমুখীকরণ, মূল্য সংযোজনশীল পণ্যের উৎপাদন বাড়ানো ও আন্তর্জাতিক মান নিশ্চিতকরণের তাগিদ দেন তিনি।

প্রাণ গ্রুপের চেয়ারম্যান আহসান খান চৌধুরী বলেন, প্লাস্টিকের পণ্য পুনর্ব্যবহারে আমাদের সক্ষমতা বাড়ছে। বাংলাদেশের উৎপাদিত প্লাস্টিকের পণ্য বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, জার্মানিসহ ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশে রপ্তানি হচ্ছে। এলডিসির কাতার থেকে বের হওয়া নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। তবে নিজেদের সক্ষমতা বাড়াতে হবে। সেই সঙ্গে পণ্য উৎপাদন ব্যয় কমানো দরকার।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সাবেক অধ্যাপক ড. ইজাজ হোসেন বলেন, প্লাস্টিক খাতের বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা এবং সরকারের পরিবেশ অধিদপ্তরের সক্ষমতা বাড়ানো দরকার।

স্টকমার্কেটবিডি.কম/

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *