এবার চামড়ার বাজার ভালো, দাবি ব্যবসায়ীদের

স্টকমার্কেটবিডি প্রতিবেদক :

সরকার নির্ধারিত দামে কোরবানির পশুর চামড়া কেনা-বেচা না হলেও গত বছরের তুলনায় এবার চামড়ার বাজার মোটামুটি ভালো বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

তারা জানান, বাজারে কাঁচা চামড়ার চাহিদা রয়েছে। ফলে দেশের কোথাও কম দামে চামড়া বিক্রি বা নদীতে ফেলার মতো ঘটনা ঘটেনি।

বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আফতাব খান বলেন, গত বছরের তুলনায় এখন পর্যন্ত চামড়ার বাজার ভালো।

তিনি বলেন, ‘৩০ বর্গফুটের গরুর চামড়া ৯০০ টাকায় এবং ২০-২২ ফুটের চামড়া ৬০০ টাকায় কেনা হচ্ছে।’

এ ছাড়া প্রতিটি ছাগলের চামড়া ১০ থেকে ২০ টাকায় কেনা-বেচা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

‘এখন পর্যন্ত যা দেখছি, তাতে গত বছরের তুলনায় এ বছর বাজার ভালো হবে।’

রাজধানীর পোস্তার চামড়া ব্যবসায়ী আফতাব খান বলেন, ‘লবণের দাম, শ্রমের দামসহ নানা ধরনের খরচ অনেক বেড়ে গেছে। এটা একটা চিন্তার বিষয়।’

রাজধানীর মিরপুর আবাসিক এলাকার একটি মাদ্রাসার পক্ষ থেকে চামড়া সংগ্রহের দায়িত্বে থাকা এক ব্যক্তি দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, ২০-২৫ বর্গফুটের গরুর চামড়া ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকায় কিনছেন।

‘আমরা এখনো বিক্রি করিনি। একটু বেশি দামে বিক্রি করতে চাই। এখন পর্যন্ত যা পরিস্থিতি, তাতে গত বছরের তুলনায় কিছুটা ভালো দাম পাব’, জানান তিনি।

দেশের কাঁচা চামড়ার অন্যতম কেন্দ্র সাভারের হরিণধরা বাজারের সিরাজগঞ্জ ট্রেডার্সের মালিক জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘২৪ বর্গফুট গরুর চামড়া ৮০০ টাকায় এবং ২০-২২ বর্গফুটের চামড়া ৬০০ টাকায় কেনা হচ্ছে। এ ছাড়া ছাগলের চামড়া প্রতিটি ১০-২০ টাকায় কেনা-বেচা হচ্ছে।’

‘কাঁচা চামড়া সংগ্রহের পর লবণ দিয়ে ৩ মাস পর্যন্ত সংরক্ষণ করতে গত বছরের তুলনায় এবার ৩০০ টাকা বেশি খরচ হবে। আমি চামড়া কিনতে ভয় পাচ্ছি। তার কারণ কোম্পানিগুলো বেশি দামে চামড়া কেনে না। আমার মনে হচ্ছে না এবার ব্যবসা ভালো হবে।’

জহুরুল বলেন, ‘এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি যা দাঁড়িয়েছে, তাতে মনে হচ্ছে না কোম্পানিগুলো আমাদের কাছ থেকে সরকার নির্ধারিত মূল্যে চামড়া কিনবে।’

তবে, সিরাজগঞ্জের গাড়াদহ গ্রাম উন্নয়ন কমিটির সদস্য মোকলেছুর রহমান জানান, গত বছরের তুলনায় এবার কাঁচা চামড়ার দাম কিছুটা ভালো।

তিনি বলেন, ‘এ বছর আমরা ৪৪টি গরুর চামড়া এবং ৬০টি ছাগলের চামড়া বিক্রি করেছি। প্রতিটি গরুর চামড়া ৬০০ টাকা এবং ছাগলের চামড়া ২৫ টাকা করে বিক্রি করা হয়েছে।’

‘আমরা গত বছর গরুর চামড়া প্রতিটি ৫০০ টাকায় বিক্রি করেছি। কিন্তু ছাগলের চামড়ার দাম ছিল না।’

রহমান জানান, গত বছর তারা কাঁচা চামড়ার দুএকজন ক্রেতা পেয়েছিলেন কিন্তু এবার মাত্র একজন ক্রেতা তাদের কাছে চামড়া কিনতে গেছেন।

এ বছর লবণ দেওয়া গরুর চামড়ার দাম ঢাকায় প্রতি বর্গফুট ৪৭-৫২ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ৪০-৪৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া সারাদেশে পুরুষ ছাগলের চামড়া প্রতি বর্গফুট ১৮-২০ টাকা এবং মাদি ছাগলের চামড়া প্রতি বর্গফুট ১২-১৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

গত বছর লবণা দেওয়া গরুর কাঁচা চামড়ার দাম ঢাকায় প্রতি বর্গফুট ৪০ থেকে ৪৫ টাকা এবং রাজধানীর বাইরে ৩৩ থেকে ৩৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। ছাগলের চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল প্রতি বর্গফুট ১৫-১৭ টাকা।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ধারণা করছে, চলতি বছর প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ পশু কোরবানি হতে পারে। যা গত বছরের তুলনায় ২ লাখ বেশি।

সম্প্রতি বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. শাখাওয়াত উল্লাহ জানান, এবারের কোরবানির ঈদে তাদের ১ কোটি পশুর কাঁচা চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্য রয়েছে।

গত বছরের মতো, সরকার কাঁচা চামড়া রপ্তানি করতে চাওয়া বিভিন্ন কোম্পানির আবেদন অনুমোদন করছে, যাতে আরও চাহিদা তৈরি করা যায় এবং ভালো দাম পাওয়া যায়। গত বছর সরকার ১৪টি কোম্পানিকে ২ কোটি ৩০ লাখ বর্গফুট কাঁচা চামড়া রপ্তানির অনুমতি দেয়।

এই বছর, মন্ত্রণালয় একই সংখ্যক কোম্পানিকে প্রায় ৬০ লাখ বর্গফুট কাঁচা চামড়া রপ্তানির অনুমতি দিতে পারে।

স্টকমার্কেটবিডি.কম/////

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *