ঈদের ছুটিতে জাহাজজট চট্টগ্রাম বন্দরে

স্টকমার্কেটবিডি ডেস্ক :

ঈদের লম্বা ছুটি শুরু হয়েছে ১ মে। ছুটির সঙ্গে বহির্নোঙরে অপেক্ষমাণ জাহাজের সারিও লম্বা হচ্ছে। ঈদের পরদিন গতকাল বুধবার জেটিতে ভেড়ানোর অপেক্ষায় বহির্নোঙরে কনটেইনার জাহাজের সংখ্যা ১৭-তে উন্নীত হয়েছে।

জট হলে জাহাজ জেটিতে ভেড়ানোর জন্য অপেক্ষার সময় বেড়ে যায়। তাতে পণ্য হাতে পেতে দেরি হয়। ঈদের পর এখনো কারখানা খোলেনি। তাতে এখনই খুব সমস্যা হচ্ছে না। তবে জট দ্রুত না কমলে পণ্য হাতে পেতে দেরি হওয়ার প্রভাব পড়বে শিল্প খাতে।

বন্দর ও শিপিং এজেন্টস কর্মকর্তারা বলছেন, প্রতিবছর ঈদের সময় বহির্নোঙরে অপেক্ষমাণ জাহাজের সংখ্যা বেড়ে যায়। স্বাভাবিক হতে দেড়-দুই সপ্তাহের মতো সময় লাগে। এবারও দুই সপ্তাহের মধ্যে জাহাজের সংখ্যা কমে আসবে বলে জানান তাঁরা।

বন্দরসচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, জাহাজের সংখ্যা বাড়লেও তা সাময়িক। আগামী সপ্তাহেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে।

ঈদের দিন এক পালা (আট ঘণ্টা) ছাড়া অন্যান্য সময় দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা বন্দরে জাহাজ থেকে কনটেইনার ওঠানো-নামানোর কার্যক্রম সচল থাকে। এরপরও এবার ঈদের দিনে বন্দর জেটি ত্যাগ করেছে একটি জাহাজ। আরেকটি জাহাজ বহির্নোঙর থেকে জেটিতে ভেড়ানো হয়েছে। ছুটিতে পরিচালন কার্যক্রম সচল থাকলেও ব্যবহারকারী সব সংস্থা সমানভাবে সক্রিয় না থাকায় কাজে ধীরগতি আসে। তাতে বন্দরে অপেক্ষমাণ জাহাজের সংখ্যা বেড়ে যায়।

এবার ঈদের ছুটিতে প্রায় আট দিন কারখানা বন্ধ থাকছে। তাতে জরুরি পণ্য ছাড়া বন্দর চত্বর থেকে পণ্য খালাস হচ্ছে না। দ্রুত খালাস না করলে জাহাজের সংখ্যাও বাড়বে। কারণ, বন্দর সচল থাকলেও কনটেইনার খালাস না হলে পরিচালন কার্যক্রমে ধীরগতি আসবে।

জানতে চাইলে বন্দর ব্যবহারকারী তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএর প্রথম সহসভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, শনিবার থেকে পোশাক কারখানা সচল হবে। বন্দর থেকেও এ সময়ে পণ্য খালাস পুরোদমে শুরু হবে। পণ্য খালাস হলে বহির্নোঙরে অপেক্ষমাণ জাহাজের সংখ্যাও কমে যাবে।

করোনার পর বিশ্বজুড়ে বড় বন্দরগুলো জটে পড়লেও ব্যতিক্রম ছিল চট্টগ্রাম বন্দর। পণ্য আমদানি-রপ্তানি বাড়লেও নানা পদক্ষেপ নেওয়ায় এই বন্দর জটমুক্ত ছিল। এখনো চীনের একাধিক বন্দরসহ বিশ্বের অনেক বন্দরে জাহাজজট রয়েছে।

মেরিটাইম খাতের পরামর্শক সংস্থা উইন্ডওয়ার্ড সর্বশেষ গত ১৯ এপ্রিল যে তথ্য প্রকাশ করেছে, তাতে বিশ্বের বন্দরগুলোর সামনে ১ হাজার ৮৬২টি কনটেইনার জাহাজে জেটিতে ভেড়ানোর অপেক্ষায়। এই সংখ্যা বিশ্বের মোট কনটেইনার জাহাজের ২০ শতাংশ। এখন সবচেয়ে বেশি জট চীনের বন্দরগুলোতে।

বন্দর কর্মকর্তারা জানান, বন্দর জেটিতে এখন ১১টি কনটেইনার জাহাজ রয়েছে। আগামী সপ্তাহে দুই দিনে ৫টি করে মোট ১০টি জাহাজ বন্দর জেটি ত্যাগ করবে। তাতে জাহাজের চাপও কমে আসবে। আবার সিঙ্গাপুর ও কলম্বো বন্দর থেকে জাহাজ আসার চাপ কম। তাতে জট দীর্ঘস্থায়ী হবে না।

চট্টগ্রাম ও মোংলা—এই দুই বন্দর দিয়ে সমুদ্রপথে কনটেইনারে পণ্য আমদানি-রপ্তানি হয়। এর মধ্যে চট্টগ্রাম দিয়ে ৯৮ শতাংশ কনটেইনার আনা-নেওয়া হয়। মূলধনী যন্ত্রপাতি থেকে বাণিজ্যিক পণ্য ও শিল্পের কাঁচামাল কনটেইনারে আনা হয়। একইভাবে রপ্তানি পণ্য নেওয়া হয় কনটেইনারে। সূত্র : প্রথম আলো

স্টকমার্কেটবিডি.কম/

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *