রোহিঙ্গাদের জন্য সরকারের প্রয়োজন ৭,১২৬ কোটি টাকা : সিপিডি

cpdস্টকমার্কেট প্রতিনিধি :

বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর থেকে আগামী বছরের জুন পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের পেছনে সরকারের ব্যয় হবে মাথাপিছু প্রায় পাঁচ হাজার ৯৩৯ টাকা করে। এজন্য ওই সময় পর্যন্ত সরকারের প্রয়োজন হবে প্রায় সাত হাজার ১২৬ কোটি টাকা। এই পরিমাণ অর্থ চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটের এক দশমিক ৮ শতাংশ; জিডিপির দশমিক ০৩ শতাংশ এবং মোট রাজস্বের দুই দশমিক ৫ শতাংশ।

শনিবার (১১ নভেম্বর) রাজধানীর একাটি হোটেলে সিপিডি আয়োজিত ‘রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশের করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে এই তথ্য তুলে ধরা হয়।

সিপিডির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. রেহমান সোবহানের সভাপতিত্বে সেমিনারে বক্তব্য রাখেন পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক, সিপিডির বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবুল হোসেন, ঢাকায় যুক্তরাজ্যের ডেপুটি হাইকমিশনার ডেবিট এসলে, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার (অব.) শাখাওয়াত হোসেন, বিশ্ব বুদ্ধিস্ট ফেডারেশনের সভাপতি ড. সুকমল বড়ুয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ প্রমুখ।

সেমিনারে মূল প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন। প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্তমানে যেসব রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অবস্থান করছে তাদের জন্য চলতি বছরের মার্চ থেকে আগস্ট পর্যন্ত ৬ মাসে সরকারের কমপক্ষে এক হাজার ৩৫৬ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। যা বাজেটের দশমিক ৪ শতাংশ। আর মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) দশমিক ১ শতাংশ। আর সেপ্টেম্বর থেকে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৬ মাসে আরও দুই হাজার কোটি টাকা ব্যয় হবে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সিপিডি ও জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনের (ইউএনএইচসিআর) গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, গত ২৫ আগস্ট থেকে ৫ নভেম্বর পর্যন্ত ৮ লাখ ২১ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।

ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, রোহিঙ্গা সংকটের কারণে বাংলাদেশ বহুমাত্রিক সমস্যায় পড়েছে। রোহিঙ্গা সংকটের সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে অর্থনীতি, সমাজ ও পরিবেশের ওপর। এই তিন খাতে বাংলাদেশ নানা চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে। অর্থনীতিতে প্রভাব পড়ায় জীবনযাপনের ব্যয় বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থানের সংকট তৈরি হয়েছে।

তিনি বলেন, কক্সবাজারে মোট বনভূমির পরিমাণ ২০ লাখ ৯২ হাজার ১৬ একর। রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের কারণে এরইমধ্যে তিন হাজার ৫০০ একর বনভূমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রোহিঙ্গা শরণার্থী অধ্যুষিত এলাকায় বায়ু দূষণ, ভূমিধসের মতো ঘটনা ঘটছে।

এ সংকট নিরসনে সিপিডির পক্ষ থেকে কয়েকটি সুপারিশ তুলে ধরে ফাহমিদা খাতুন বলেন, রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে।

অনুষ্ঠানে ড. দেবপ্রিয় বলেন, বিশ্বব্যাপী ৬৫ মিলিয়ন মানুষ এখন উদ্বাস্তু। একক দেশ হিসেবে বাংলাদেশ চতুর্থ সর্বোচ্চ আশ্রয়দাতা। এ সমস্যা সমাধানে এখনই স্বল্প ও মধ্য মেয়াদি উদ্যোগ নিতে হবে।

স্টকমার্কেটবিডি.কম/এমএইচ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *