২০১৫ সালে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা পাচার

money laldarinস্টকমার্কেটবিডি প্রতিবেদক :

বাংলাদেশ থেকে ২০১৫ সালে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা পাচার হওয়ার তথ্য দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেগ্রিটি (জিএফআই)। সংস্থাটি গতকাল সোমবার বৈশ্বিকভাবে ১৪৮টি দেশের অর্থ পাচারের তথ্য প্রকাশ করেছে।

কয়েক বছর ধরে জিএফআই এ ধরনের অর্থ পাচারের প্রতিবেদন প্রকাশ করে আসছে। এবারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশ থেকে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের মাধ্যমে ৫৯০ কোটি ডলারের সমপরিমাণ অর্থ পাচার হয়েছে। বর্তমান বাজারদরে (৮৪ টাকা প্রতি ডলার হিসাবে) এই অর্থের পরিমাণ ৪৯ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা। আর গতবারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৪ সালে দেশ থেকে ৯১১ কোটি ডলার পাচার হয়েছিল। বর্তমান বাজার ধরে যার পরিমাণ সাড়ে ৭৬ হাজার কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে টাকা পাচার কমেছে প্রায় ২৭ হাজার কোটি টাকা।

এবারের জিএফআইয়ের প্রতিবেদনে ১৪৮টি উদীয়মান ও উন্নয়নশীল দেশের অর্থ পাচারের তথ্য দেওয়া হয়েছে। সবচেয়ে বেশি অর্থ পাচার হয় চীন থেকে। এ তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ১৯ তম।

মূলত আমদানি-রপ্তানির সময়ে পণ্য ও সেবার প্রকৃত মূল্য কী পরিমাণ গোপন করা হয়, তার হিসাবের ভিত্তিতে অর্থ পাচারের প্রতিবেদন তৈরি করে জিএফআই। এবারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৫ সালে বিদেশ থেকে বাংলাদেশে অবৈধ পন্থায় ২৮০ কোটি ডলার এসেছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ সাড়ে ২৩ হাজার কোটি টাকা।

দেশ থেকে ২০১৪ সালের চেয়ে পরের বছর অর্থ পাচার কম হওয়া প্রসঙ্গে আহসান এইচ মনসুর বলেন, সাধারণত নির্বাচনের সময়ে অর্থ পাচার বেড়ে যায়। আবার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে অর্থ পাচার কমে আসে।

এবার দেখা যাক, ২০১৫ সালে বাংলাদেশ থেকে পাচার করা প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা দিয়ে কী করা যেত। ওই এক বছরের পাচার করা টাকা দিয়ে পদ্মা সেতু ও মেট্রোরেল নির্মাণের মতো দুটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা যেত। পদ্মা সেতু প্রকল্পে খরচ ধরা হয়েছে ৩০ হাজার কোটি টাকা। আর মেট্রোরেল প্রকল্পের খরচ প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা।

গতবার জিএফআইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ২০০৫ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ১০ বছরে প্রায় ৭ হাজার ৫৮৫ কোটি ডলার বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়েছে। ২০১৫ সালে পাচার হয়েছে আরও ৫৯০ কোটি ডলার। সেই হিসাবে গত ১১ বছরে মোট পাচার হয়েছে ৮ হাজার ১৭৫ কোটি ডলার। বর্তমান বাজারদরে এর মূল্যমান ৬ লাখ ৮৬ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। যা চলতি অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) প্রায় পৌনে চার গুণ বেশি। এবার ১ লাখ ৮০ হাজার ৮৬৯ কোটি টাকার এডিপি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

গতবারের মতো জিএফআইয়ের এবারের প্রতিবেদনেও একটি দেশের মোট আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের কত শতাংশ পর্যন্ত অর্থ পাচার হয়েছে, সেই তথ্য প্রকাশ করেছে। জিএফআই বলছে, ২০১৫ সালে উন্নত দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের মোট আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের সাড়ে ১৭ শতাংশ বিদেশে পাচার হয়ে যেতে পারে। ওই বছর বাংলাদেশ থেকে উন্নত দেশগুলোতে ৩ হাজার ৩৭৩ কোটি ডলারের সমপরিমাণ বাণিজ্য হয়েছে। সেই হিসাবে বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়েছে ৫৯০ কোটি ডলার।

স্টকমার্কেটবিডি.কম/এম/জেড

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *