নির্বাচনী অস্থিরতায় উভয় শেয়াবাজারে অব্যহত দরপতন

low profit-smbdস্টকমার্কেটবিডি প্রতিবেদক :

আগামী নির্বাচনকে ঘিরে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। রাজনৈতিক পরিস্থিতি অস্থিতিশীল হতে পারে এমন শঙ্কায় শেয়ারবাজারে শেয়ার বিক্রি বেড়েছে। ছোট বিনিয়োগকারীরা কম মূলধন থাকায় আতঙ্কিত হয়ে শেয়ার বিক্রি করছে কিন্তু বড় মূলধনের বিনিয়োগকারীরাও বাজারকে কোনো সাপোর্ট দিচ্ছে না, যার জন্য শেয়ারবাজারের দরপতন ত্বরান্বিত হচ্ছে। গতকাল বড় দরপতনে ডিএসইর সূচক কমেছে ৭৯ পয়েন্ট।

তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত এক সপ্তাহে (সাত কার্যদিবস) দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মূলধন কমেছে ১১ হাজার কোটি টাকা। আর মূল্যসূচক কমেছে ১৫৬ পয়েন্ট। ক্রমাগত নিম্নমুখী শেয়ারবাজারে আতঙ্কিত হয়ে পড়ায় বিনিয়োগকারীরা কম দামে শেয়ার বিক্রি করে বাজার ছাড়ছে।

এদিকে স্টেকহোল্ডারদের নিয়ে চলমান বাজার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনায় জরুরি বৈঠক ডেকেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টায় ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

সূত্র জানায়, শেয়ারবাজারে নির্বাচনকালীন নেতিবাচক প্রভাব এড়াতে সম্প্রতি দুটি উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। সরকার রাষ্ট্রায়ত্ত ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) ২০০০ কোটি টাকার বন্ড ইস্যু করেছে, যার ৭৫ শতাংশই পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ হবে। দ্বিতীয়টি চীনা প্রতিষ্ঠানের কাছে ডিএসইর ২৫ শতাংশ শেয়ার বিক্রি থেকে পাওয়া প্রায় এক হাজার কোটি নতুন বিনিয়োগ হিসেবে আনছে, তিন বছর রাখার শর্তে ১০ শতাংশ কর মওকুফ করছে সরকার।

গত এক সপ্তাহের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ১৪ অক্টোবর থেকে গতকাল পর্যন্ত ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ১১ হাজার কোটি টাকারও বেশি। আর মূল্যসূচক কমেছে ১৫৬ পয়েন্ট। সর্বশেষ গতকাল সোমবার ডিএসইর প্রধান সূচক কমেছে ৭৯ পয়েন্ট বা মোট সূচকের ১.৪৮ শতাংশ।

ডিএসই সূত্র জানায়, গত এক সপ্তাহের ডিএসইতে চার দিনেই সূচক কমেছে। এই চার দিনে সূচক কমেছে ২০৯ পয়েন্ট। আর অন্য তিন দিন সূচক বেড়েছে ৫৩ পয়েন্ট। সেই হিসাবে ডিএসইর প্রধান সূচক ১৫৬ পয়েন্ট হ্রাস পেয়েছে। আর লেনদেনও কমতে কমতে ৪০০ কোটি টাকার ঘরেও নেমে এসেছে। যদিও এক মাস আগেও ডিএসইতে এক হাজার কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে।

ডিএসই জানায়, এই সময়ে মূলধন কমেছে ১১ হাজার কোটি টাকারও বেশি। গত ১৪ অক্টোবর মূলধন ছিল তিন লাখ ৯১ হাজার ১৫২ কোটি ৪৪ লাখ টাকা, যা গতকাল সোমবার দাঁড়িয়েছে তিন লাখ ৮০ হাজার ১৫১ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। সেই হিসাবে ১১ হাজার কোটি টাকার বেশি মূলধন হারিয়েছে ডিএসই।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন গনমাধ্যমকে বলেন, ‘আগামী নির্বাচন ঘনিয়ে আসায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। আর এই অস্থিরতা থেকেই শেয়ারবাজারে বড় পতন হয়েছে। অনেক ভালো কম্পানির শেয়ারের দামও কমতে কমতে অনেক নিচে নেমেছে। নির্বাচনকালীন অস্থিরতার শঙ্কায় ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা আতঙ্কিত হয়ে কম দামে শেয়ার বিক্রি করছে। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরাও শেয়ার বিক্রি করে নিষ্ক্রিয় ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *