বন্দরে অনলাইন নিলামে উঠছে বিলাসবহুল ১১২ গাড়ি

স্টকমার্কেটবিডি প্রতিবেদক :

চট্টগ্রাম বন্দরে দীর্ঘদিন আটকে থাকা ১১২টি বিলাসবহুল গাড়ি এবার অনলাইন নিলামে তোলা হচ্ছে। আগামী বৃহস্পতিবার এ নিলাম অনুষ্ঠিত হবে। আগামীকাল বুধবার সকাল ৯টা থেকে নিলামে অংশগ্রহণে আগ্রহীদের কাছ থেকে দরপত্র গ্রহণ করা হবে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও মোংলা কাস্টমস অফিস ও চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে টেন্ডার বাক্সে সরাসরি খামবদ্ধ দরপত্র জমা দেওয়া যাবে। এ ছাড়া জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও কাস্টম হাউজের ওয়েবসাইটে ই-অকশন লিংকেও অনলাইনে দরপত্র দাখিল করা যাবে।

কাস্টমস সূত্র জানায়, যেসব বিলাসবহুল গাড়ি এবারের অনলাইন নিলামে তোলা হচ্ছে, সবগুলোই অন্তত এক দশক আগে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে কারনেট সুবিধায় দেশে আনা হয়েছিল। পরে কারনেট সুবিধা অপব্যবহারের বিষয়ে কাস্টমসের কড়াকড়ির কারণে বিশে^র বিভিন্ন নামীদামি ব্র্যান্ডের এসব গাড়ি যথাযথ প্রক্রিয়ায় খালাস না করে ফেলে রাখা হয় বন্দরে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ৪ কোটি ৩০ লাখ টাকা দামের গাড়িও রয়েছে। নিলামের জন্য নির্ধারিত গাড়িগুলোর মধ্যে ২৬টি মিতশুবিশি, ২৫টি মার্সিডিজ বেঞ্জ, ২৫টি বিএমডব্লিউডি, ৭টি ল্যান্ড রোভার, ৭টি ল্যান্ড ক্রুজার, ৬টি লেক্সাস, ৩টি জাগুয়ার, ১টি সিআরভি, ২টি রেঞ্জ রোভার, ১টি টয়োটা, ৪টি ফোর্ড, ১টি পাজেরো, ১টি দাইয়ু। ২৭ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত নিলামে অংশগ্রহণে আগ্রহীদের জন্য গাড়িগুলো প্রদর্শনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। মোট ১১২ লটে এসব গাড়ি নিলাম দেওয়া হবে।

জানা যায়, ইতিপূর্বে চার দফা প্রচলিত পদ্ধতিতে গাড়িগুলো নিলামে তোলা হয়। কিন্তু কাক্সিক্ষত দর না পাওয়ার কারণে সেসব নিলাম বাতিল করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। অভিযোগ রয়েছে, কাস্টমস নিলামকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা সিন্ডিকেটের কারসাজির কারণে নিলামে গাড়িগুলোর প্রত্যাশিত দর উঠছে না। এবারই প্রথম গাড়িগুলো অনলাইন নিলামে তোলা হচ্ছে। এতে সারা দেশের মানুষ নিলামে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পাবে।

এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের কমিশনার মো. ফখরুল আলম বলেন, ‘এর আগে প্রচলিত পদ্ধতিতে চার দফা নিলামে গাড়িগুলোর যে দর উঠেছিল তা ভিত্তিমূল্যের চেয়ে অনেক কম; যা ছিল পুরোপুরি অস্বাভাবিক। তাই নিলামগুলো বাতিল করা হয়। এবার দেশের সব জায়গা থেকে নিলামে অংশগ্রহণের সুযোগ রেখে অনলাইন নিলামের পাশাপাশি ও প্রচলিত পদ্ধতিতেও নিলাম অনুষ্ঠিত হবে। আমরা আশা করছি, অনলাইন নিলামের কারণে এবার অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রতিযোগিতামূলক দর পাওয়া যাবে।’

সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকার কারণে এর মধ্যে অনেক গাড়িই অকেজো হয়ে পড়েছে। এসব গাড়ি কেনার পর চলাচল উপযোগী করা যাবে কি না, গাড়ির যন্ত্রাংশ সুলভে পাওয়া যাবে কি না, তা নিয়ে ক্রেতাদের মধ্যে একধরনের সংশয় রয়েছে। তা ছাড়া নিলামে কেনার পর গাড়িগুলো ব্যবহারের জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ছাড়পত্রও লাগবে। সেটারও ব্যবস্থা করতে হবে ক্রেতাদের। গাড়ি কেনার ব্যাপারে অনেকের আগ্রহ থাকলেও এসব কারণে আবার পিছিয়ে যাচ্ছে।

কাস্টমস সূত্র জানায়, বাংলাদেশ থেকে ফিরে যাওয়ার সময় অবশ্যই ফেরত নেওয়ার শর্তে শুল্ক আইনে দেওয়া সুবিধা অনুযায়ী পর্যটক, কূটনীতিকসহ বিশেষ ব্যক্তিরা কারনেট সুবিধায় বিনা শুল্কে এসব গাড়ি বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। কিন্তু কাস্টমসের কড়াকড়ির কারণে বন্দর থেকে ছাড় না করিয়ে তা ফেলে রাখা হয় বছরের পর বছর।

স্টকমার্কেটবিডি.কম/আহমেদ

১৮ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন রেমিট্যান্স অক্টোবরে

স্টকমার্কেটবিডি প্রতিবেদক :

প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স কমছেই। সদ্যসমাপ্ত অক্টোবর মাসে ১৬৪ কোটি ৭০ লাখ ডলার বা ১৪ হাজার কোটি টাকা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এই অঙ্ক গত দেড় বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম। আর গত বছরের অক্টোবর মাসের চেয়ে কম ২১ দশমিক ৬৫ শতাংশ। আগের মাস সেপ্টেম্বরের চেয়ে কম এসেছে ৭ শতাংশ। সব মিলিয়ে ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) বাংলাদেশের অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ এই সূচক কমেছে ২০ শতাংশ।

মহামারি করোনাভাইরাসের মধ্যেও অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গত ২০২০-২১ অর্থবছরে ২ হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ (২৪.৮ বিলিয়ন) ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। ওই অঙ্ক ছিল আগের বছরের চেয়ে ৬ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার বা ৩৬ দশমিক ১ শতাংশ বেশি। কিন্তু সেই জোয়ার আর নেই। এখন ঠিক বিপরীত চিত্র দেখা যাচ্ছে। প্রতি মাসেই কমছে রেমিট্যান্স।

গত সেপ্টেম্বর মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ১ হাজার ৭২৬ দশমিক ২৯ মিলিয়ন (১.৭২ বিলিয়ন) মার্কিন ডলার বা ১৪ হাজার ৬৭২ কোটি ৭০ লাখ টাকা। আর আগস্ট মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ১ দশমিক ৮১ বিলিয়ন ডলার বা ১৫ হাজার ৩৮৫ কোটি টাকা। তার আগের মাস জুলাইয়ে এসেছিল ১ দশমিক ৮৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ১৫ হাজার ৯০৭ কোটি টাকা। জুলাই থেকে অক্টোবর চার মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ৫৯ হাজার ৯৬৩ কোটি টাকা।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, গত অর্থবছর করোনাভাইরাস ভয়াবহ আকার নিয়েছিল, সে সময় সবকিছু স্থবির হয়ে পড়ে। তখন অনেক কোম্পানি ও শিল্প প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। এতে প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের কর্মীদের সব দেনা-পাওনা দিয়ে ছাঁটাই করেছিল। সে কারণে অনেক প্রবাসী একবারে হয়তো অনেক বেশি টাকা নিয়ে এসেছিল। এতে প্রবাসী আয় বেড়ে যায়। এখন আবার তারা নতুন করে কাজে যোগ দিয়েছেন, কাজ করে নির্দিষ্ট বেতনের অংশ পাঠাচ্ছেন বলে কম মনে হচ্ছে। যেহেতু সবকিছু ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে, আগামী দিনেও আবারও প্রবাসী আয় বাড়বে বলে মনে করেন তিনি।

স্টকমার্কেটবিডি.কম/আহমেদ