ডিএসইর ব্যর্থতায় তামহা সিকিউরিটিজের অর্থ লোপাটের অভিযোগ

স্টকমার্কেটবিডি প্রতিবেদক :

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্যর্থতায় তামহা সিকিউরিটিজের মালিকপক্ষ জালিয়াতি করে বিনিয়োগকারীদের অর্থ লোপাট করেছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। এসময় তারা শেয়ারবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) বিরুদ্ধেও অভিযোগ করেন।

বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরাম (সিএমজেএফ) কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করে তামহা সিকিউরিটিজের ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের পক্ষে এ অভিযোগ করেন ফখরুল ইসলাম।

এসময় তার সঙ্গে ছিলেন ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারী মজিবুর রহমান এবং রওশন আরা হোসেন।

ফখরুল ইসলাম লিখিত বক্তব্যে বলেন, তামহা সিকিউরিটিজের মালিক ডুপ্লিকেট সফটওয়্যার ব্যবহার করে বিনিয়োগকারীদের সব শেয়ার বিক্রি করে দেয়। ২০২১ সালের ২৯ নভেম্বর বিএসইসি সিকিউরিটিজ হাউজটির লেনদেন স্থগিত করে দেয়। পরে আমরা সিডিবিএলে (সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড) যোগাযোগ করে জানতে পারি, আমাদের হিসাবে কোনো শেয়ার নেই।

তিনি বলেন, তামহা কর্তৃপক্ষ আমাদের দুই শতাধিক বিনিয়োগকারীর মোবাইল নম্বর পরিবর্তন করে ডুপ্লিকেট সফটওয়্যার ব্যবহার করে শেয়ার কেনা-বেচার তথ্য আমাদের এসএমএস করে ও মেইলে পাঠাতো। এ কারণে আমারা তাদের জালিয়াতি বুঝতে পারিনি। সিকিউরিটিজ হাউজটির মালিকসহ তার দুই বোন প্রায় শতকোটি টাকা লুটপাট করে নিয়ে যায়।

‘বিনিয়োগকারীদের আবেদন ছাড়া কীভাবে সিডিবিএল মোবাইল নম্বর পরিবর্তন করলো। বিএসইসি এবং ডিএসইর মনিটরিংয়ের অভাবে আমরা সবকিছু হারিয়ে পথে বসে গেছি। নিয়ন্ত্রক সংস্থা যদি ঠিকমতো মনিটরিং করতো তাহলে এ ধরনের জালিয়াতি ঘটত না।’

ক্ষতিগ্রস্ত এই বিনিয়োগকারী বলেন, তামহা সিকিউরিটিজের মালিক ডা. হারুন বিনিয়োগকারীদের এই অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। যত দ্রুত সম্ভব তাকে বিচারের আওতায় এনে আমাদের টাকা ও শেয়ার ফেরতের উদ্যোগ নিতে বিএসইসির চেয়ারম্যানের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।

সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারী মজিবুর রহমান বলেন, আমার বয়স ৭০ বছর। আমি পানি উন্নয়ন বোর্ডে চাকরি করতাম। ২০০৯ সালে আমার পেনশনের ১৩ লাখ টাকা ছেলের হাতে দিই। ছেলের মোবাইল নম্বর দিয়ে শেয়ার লেনদেন করতাম। ছেলের চাকরি হওয়ার পর মাঝেমধ্যে আমিও ব্রোকারেজ হাউজে যেতাম।

তিনি বলেন, এখনো হাউজের পোর্টফোলিওতে শেয়ার আছে দেখাচ্ছে। কিন্তু সিডিবিএলের পোর্টফোলিওতে শেয়ার নেই। আমার স্ত্রী অসুস্থ। এই বয়সে আমি টাকা ফেরত পেতে দ্বারেদ্বারে ঘুরছি। আমার বেঁচে থাকার পথ নেই।

টাকা ফেরত পেতে মামলা করেছেন কি না? এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, মাসে পেনশনের অল্প কিছু টাকা পাই। এই টাকা দিয়ে চলা কষ্টকর। মামলার ব্যয় বহন করার মতো ক্ষমতা আমার নেই। তবে কেউ যদি মামলা করে, তাহলে আমি আমার সাধ্যমতো সহায়তা করার চেষ্টা করবো।

বিএসইসি এবং ডিএসইতে যোগাযোগ করেছেন কি না? সাংবাদিকদের এমন আরেক প্রশ্নের উত্তরে মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, বিএসইসি এবং ডিএসইর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা বারবার বলে আমরা তদন্ত করছি। তদন্ত অনেক দূর এগিয়েছে। এক মাস আগে আমরা ডিএসইর সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। বিএসইসির চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করার জন্য একাধিকবার অ্যাপয়েন্টমেন্ট চেয়ে আবেদন করেছি কিন্তু তিনি হয়তো ব্যস্ততার কারণে সময় দিতে পারছেন না। তবে বিএসইসির কমিশনার আব্দুল হালিম, চেয়ারম্যানের পিএস রাশেদুল ইসলামের সঙ্গে দেখা করেছি।

স্টকমার্কেটবিডি.কম/

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *