বাজেটে গরিব মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে

স্টকমার্কেটবিডি প্রতিবেদক :

আগামী অর্থবছরের বাজেটে গরিব ও প্রান্তিক মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়ানোর পদক্ষেপ নেওয়ার সুপারিশ করেছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি)। সংস্থাটি বলছে, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানিতে শুল্ক ছাড় দিতে হবে। ব্যক্তিশ্রেণির ক্রয়ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য আয়কর মুক্ত সীমা বাড়ানোর সুপারিশ করেছে সংস্থাটি। আর এসব করতে গিয়ে বাজেট ঘাটতি বাড়লে অসুবিধা নেই।

মঙ্গলবার সংস্থাটির ধানমন্ডি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে আগামী অর্থবছরের জন্য সুপারিশমালা তুলে ধরা হয়। সুপারিশ তুলে ধরেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন। এ সময় সিপিডির সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক মফিজুর রহমান, গবেষণা পরিচালক গোলাম মোয়াজ্জেম, সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খানসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

ফাহমিদা খাতুন বলেন, আগামী অর্থবছরের বাজেট আসছে এমন সময়ে যখন নিত্যপণ্যের মূল্য ক্রমান্বয়ে বেড়ে চলেছে, বহিঃখাত প্রচন্ড চাপে রয়েছে, বিদেশি উৎস থেকে সরকারের ঋণ গ্রহণ বেড়েছে। এ রকম পরিস্থিতিতে রাজস্ব সংগ্রহ নির্দিষ্ট পদ্ধতির মধ্যে না রেখে বাস্তবসম্মত হওয়া উচিত। সিপিডি কোনো কোনো ক্ষেত্রে কর হার বাড়ানো আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রণোদনা পুনর্বিবেচনা করার প্রস্তাব করেছে। অর্থপাচার রোধে ট্রান্সফার প্রাইসিং জোরদারের উদ্যোগ নেয়ার সুপারিশ করেছে সিপিডি।

ফাহমিদা খাতুন বলেন, আগামী অর্থবছরের বাজেটে এমন সব উদ্যোগ দরকার যাতে মানুষের কাজের সুযোগ বাড়ে। কৃষি উৎপাদন খরচ কম হয়। এজন্য তিনি সার ও জ্বালানিতে ভর্তুকি ও শিক্ষাখাতে পর্যাপ্ত বরাদ্দ এবং বাজার ব্যবস্থাপনায় কঠোর হওয়ার সুপারিশ করেছেন। তিনি বলেন, বাজারে প্রতিযোগিতার অভাব ও পরিবহনে চাঁদাবাজির কারণে পণ্যের মূল্য বেড়ে যায়। সরকারকে কঠোর হাতে এসব বন্ধ করতে হবে।

একই সঙ্গে মুদ্রার বিনিময় হারের স্থিতিশীলতা রাখার জন্য তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের বাজারে ডলার সরবরাহ করার সুপারিশ করেন। পাশাপাশি সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী বরাদ্দ বাড়ানো, শ্রমিকদের স্বাস্থ্য বীমা চালু করা, লোকসানি প্রতিষ্ঠান ইপিজেড অথবা অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর এবং বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি পুনর্মূল্যায়ন করা, এ খাতে অপ্রয়োজনীয় খরচ কমানো, জীবাশ্ম জ্বালানির পরিবর্তন নবায়নযোগ্য জ্বালানি উদ্বুদ্ধকরণের সুপারিশও করেন।

মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ব্যতিক্রম সময়ে বাজেট আসছে। এ রকম ক্ষেত্রে উদ্ভাবনী পদক্ষেপ নিতে হবে। কীভাবে নিম্ন আয়ের ও দরিদ্র মানুষকে স্বস্তি দেওয়া যায় সেজন্য বাজেটে পদক্ষেপ থাকতে হবে। আমদানি পর্যায়ে কর ছাড় দিতে হবে। বাজেট ঘাটতি বাড়ে সেটা মেনে নিতে হবে। সামাজিক নিরাপত্তা বরাদ্দ বাড়ানো দরকার।

খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, আগামী অর্থবছরের বাজেটে নতুন ইকোনমিক সোশ্যাল অর্ডার প্রয়োজন। এলডিসি থেকে উত্তরণের প্রস্তুতি শেষ করতে হবে। সরকারের ঋণ ও দায়, বাজার, সুশাসন, প্রতিষ্ঠান সংস্কার রাজস্ব, আদায়ে কাঠামো বিষয়ে বিশেষ নজর দরকার। তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনী ইশতিহারে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও দীর্ঘস্থায়ী প্রবৃদ্ধি, সামাজিক কল্যাণ বিষয়ে রাজনৈতিক দলের অঙ্গীকার থাকা প্রয়োজন।

তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, নির্বাচনের আগে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে কিছু প্রকল্প নেওয়া হয় রাজনৈতিক বিবেচনায়। এ ধরনের প্রকল্প নেওয়ার ক্ষেত্রে এখন সতর্ক থাকা দরকার। অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প নেওয়া ঠিক হবে না।

স্টকমার্কেটবিডি.কম/

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *