বিএসইসি-বিবির সমন্বয়হীনতায় শেয়ারবাজারে বারবার অস্থিরতা

bsecস্টকমার্কেটবিডি প্রতিবেদক :

মুদ্রাবাজার নিয়ন্ত্রক বাংলাদেশ ব্যাংক ও শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মধ্যে সমন্বয় না থাকায় দফায় দফায় শেয়ারবাজারে অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে। পরস্পর সম্পর্কিত হওয়ায় মুদ্রাবাজার নিয়ে যেকোনো সিদ্ধান্তে প্রভাবিত হয় শেয়ারবাজার। তবে শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার সঙ্গে কোনো সমন্বয় ছাড়াই মুদ্রাবাজার বিষয়ে নানা সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে সৃষ্ট অস্থিরতা ও টালমাটালে বারবার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ ও ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা।

শেয়ারবাজার-প্রভাবিত বিষয়ে মন্তব্য, সিদ্ধান্ত কিংবা সার্কুলার জারি করতে বা মতামত দিতে বিএসইসির সঙ্গে পরামর্শ করার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় সার্কুলার জারি করে ২০১২ সালে। সেই নির্দেশনার কোনো বাস্তবায়ন দেখছেন না শেয়ারবাজারসংশ্লিষ্টরা।

শেয়ারবাজারের স্থিতিশীলতা রক্ষায় উভয় পক্ষের সমন্বয় খুবই জরুরি অভিহিত করে তাঁরা বলছেন, ‘শেয়ারবাজার স্পর্শকাতর বিষয়। আমাদের শেয়ারবাজারে প্রতিষ্ঠানের চেয়ে ব্যক্তি বিনিয়োগকারী বহুগুণ বেশি। তাদের পুঁজিও তুলনামূলক কম। শেয়ারবাজার নিয়ে কোনো তথ্য শুনলেই জেনে না জেনে শেয়ার বিক্রি করে। আর শেয়ার বিক্রির চাপে শেয়ারবাজারে অস্থিরতার সৃষ্টি হয়।’

সম্প্রতি বেপরোয়া ঋণের লাগাম টানতে ব্যাংকের ঋণ আমানত হ্রাস করে এক সার্কুলার জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। যদিও সার্কুলার জারির আগেই এই তথ্য জেনে শেয়ারবাজার অস্থির হয়ে ওঠে। শেয়ারবাজারে পতন ঘটে। আর কারসাজি করার একটি গোষ্ঠী এ বিষয়ে নানা তথ্য ছড়িয়ে ভীতি সৃষ্টি করেছে। ওই গোষ্ঠীর উদ্দেশ্য থাকে—ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা কম দামে শেয়ার বিক্রি করে দিলে তারা সেই শেয়ার কিনে মুনাফা অর্জন করবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুদ্রানীতি ঘোষণা ও এডিআর কমানো নিয়ে আতঙ্কে শেয়ার বিক্রির চাপে বাজারে অস্থিরতার সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে শেয়ারবাজারসংশ্লিষ্টরা জরুরি সভা করেছেন।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সদস্যভুক্ত ব্রোকারেজ হাউসগুলোর সংগঠন ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিএ) সভাপতি মোস্তাক আহমেদ সাদেক বলেন, ‘মুদ্রাবাজার ও শেয়ারবাজার পরস্পরের সঙ্গে সম্পর্কিত। বাংলাদেশ ব্যাংক মুদ্রাবাজারের নিয়ন্ত্রক, স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটিকে অন্যান্য ব্যাংক বা মুদ্রাবাজার বিষয়ে নানা সিদ্ধান্ত নিতে হয়। কাজেই শেয়ারবাজার প্রভাবিত হয়, এমন বিষয়ে শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার সঙ্গে আলোচনা বা সমন্বয় করা প্রয়োজন। এতে মুদ্রাবাজার যেমন ভালো চলবে, তেমনি শেয়ারবাজারও স্থিতিশীল হবে।’

সূত্র জানায়, ২০১০ সালে শেয়ারবাজারে ধস নামার পর ২০১২ সালে ২২ ফেব্রুয়ারি অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে এক নির্দেশনায় বলা হয়, শেয়ারবাজারসংক্রান্ত সিদ্ধান্ত বা বক্তব্য দেওয়ার ক্ষেত্রে বিএসইসির সঙ্গে আলোচনা, পরামর্শ ও সমন্বয় করতে হবে। বিশ্বব্যাপী শেয়ারবাজার একটি সংবেদনশীল বাজার হিসেবে স্বীকৃত। ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও সংস্থাগুলোর শেয়ারবাজার সম্পর্কে সম্যকভাবে অবহিত না হয়ে বিভিন্ন বক্তব্য ও মন্তব্য প্রদানের কারণে বাজার প্রভাবিত হওয়ার ও অস্থিরতা সৃষ্টির আশঙ্কা থাকে।

স্টকমার্কেটবিডি.কম/এমএ/এসটি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *