চালের দাম কমতে শুরু করলেও ভোজ্যতেল স্থিতিশীল

স্টকমার্কেটবিডি প্রতিবেদক :

নিত্যপণ্যের বাজারে কমতে শুরু করেছে সব ধরনের চালের দাম। উচ্চ দামে স্থিতিশীল রয়েছে খোলা ভোজ্যতেলের বাজার। দ্রুত সব ধরনের ভোজ্যতেলের দাম কমাতে আমদানিকারক, মিলমালিক ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করতে যাচ্ছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। সবজির সরবরাহ আরও বাড়ায় কমেছে দাম। আদা, রসুন, আটা ও ময়দার দাম বাড়তির দিকে রয়েছে। অপরিবর্তিত রয়েছে পেঁয়াজ, ডাল, চিনি ও ডিমের দাম। ব্রয়লার মুরগি, মাছ ও মাংসের দাম স্থিতিশীল রয়েছে।

শুক্রবার রাজধানীর কাওরানবাজার, নিউমার্কেট কাঁচাবাজার, ফার্মগেট কাঁচাবাজার, মোহাম্মদপুর টাউন হল মার্কেট ও মিরপুর-১ সিটি কর্পোরেশন বাজার ঘুরে নিত্যপণ্যের দরদামের এসব তথ্য পাওয়া গেছে। চাল ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, চিকন, মোটা ও মাঝারি এই তিন ধরনের চালের দামই কমেছে। গত সপ্তাহের তুলনায় মোটা চালের দাম কমেছে কেজিতে ২ টাকা করে। এছাড়া চিকন ও মাঝারি মানের পাইজাম ও লতা চালের দাম কেজিতে কমেছে ১ টাকা করে। খুচরা ব্যবসায়ীরা মোটা স্বর্ণা ও চায়না ইরিখ্যাত চাল বিক্রি করছেন ৪৩-৪৮ টাকায়। এক সপ্তাহ আগে এই চাল ৪৫-৪৮ টাকায় বিক্রি হয়েছে। চিকন নাজিরশাইল ও মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬৫ টাকা কেজি। মাঝারি চাল বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫৫ টাকায়। এ প্রসঙ্গে কাওরানবাজারের চাল ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম জানান, বাজারে চালের সরবরাহ বাড়তে শুরু করেছে। ফলে দাম কমে আসছে। আমদানিকৃত চাল বাজারে আসা শুরু হলে আগামীতে দাম আরও কমতে পারে।

প্রসঙ্গত, চাল আমদানিতে শুল্ক কমানোর পাশাপাশি সরকারী-বেসরকারীখাতে এবার প্রায় ২০ লাখ টন চাল আমদানি করা হবে। ইতোমধ্যে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত থেকে প্রায় ৫ লাখ টন চাল আমদানির জন্য খাদ্য মন্ত্রণালয়কে অনুমতি দিয়েছে সরকারের ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। এর পাশাপাশি বেসরকারীখাতে চাল আমদানির অনুমোদন দেয়া হচ্ছে। ফলে দেশে চালের মজুদ বাড়তে শুরু করেছে। এছাড়া এবার গম আমদানি করছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। সামনে আরও গম আমদানি করা হবে। দেশে খাদ্য মজদু বাড়াতে চাল ও গম আমদানি বাড়ানো হচ্ছে। আমদানির একটি ইতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে খুচরা বাজারে। চালের মিলমালিক ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা বাজারে চাল ছাড়তে শুরু করেছে।

জানা গেছে, ভোজ্যতেলের লাগাম টেনে ধরার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ কারণে আগামীকাল রবিবার ভোজ্যতেলের আমদানিকারক, পাইকারি ব্যবসায়ী এবং মিলমালিকদের সঙ্গে জরুরী বৈঠক করতে যাচ্ছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ওই বৈঠকে তেলের দাম কমানোর ঘোষণা দিতে পারেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। এখনও বাজারে উচ্চ দামে স্থিতিশীল রয়েছে খোলা ভোজ্যতেলের বাজার। দাম কমার কোন লক্ষণ নেই। বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম কমছে না। এদিকে বাজারে খোলা সয়াবিন তেলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০-১২৫ টাকায়, পাম অয়েল বিক্রি হচ্ছে ১১০-১১৫ টাকায়। তবে এক লিটার ওজনের বোতলজাত সয়াবিনের দাম বেড়েছে। আগের সপ্তাহে এক লিটার সয়াবিন বোতল ১২০ টাকায় বিক্রি হলেও বর্তমানে সেই বোতলের দাম রাখা হচ্ছে ১৩০ টাকা। খুচরা পর্যায়ে বোতল পাঁচ লিটার সয়াবিন তেল ৫৬০-৬০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। মোহাম্মদপুর টাউন হল মার্কেটের ব্যবসায়ী হাজী রহমত আলী বলেন, খোলা সয়াবিন এখন ১২০-১২৫ টাকা কেজি বিক্রি করছি। ব্র্যান্ডভেদে পাঁচ লিটারের বোতল ৫৮০-৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে। সয়াবিন তেলের দাম নিয়ে ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি হাজী গোলাম মাওলা বলেন, শীতের সময় সয়াবিন জমাট বেঁধে যায়। ফলে সরবরাহ কমে গিয়ে দাম বেড়ে যায়। এক্ষেত্রে কোম্পানিগুলো মিল গেটেই দাম বাড়িয়ে দেয়।

এদিকে, নিত্যপণ্যের বাজারে শীতের সবজির সরবরাহ ভাল। পেঁয়াজ ও আলুতে ভরপুর বাজার। ফলে সব জিনিসের দাম কমে এসেছে। তিনি গত সপ্তাহের মতো ভালমানের পাকা টমেটোর কেজি বিক্রি করছেন ২০-৩০ টাকা, শিম ২০-৪০ টাকা কেজি। ফুলকপি ও বাঁধাকপির পিস বিক্রি হচ্ছে ১০-২০ টাকা। এছাড়া মুলা ১০-১৫ টাকা, গাজর ৩০-৫০ টাকা, বেগুন ২০-৩০ টাকা, উচ্ছে ৩০-৪০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। ৪০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে বড় লাউ। সবজির পাশাপাশি স্বস্তি দিচ্ছে আলু ও পেঁয়াজের দাম। ভালমানের নতুন আলুর কেজি ২০ টাকার মধ্যে। ৪০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে দেশী পেঁয়াজ। ২০ টাকা কেজি পাওয়া যাচ্ছে আমদানি করা পেঁয়াজ। খুচরা বাজারে আদা প্রতিকেজি ৮০-১২০, রসুন ১০০-১৩০, আটা প্রতিকেজি ৩০-৩৫, ময়দা প্যাকেট ৩৫-৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতিকেজি চিনি ৬৫-৭০, প্রতিহালি ডিম ২৮-৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে। বাজারে দেশী মাছের সরবরাহ বেড়েছে। স্থিতিশীল রয়েছে গরু ও খাসির মাংসের দাম।

স্টকমার্কেটবিডি.কম/এইচ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *