নিজস্ব প্রতিবেদক :
শেয়ারবাজারে চলমান মন্দায় ঝুঁকি এড়াতে শেয়ার কেনাবেচার পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছেন বিদেশি বিনিয়োগকারীরা। শেয়ারবাজারে কমে যাচ্ছে বিদেশি বিনিয়োগ। গত জুলাই মাসে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের লেনদেন কমেছে ৫৩ দশমিক ২২ শতাংশ।
অডিএসই সূত্রে জানা গেছে, সদ্য বিদায়ী জুলাই মাসে শেয়ারবাজারে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের লেনদেন কমেছে ৫৩ দশমিক ২২ শতাংশ। এ সময়ে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ৪৫০ কোটি ৯৭ লাখ ৪১ হাজার ৫৩৮ টাকার শেয়ার লেনদেন করেন। এর আগের মাসে তাদের এ লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৯৬৪ কোটি ২২ লাখ ৭ হাজার ৬২১ টাকা। অর্থাৎ এক মাসের ব্যবধানে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের লেনদেন কমেছে ৫১৩ কোটি ২৪ লাখ ৬৬ হাজার ৮৩ টাকা।
অন্যদিকে জুলাই মাসে শেয়ারবাজারে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের নিট বিনিয়োগ ১৮ দশমিক ১৩ শতাংশ কমেছে। আলোচ্য সময়ে বিদেশি বিনিয়োগের নেট পজিশন দাঁড়ায় ৮৩ কোটি ২১ লাখ ৬৬ হাজার ৮৮ টাকা। আগের জুন মাসে এর পরিমাণ ছিল ১০১ কোটি ৬৪ লাখ ৬ হাজার ২৩১ টাকা। অর্থাৎ এক মাসে বিনিয়োগ কমেছে ১৮ কোটি টাকা। ডিএসই সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
জুন মাসে বিদেশিরা ১৮৩ কোটি ৮৭ লাখ ৮৭ হাজার ৭২৫ টাকার শেয়ার বিক্রি করে। এ সময়ে তারা ২৬৭ কোটি ৯ লাখ ৫৩ হাজার ৮১৩ কোটি টাকার শেয়ার কিনেছেন। অন্যদিকে আগের মাসে বিদেশিরা ৫৩২ কোটি ৯৩ লাখ ৫১ হাজার ৯২৬ টাকার শেয়ার কিনেছিলেন। সদ্য বিদায়ী ২০১৪-১৫ অর্থবছরে বিদেশিরা ৬ হাজার ৯৯১ কোটি টাকা লেনদেন করে। এর মধ্যে ৪ হাজার ১৪৫ কোটি টাকার শেয়ার কেনেন। বিপরীতে বিক্রি করেন ২ হাজার ৮৪৫ কোটি টাকার শেয়ার। ফলে নেট পজিশন দাঁড়ায় ১ হাজার ২৯৯ কোটি টাকা।
এর আগের বছর অর্থাৎ ২০১৩-১৪ অর্থবছরে বিদেশিরা ৫ হাজার ৮৯ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন করেন। এ সময়ে তাদের শেয়ার কেনার পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ৭৯১ কোটি টাকা এবং বিক্রি ছিল ১ হাজার ২৯৭ কোটি টাকা। ফলে বিনিয়োগের নেট পজিশন ছিল ২ হাজার ৪৯৩ কোটি টাকা।
সূত্র জানায় বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে ২০১৩ সালের শেষের দিকে উদ্যোগ নিয়েছিল বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এর মধ্যে বিনিয়োগ পদ্ধতি এবং বিদ্যমান আইনকে আরও সহজ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। এ লক্ষ্যে গঠিত কমিটি মোট ১৪টি সুপারিশ করে।
এখোনো বেশিরভাগ সুপারিশই বাস্তবায়িত হয়নি। ফলে বাজারে কাক্সিক্ষত পরিমাণে বিদেশি বিনিয়োগ আসেনি। সম্প্রতি উল্লেখযোগ্য হারে বিদেশি বিনিয়োগ কমতে শুরু করেছে।
সংশ্লিষ্টরা বলেন, বিদেশি বিনিয়োগ বাজারের গভীরতা বাড়ায়। কয়েকটি বিষয় বিবেচনা করে বিদেশিরা বিনিয়োগ করে। এর মধ্যে রয়েছে বাজারের বর্তমান অবস্থা, ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা, আইন কানুন এবং কারসাজির করলে তার বিচার কত দ্রুত হয় সেটি বিদেশিরা বিবেচনা করেন। ২০১০ সালের পর বাজার অব্যাহতভাবে নেতিবাচক অবস্থানে রয়েছে। এরপর ওইভাবে দৃশ্যমান উন্নয়ন হয়নি। বিপরীতে মুম্বাই এবং সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জের অবস্থা দিন দিন ভালো হচ্ছে।
স্টকমার্কেটবিডি.কম/বি/এম