ঢাকায় আরও একটি সফটওয়্যার পার্ক হচ্ছে : পলক

স্টকমার্কেটবিডি প্রতিবেদক :

আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশের ভবিষ্যত প্রযুক্তিতে নেতৃত্ব দিতে দক্ষ জনশক্তি তৈরি করা অতি প্রয়োজন। তাই তথ্যপ্রযুক্তি খাতে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করতে প্রাইভেট ইন্ডাস্ট্রি ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট নামে একটি বিশেষ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে ঢাকায় আরও একটি সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক স্থাপনের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। শুক্রবার আইইবি সদর দফতরে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন ঢাকা কেন্দ্র ও বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের যৌথ উদ্যোগে তিনদিনের মেন্টর ডেভলপমেন্ট ক্যাম্প ‘ইউনিবেটর’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী মোঃ আবদুস সবুর, প্রকৌশলীদের শীর্ষ সংগঠন ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন (আইইবি) প্রেসিডেন্ট প্রকৌশলী নুরুল হুদা, হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোসনে আরা আইইবির ঢাকা কেন্দ্রের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মোল্লা মোহাম্মদ আবুল হোসেন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।

অনুষ্ঠানে তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা নতুন একটি প্রকল্প নিয়েছি প্রাইভেট ইন্ডাস্ট্রি ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট’ যেটা প্রাইম নামে অল্পদিনের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থাপন করতে পারব। এ প্রকল্পে আমাদের যে জনতা টাওয়ার সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক আছে, তার পাশে নতুন একটি সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক স্থাপন করা হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে সেন্টার ফর ফোর্থ ইন্ডাস্ট্রি রেভোলিউশন স্থাপন করা হবে, যেখানে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, বিগ ডেটা এ্যানালাইটিকস, ব্লকচেইন, রোবটিকস-এসব বিষয়ে গবেষণা হবে। মেন্টর ডেভলপমেন্ট ক্যাম্প উদ্যেগ নিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ২০ জন মেন্টর নিজ উদ্যেগে এগিয়ে এসেছেন এ অনুষ্ঠানে। ইউনিবেটর ক্যাম্পের মাধ্যমে সুপ্ত প্রতিভাগুলো সামনে নিয়ে আসতে চাই। আমাদের তরুণদের মেধার কোন ঘাটতি নেই, তাদের শুধু সঠিক প্রশিক্ষণ ও সহযোগিতা করা প্রয়োজন। সে কাজটি করার জন্য ইউনিবেটর প্রশিক্ষণ উদ্যোগ কাজ করবে।

জুনায়েদ আহমেদ বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে ভবিষ্যত প্রযুক্তিতে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য দক্ষ জনশক্তি তৈরির নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রতিমন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতু পার হয়ে (মাদারীপুরের শিবচরে) হাতের ডান ৭০ একর জায়গায় শেখ হাসিনা ইনস্টিটিউট অব ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি (সিফট) স্থাপন করা হবে। অর্থাৎ পুরো বিশ্বের যে প্যারাডাইমে সিফট হতে যাচ্ছে, তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে নেতৃত্ব দিতে এ ইনস্টিটিউট তৈরি করতে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

পলক বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে অনেক কিছুই নতুন হচ্ছে, আবার বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে, সেজন্য নতুন যুগের সঙ্গে তাল মেলাতে হবে। নতুন পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে চলতে না পারলে টিকে থাকা কঠিন হবে। হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ ৩৯টি হাইটেক পার্ক তৈরি প্রকল্প হাতে নিয়েছে, যার পাঁচটির কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। এছাড়া ২০১৫ সালে জনতা পার্ক শুরু করা হয়। ছাত্র-ছাত্রীদের যাতে সনদমুখী না হয়ে কর্মমুখী শিক্ষায় অনুপ্রাণিত হয় সেজন্য ২০১৬ সালে ৬৪ জেলায় শেখ কামাল ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপনের পরিকল্পনা নেয়া হয়। তিনি বলেন, এসএসসি ও এইচএসসি পাস করার পর যারা কর্মজীবনে প্রবেশ করতে চায়, তারা যেন একটি ৬ মাসের কোর্স করিয়ে বা ১২ মাসের একটি ডিপ্লোমা কোর্স করে কর্মমুখী শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারে, ফ্রিল্যান্সার বা আউটসোসিং করতে পারে, ঢাকামুখী বা বিদেশমুখী না হয়, সেই লক্ষ্যেই সরকার কাজ করছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে ৮টি শেখ কামাল ‘আইটি ট্রেইনিং এ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার’ নির্মাণ কাজ শেষ হবে, বাকিগুলো আগামী ৫ বছরের মধ্যে নির্মাণ করা হবে। ২০৪১ সাল নাগাদ এসব ট্রেইনিং সেন্টার থেকে ১০ লাখের বেশি তরুণ-তরুণীকে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে এবং ৫ লাখের বেশি কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা হবে। তিনি বলেন, ২০২১ সালে মধ্যে বুয়েট ও চুয়েটে বিজনেস ইনকিউবেটর সেন্টার স্থাপন করা হবে। আমরা ছাত্র-ছাত্রীদের ভেতরে উদ্যোক্তা হওয়ার ইচ্ছা লক্ষ্য করি, তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয় না অনেক সময়। তাদের স্বপ্ন বাস্তবে রূপদান করতে তাদের সহযোগিতা করতে এ ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপন করা হচ্ছে।

স্টকমার্কেটবিডি.কম/এইচ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *