উরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাজ্যের মানুষ। ৩০ বছরের সর্বনিম্নে নেমে এসেছে ব্রিটিশ পাউন্ডের বিনিময় হার। ‘নিরাপদ বিনিয়োগ’ হিসেবে সুপরিচিত কিছু বন্ড ও স্বর্ণ ছাড়া অস্বাভাবিক বিক্রয়চাপের শিকার হয়েছে বিশ্বের সব প্রান্তের আর্থিক বাজারের সব ধরনের সিকিউরিটিজ। বৈশ্বিক শেয়ারবাজারে একদিনের ব্যবধানে বাজার মূলধন কমে গেছে ২ ট্রিলিয়ন ডলার। খবর রয়টার্স, বিবিসি ও ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল।
শুক্রবার সকালে ভোটের ফলাফল জানার পর থেকেই ইউরোপের অন্যান্য অংশের মতো লন্ডনের শেয়ারবাজারেও দরপতন শুরু হয়। মূল ধাক্কাটা গেছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক ব্যাংকগুলোর শেয়ারে। লেনদেনের শুরুতেই প্রায় ৩০ শতাংশ দর হারিয়েছে বার্কলেস, আরবিএস ও লয়েডসের মতো ব্যাংকগুলো। ৫ থেকে ১০ শতাংশ দরপতনে কেনাবেচা শুরু হয় ইউরোপের গুরুত্বপূর্ণ সব শেয়ারবাজারে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এর মাত্রা কিছুটা কমে। লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক এফটিএসইর পতন ৪ শতাংশে সীমিত হয়ে এলেও ৭-৮ শতাংশ হারে কমে প্যারিস ও ফ্রাংকফুর্টের সূচক। দুপুর পর্যন্ত ইউরোপের সমন্বিত শেয়ারসূচক স্টক্স ইউরোপ-৬০০ প্রায় ৭ শতাংশ হ্রাস পায়।
বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, দিনের লেনদেন শুরু হলে ওয়াল স্ট্রিটের গুরুত্বপূর্ণ সূচকগুলো কমবেশি ৪ শতাংশ কমে যাবে। দুপুরের আগে ইউরোপের স্টক এক্সচেঞ্জগুলোর সম্মিলিত বাজার মূলধন অন্তত ১ ট্রিলিয়ন ডলার কমে গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের লেনদেন শুরুর আগেই ২ ট্রিলিয়ন ডলার খুইয়েছে বৈশ্বিক শেয়ারবাজার।
ইউরোপের অস্থিতিশীল অবস্থার ধাক্কা এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলেও লেগেছে। যুক্তরাজ্যের গণভোটকে কেন্দ্র করে এক মাসের বেশি সময় ধরেই টানাপড়েনে ছিল বাজার। গতকাল চীন, হংকং, ভারত, অস্ট্রেলিয়ায় শেয়ারসূচক ১ থেকে ৩ শতাংশ কমেছে। কিন্তু জাপানের নিক্কেই ২২৫ সূচক কমেছে প্রায় ৮ শতাংশ।
বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাজ্য ইইউ ছেড়ে দিলে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলো ভিন্ন ভিন্নভাবে প্রভাবিত হবে, লন্ডনের পাশাপাশি ফ্রাংকফুর্ট, প্যারিস ও ইউরোপের গুরুত্বপূর্ণ শেয়ারবাজারগুলোয় যার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে। কিন্তু বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট থেকে বিবেচনা করলে মূল দুঃশ্চিন্তাটি ইউরোপের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতাকে কেন্দ্র করে তীব্রতর হচ্ছে।
ডলারের বিপরীতে সকালে প্রায় ১০ শতাংশ কমে ১৯৮৫ সালের পর সর্বনিম্নে নেমে যায় ব্রিটিশ পাউন্ডের মান। ব্যাংক অব ইংল্যান্ড কর্মকর্তাদের আশ্বাসের পর দুপুরে তা কিছুটা বাড়তে থাকলেও পাউন্ডের দরপতন ৮ শতাংশের আশপাশেই ছিল। চলমান ডামাডোল থেকে বাজার ও অর্থনীতিকে সুরক্ষা দিতে প্রয়োজনে নতুন প্রণোদনার আশ্বাস দিচ্ছে বিশ্বের অন্যান্য অংশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো।
স্টকমার্কেটবিডি.কম/এম