চট্টগ্রাম বন্দরে এসেছে ৭৫ হাজার টন সয়াবিন তেল

স্টকমার্কেটবিডি ডেস্ক :

দেশের বাজারে সয়াবিন তেলের সংকটের সময়ে চট্টগ্রাম বন্দরে এসে পৌঁছেছে তিনটি জাহাজ। এই তিন জাহাজে আছে ৭৫ হাজার টন অপরিশোধিত সয়াবিন তেল। আমদানিকারক কোম্পানিগুলোর সূত্রে জানা গেছে, এই অপরিশোধিত সয়াবিন তেল পরিশোধন করে রোজায় বাজারজাত করবে তারা।

সুখবর আরও আছে। সয়াবিন ছাড়াও পাঁচ জাহাজে রোজার পণ্য ছোলা, মটর ডাল, মসুর ডাল, চিনি আনা হয়েছে প্রায় ১ লাখ ৯৫ হাজার টন। এ ছাড়া রোজায় ব্যবহার বেশি না হলেও তিনটি জাহাজে করে গম আনা হয়েছে ১ লাখ ৪২ হাজার টন। সব মিলিয়ে ১৩ জাহাজে ৪ লাখ ৮২ হাজার টন রোজার পণ্য এসেছে। কোনো কোনো জাহাজের পণ্য এরই মধ্যে খালাস শেষ হয়ে গেছে। খালাস চলছে কোনোটি থেকে। অন্য জাহাজগুলোর পণ্য এখন খালাসের অপেক্ষায়।

চট্টগ্রাম বন্দর সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৩২ হাজার টন অপরিশোধিত সয়াবিন নিয়ে বন্দর জলসীমায় এসে পৌঁছেছে দুটি জাহাজ। আগামী শনিবার আরও ৪৩ হাজার টন সয়াবিন তেল নিয়ে আরেকটি জাহাজ আসার কথা রয়েছে। সিটি গ্রুপ, মেঘনা গ্রুপ, বাংলাদেশ এডিবল অয়েল, টিকে গ্রুপ ও সেনা এডিবল অয়েল লিমিটেড এই সয়াবিন তেল আমদানি করেছে। এর আগে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে পাম তেল এসেছে ১২ হাজার টন। আরেকটি জাহাজে আনা হয়েছে প্রায় ৫৭ হাজার টন সয়াবীজ। সয়াবীজ মাড়াই করে প্রাণিখাদ্য সয়ামিলের পাশাপাশি অপরিশোধিত সয়াবিন তেল তৈরি করা হয়।

আমদানিকারকেরা বলছেন, প্রায় কাছাকাছি সময়ে সয়াবিন তেলবাহী তিনটি জাহাজের আগমন দেশে এই পণ্যের সংকট হওয়ার যে শঙ্কা তৈরি হয়েছিল, তা ঘোচাবে। এই তিন জাহাজে সয়াবিন তেল আসার আগে ট্যাংক টার্মিনালে সয়াবিন তেলের মজুত ছিল মাত্র ১৪ হাজার টন। নতুন চালান আসায় শঙ্কা কাটছে। এখন জাহাজ থেকে খালাস করে প্রথমে পতেঙ্গায় ট্যাংক টার্মিনালগুলোতে রাখা হবে। এরপর সেখান থেকে শুল্ককর পরিশোধ করে পরিশোধন কারখানায় নেওয়া হবে। পরিশোধন করে বাজারজাতকরণের প্রক্রিয়া ধারাবাহিকভাবে চলবে বলে তাঁরা জানান।

জানতে চাইলে সিটি গ্রুপের পরিচালক বিশ্বজিৎ সাহা বলেন, ‘বিশ্ববাজারে সয়াবিনের দাম বাড়ছে। এরপরও আমদানি অব্যাহত রেখেছি আমরা। নতুন আসা সয়াবিন তেলের চালান দ্রুত খালাস ও পরিশোধন করে বাজারজাত করা হবে। এর বাইরে নতুন করে ঋণপত্র খোলা হয়েছে।’ নতুন আসা চালান আগের চেয়ে বাড়তি দামে কিনতে হয়েছে বলে জানান তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রের কমোডোটি এক্সচেঞ্জ শিকাগো বোর্ড অব ট্রেডের সর্বশেষ লেনদেন অনুযায়ী, রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ শুরুর পর সয়াবিন তেলের দাম বেড়েই চলেছে। ১১ মার্চ সয়াবিন তেল বেচাকেনা হয়েছে ১ হাজার ৮১১ ডলারে। আন্তর্জাতিক বাজারেই প্রতি কেজির দাম পড়েছে ১৫৫ টাকা।

কোম্পানিগুলো জানিয়েছে, বিশ্ববাজারে দর বাড়লেও ১১ মার্চের দরে এখনো সয়াবিন আমদানি হয়নি। তবে আমদানিমূল্য বাড়ছে। চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি হওয়া অপরিশোধিত সয়াবিনের আমদানিমূল্য পড়েছে প্রতি টন ১ হাজার ৪৮০ থেকে ১ হাজার ৪৯০ ডলার। সেই হিসাবে প্রতি কেজির দাম পড়ে ১২৭ টাকা। এই টাকার সঙ্গে আমদানি পর্যায়ে ভ্যাট এবং পরিশোধন, পরিবহন ও আনুষঙ্গিক খরচ যোগ করে বাজারে ছাড়বে কোম্পানিগুলো।

সয়াবিনের মতো ছোলা ও মসুর ডালের ৫৮ হাজার টনের দুটি চালান নিয়ে দুটি জাহাজ এসেছিল ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহে। জাহাজ দুটি থেকে এসব পণ্য খালাস শেষ হয়েছে দুদিন আগে। এ ছাড়া ৪৭ হাজার টন মটর ডালের একটি চালান এখন খালাস হচ্ছে। আর ৯০ হাজার টন অপরিশোধিত চিনিবাহী দুটি জাহাজ থেকে খালাস চলছে।

ডালজাতীয় পণ্যের বড় আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান বিএসএম গ্রুপের চেয়ারম্যান আবুল বশর চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘বছরজুড়ে পণ্য আমদানি করি আমরা। রোজায় বাড়তি চাহিদাকে কেন্দ্র করে আমদানি বেশি হয়।’ তিনি জানান, তাঁর প্রতিষ্ঠানের রোজায় পণ্য আমদানির সিংহভাগই দেশে এসে পৌঁছেছে। রাশিয়া থেকে মটর ডালের একটি চালান আটকে গেছে। এর বাইরে সামান্য কিছু পরিমাণ পণ্য রোজার আগে আসবে। সূত্র : প্রথম আলো

স্টকমার্কেটবিডি.কম/

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *