মোবাইল ব্যাংকিংয়ের নেতৃত্ব থাকবে ব্যাংকের হাতেই। বিদ্যমান মোবাইল ফিন্যানশিয়াল সার্ভিসেস (এমএফএস) প্রতিষ্ঠানগুলো যেভাবেই থাকুক না কেন ভবিষ্যতে কোনো ব্যাংক এই সেবা চালু করতে চাইলে তাকে একটি সাবসিডিয়ারি বা সহযোগী প্রতিষ্ঠান খুলতে হবে।
ওই প্রতিষ্ঠানের কমপক্ষে ৫১ শতাংশ মালিকানা থাকতে হবে মূল প্রতিষ্ঠান অর্থাৎ ব্যাংকের হাতে। বাকি অংশ ৪৯ শতাংশ মালিকানায় ব্যাংক বা ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান, এনজিও এবং আর্থিক খাতের প্রযুক্তি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানকেও ইক্যুয়িটি পার্টনার হিসেবে নেওয়া যাবে। তবে এমএফএস পরিচালনার মূল দায়-দায়িত্ব থাকবে সহযোগী প্রতিষ্ঠানের হাতেই। কোনো অবস্থাতেই মোবাইল অপারেটগুলো মালিকানায় থাকতে পারবে না। কমপক্ষে ৪৫ কোটি টাকা মূলধন নিয়ে সহযোগী প্রতিষ্ঠান চালু করতে হবে।
এই বিষয়গুলোর পাশাপাশি আরো বেশ কিছু নতুন সুযোগ রেখে গতকাল ‘বাংলাদেশ মোবাইল ফিন্যানশিয়াল সার্ভিসেস নীতিমালা-২০১৮’ জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সেই সঙ্গে ২০১১ সালের জারি করা নীতিমালা এবং এর পরবর্তী সময়ের সংশোধন ও সংযোজনকৃত নির্দেশনার ওপর নতুন জারি করা নীতিমালা প্রতিস্থাপন করা হয়। তবে এই নীতিমালার সঙ্গে এমএফএসগুলোকে বাংলাদেশ পেমেন্ট অ্যান্ড সেটলমেন্ট নীতিমালা ২০১৪ এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক আইন মেনে চলতে বলা হয়েছে। বিশ্বের অনেক দেশের মতো ‘টেলিকম নেতৃত্বাধীন মডেল’ তথা মোবাইল অপারেটরদের কর্তৃত্বে মোবাইল ব্যাংকিং করার জন্য অপারেটরগুলো দাবি জানিয়ে এলেও বাংলাদেশ ব্যাংক নতুন নীতিমালার মাধ্যমে স্পষ্ট করে দিয়েছে বর্তমানের মতো ব্যাংকের নেতৃত্বেই মোবাইল ব্যাংকিং পরিচালিত হবে। নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলো পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডার হিসেবেও কাজ করতে পারবে।
নীতিমালায় বলা হয়েছে, মোবাইল নম্বর হবে গ্রাহকের মোবাইল অ্যাকাউন্ট। ব্যাংকের মতো করেই সব তথ্য-উপাত্ত নিয়ে অ্যাকাউন্ট খোলার পর গ্রাহকরা এজেন্ট পয়েন্ট ছাড়াও এটিএম বুথ, ব্যাংকের শাখা ও সংযুক্ত ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে ক্যাশ ইন ও ক্যাশ আউট করতে পারবেন। তা ছাড়া ব্যক্তি হিসাব থেকে ব্যক্তি হিসাবে টাকা পাঠানোর ক্ষেত্রে এখন থেকে অন্য এমএফএস প্রতিষ্ঠানের হিসাবেও টাকা পাঠানো যাবে। বৈধ উপায়ে ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ থেকে পাঠানো রেমিট্যান্সের অর্থ সুবিধাভোগীর কাছে পৌঁছে দেওয়া যাবে। তবে কোনো অবস্থায় দেশের বাইরে থেকে রেমিট্যান্সের অর্থ দেশে আনা যাবে না। বর্তমানেও এসব নিয়ম প্রচলিত আছে।
মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানগুলো নিজের তহবিল থেকে কোনো ঋণ দিতে পারবে না। তবে স্বীকৃত ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, এনজিও, ক্ষুদ্র ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান ঋণ বিতরণের কাজ করতে পারবে। বর্তমানে ১৮টি ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা রয়েছে।
মোবাইল ব্যাংকিং লাইসেন্সের জন্য বর্তমানের মতো শুধু বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো আবেদন করতে পারবে। লাইসেন্স পাওয়ার পর ১২ মাসের মধ্যে কার্যক্রম শুরু না করলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক চাইলে ওই প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিল করতে পারবে।
স্টকমার্কেটবিডি.কম/জেড