ব্যক্তিগত গাড়ি ও বিলাসপণ্য আমদানিতে কঠোর কেন্দ্রীয় ব্যাংক

স্টকমার্কেটবিডি প্রতিবেদক :

চলতি অর্থবছরের প্রথম নয় মাসেই দেশের আমদানি ব্যয় ৬১ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। রেকর্ড সৃষ্টি করা এ আমদানি ব্যয় চাপে ফেলেছে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে। ডলারসহ বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে সংকট তৈরি হওয়ায় অবমূল্যায়নের শিকার হচ্ছে বাংলাদেশী মুদ্রা। এ অবস্থায় ব্যক্তিগত গাড়িসহ বিলাসীপণ্য আমদানির পথ আরো কঠোর করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

নতুন নিয়ম অনুযায়ী, এখন থেকে মোটর কার (সেডান কার, এসইউভি), হোম অ্যাপ্লায়েন্স হিসেবে ব্যবহূত ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক সামগ্রীর আমদানি ঋণপত্রের ন্যূনতম নগদ মার্জিন হবে ৭৫ শতাংশ। আর নিত্যপ্রয়োজনীয় নয়— এমন পণ্যের নগদ মার্জিন নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে ৫০ শতাংশ।

শিশুখাদ্য, অত্যাবশ্যকীয় খাদ্যপণ্য, জ্বালানি, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক স্বীকৃত জীবন রক্ষাকারী ওষুধ ও সরঞ্জামসহ চিকিৎসাসংক্রান্ত কাজে ব্যবহূত দ্রব্য, উৎপাদনমুখী স্থানীয় শিল্প ও রফতানিমুখী শিল্পের জন্য সরাসরি আমদানীকৃত মূলধনি যন্ত্রপাতি ও কাঁচামাল, কৃষি খাতসংশ্লিষ্ট পণ্য এবং সরকারি অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত প্রকল্পে ব্যবহারের জন্য আমদানীকৃত অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আমদানির ঋণপত্রকে এ নির্দেশনার বাইরে রাখা হয়েছে।

বিলাসপণ্যের আমদানি কমাতে এপ্রিলেই সক্রিয় হয় বাংলাদেশ ব্যাংক। গত ১১ এপ্রিল বিলাসপণ্য আমদানিতে ন্যূনতম নগদ মার্জিন ২৫ শতাংশ নির্ধারণ করে দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছিল। এর মাত্র এক মাসের ব্যবধানে আগের অবস্থান থেকে সরে এসে আরো কঠোর অবস্থান নিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ওই প্রজ্ঞাপন দেয়ার আগ পর্যন্ত ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে মার্জিনের হার নির্ধারণের নির্দেশনা ছিল। ২০০৩ সালে ‘আমদানি ঋণপত্র স্থাপনের ক্ষেত্রে নগদ মার্জিন সংরক্ষণ’ বিষয়ে প্রজ্ঞাপনে বলা ছিল, আমদানি ঋণপত্র স্থাপনের ক্ষেত্রে ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে মার্জিনের হার নির্ধারণ করতে হবে।

আগের সব নির্দেশনা বাতিল করে বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, ১১ এপ্রিলের প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে শিশুখাদ্য, জ্বালানিসহ অত্যাবশ্যকীয় খাদ্যপণ্য, জীবন রক্ষাকারী ওষুধ, স্থানীয় ও রফতানিমুখী শিল্প এবং কৃষি খাতসংশ্লিষ্ট আমদানি ব্যতীত অন্য সব পণ্য আমদানির বিপরীতে ঋণপত্র স্থাপনের ক্ষেত্রে নগদ মার্জিন হার ন্যূনতম ২৫ শতাংশ সংরক্ষণের জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল। কিন্তু কভিড-১৯-এর প্রভাব এবং বহির্বিশ্বে যুদ্ধাবস্থার কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এজন্য দেশের মুদ্রা ও ঋণ ব্যবস্থাপনা অধিকতর সুসংহত রাখার জন্য আমদানি ঋণপত্রের নতুন নির্দেশনা দেয়া হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, দেশের আমদানি ব্যয় এরই মধ্যে রেকর্ড ছুঁয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রাবাজারও অস্থিতিশীল। নতুন এ নির্দেশনা দেয়ার ফলে দেশে গাড়িসহ বিলাসপণ্যের আমদানি নিরুৎসাহিত হবে। ফলে কমে আসবে দেশের আমদানি ব্যয়। এর মাধ্যমে ডলারসহ বৈদেশিক মুদ্রার বিদ্যমান সংকটও কিছুটা কমবে।

স্টকমার্কেটবিডি.কম/

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *