মার্ক বিডির শেয়ার কেলেঙ্কারি মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা

tribunal-picনিজস্ব প্রতিবেদক :

১৯৯৬ ও ২০১০ সালের শেয়ারবাজার ধস ও অন্যান্য শেয়ার কেলেঙ্কারির দায়ে দায়েরকৃত মামলা দ্রুত নিষ্পত্তিতে শেয়ারবাজার বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠিত হয়েছে দেড় বছর আগে। ছয় মাসের মধ্যে ২৩টি মামলা এখানে স্থানান্তরিত হলেও মাত্র পাঁচটি মামলা নিষ্পত্তির পর কার্যক্রম প্রায় বন্ধ হয়ে যায় এ আদালতের। প্রভাবশালীদের মামলাগুলো উচ্চ আদালত কর্তৃক স্থগিত হয়ে যাওয়ায় এক বছরের বেশি সময় অলস সময় কাটায় বিশেষ ট্রাইব্যুনাল। তবে সম্প্রতি দুটি মামলার মাধ্যমে আবার সক্রিয় হয়েছে এ ট্রাইব্যুনাল।

গত বৃহস্পতিবার মার্ক বাংলাদেশ শিল্প অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানির (মার্ক বিডি) শেয়ার কেলেঙ্কারি মামলায় প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যানসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে বাদী ও সাক্ষীকে আদালতে উপস্থিত হওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন রাজধানীর হাউজ বিল্ডিং ফিন্যান্স ভবনে স্থাপিত বিশেষ আদালত।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, নিম্ন আদালত থেকে স্থানান্তরের পর গতকাল চার্জ গঠন শেষে এ আদেশ দেন বিচারক আকবর আলী শেখ। আদালতে উপস্থিত না হওয়ায় মামলার আসামি মার্ক বিডির চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইমাম মুলকুতুর রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল হাই এবং পরিচালক সালমা আক্তারের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন তিনি। আর মামলার বাদী বিএসইসির উপপরিচালক এএসএম মাহমুদুল হাসান ও সাক্ষী তত্কালীন নির্বাহী পরিচালক আনোয়ার উল কবির ভূঁইয়াকে আদালতে উপস্থিত হওয়ার জন্যও সমন জারি করেন আদালত।

মামলায় বাদীপক্ষের প্যানেল আইনজীবী মাসুদ রানা সাংবাদিকদের জানান, মার্ক বিডির মামলাটি নিম্ন আদালতে থাকাকালীন আসামিরা জামিনে মুক্ত ছিলেন। ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরের পর শুনানি ও গতকালের চার্জ গঠনের সময় আদালতে উপস্থিত না থাকায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। আগামী ৯ এপ্রিল পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে। এর মধ্যে আসামিরা আত্মসমর্পণ না করলে তাদের অনুপস্থিতিতে বিচারকাজ শুরুর সম্ভাবনা রয়েছে।

এর আগে মার্ক বিডির শেয়ার কেলেঙ্কারির মামলাটি গত ৬ নভেম্বর ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালত থেকে বিশেষ ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরিত হয়। ট্রাইব্যুনালে মামলাটির বিচার কার্যক্রম শুরু করার লক্ষ্যে চার্জ গঠনের বিষয়ে শুনানির জন্য ২৮ নভেম্বর পূর্বনির্ধারিত তারিখ ছিল। ওইদিন চার্জ গঠনের জন্য আদালতের কাছে সময় চেয়ে আবেদন করেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) আইনজীবী। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত ৯ জানুয়ারি চার্জ গঠনের দিন ধার্য করলে ওইদিনও ফের সময় চেয়ে আবেদন করে বিএসইসি। এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল নির্ধারিত দিনে চার্জ গঠন করেন আদালত।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, মার্ক বাংলাদেশ শিল্প অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের নামে আসামিরা ১৯৯৬ সালের অক্টোবরে প্রকাশিত প্রসপেক্টাসে কোম্পানির অর্থনৈতিক সম্ভাবনার বিষয়ে মিথ্যা তথ্য উপস্থাপনের মাধ্যমে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের শতভাগ প্রিমিয়ামে শেয়ার কিনতে প্রলুব্ধ করেন। প্রসপেক্টাসে আইপিও তহবিলের ব্যবহার সম্পর্কে যে অঙ্গীকার করেছে, তাও পালন করা হয়নি। অস্তিত্বহীন প্লান্ট এবং মেশিনারিজকে কোম্পানির সম্পদ হিসেবে দেখানো এবং মালিকানাধীন প্লান্ট ও যন্ত্রপাতির মূল্য বেশি দেখিয়ে প্রসপেক্টাস তৈরি করেছেন আসামিরা। কোম্পানির প্রসপেক্টাস অনুযায়ী সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (তত্কালীন) যে শর্তের অধীনে শতভাগ প্রিমিয়ামে শেয়ার বিক্রির সম্মতি দিয়েছিল, পরবর্তীতে তাও পরিপালন করেনি কোম্পানিটি।

স্টকমার্কেটবিডি.কম/এমএ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *