পদ্মা ব্যাংককে নিয়ম মেনেই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমতি : এহসান খসরু

স্টকমার্কেটবিডি প্রতিবেদক :

‘বিদেশি বিনিয়োগ পেতে পদ্মা ব্যাংকের আর্থিক বিবরণী থেকে লোকসানের তথ্য গোপনে বাংলাদেশ ব্যাংক সম্মতি দিয়েছে’ এমন একটি প্রতিবেদন সম্প্রতি কিছু সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। এ নিয়ে আজ রবিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে প্রকৃত তথ্য তুলে ধরে নিজস্ব অবস্থান ব্যাখ্যা করেছে পদ্মা ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। বলা হয়েছে, সব আইন এবং আন্তর্জাতিক অ্যাকাউন্টিং মানদণ্ড মেনেই পদ্মা ব্যাংকে বিদেশি বনিয়োগের অনুমতি দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

পদ্মা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এহসান খসরু বলেছেন, ‘বিদেশি বিনিয়োগ আনতে পদ্মা ব্যাংককে কোনো ছাড় দেয়নি বাংলাদেশ ব্যাংক। বরং পদ্মা ব্যাংকের আর্থিক বিবরণী সুসংহত করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সহায়তা করেছে। ’ তিনি বলেন, ‘বিদেশি বিনিয়োগ আনার প্রক্রিয়া সহজ এবং সরলীকরণের জন্য নিয়মকানুন মেনে ও গবেষণা করে পদ্মা ব্যাংককে আরও ভালো করতে- কেন্দ্রীয় ব্যাংক পদ্মা ব্যাংক কর্তৃপক্ষের উদ্যোগের পথকে মসৃণ করে দিয়েছে। এক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কোনো ছাড় দেয়নি।সব কিছু স্বচ্ছতার সঙ্গে হয়েছে। ’

বিষয়টি নিয়ে টিআইবির বিবৃতি প্রসঙ্গে এহসান খসরু বলেন, “একটি আন্তর্জাতিক সংগঠন এমন একটি স্বচ্ছ উদ্যোগকে ‘প্রতারণামূলক সুবিধা’ বলে আখ্যায়িত করে বিবৃতি দেয়ায় আমি হতবাক হয়েছি। কোনো ধরনের গবেষণা না করে, ভালোভাবে বিচার-বিশ্লেষণ, যাচাই-বাছাই না করে শুধু গণমাধ্যমের প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে কোনো আন্তর্জাতিক সংগঠনের এমন মিথ্যা ও বিভ্রান্তিমূলক বিবৃতি দেয়া বিস্ময়কর ঘটনা। এটাকে আমি স্বচ্ছ একটি প্রতিষ্ঠানের অস্বচ্ছ বিবৃতি বলছি। এ ধরনের উদ্ভট বিবৃতি টিআইবি কোনোভাবেই দিতে পারে না। ”

পদ্মা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ‘নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক পদ্মা ব্যাংককে যে সহায়তা করছে, সেটা বাংলাদেশে নতুন কিছু নয়। এর আগে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংক এবং আইসিবি ইসলামিক ব্যাংককে একই ধরনের সহায়তা করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। ’

বলা হয়েছে, ‘যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া ভিত্তিক বিনিয়োগ ব্যাংক ডেলমর্গান অ্যান্ড কোম্পানি পদ্মা ব্যাংকে ৭০ কোটি ডলারের সমপরিমাণ ৬ হাজার কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগের ব্যবস্থা করার প্রস্তাব দিয়েছে। এর অর্ধেক বিনিয়োগ হবে মূলধন হিসেবে।

বাকি অর্ধেক হবে বন্ড বা অন্য উপায়ে। এই বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতিসহ সব ধরনের নিয়ম-কানুন মেনে পদ্মা ব্যাংক কাজ করছে।

এহসান খসরু আরও বলেন, ‘পদ্মা ব্যাংকের ২০২০ সালের আর্থিক বিবরণী ভালোভাবে দেখে বিশ্লেষণ করে গবেষণা করে- ডেলমর্গান পদ্মা ব্যাংকে বিনিয়োগ করতে রাজি হয়েছে। ব্যাংকটির ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল, এখান থেকে তারা ভালো মুনাফা পাবে। এসব বিচার-বিশ্লেষণ করেই ডেলমর্গান এই ব্যাংকে বিনিয়োগের ব্যবস্থা করে দিচ্ছে। এখানে কোনো ধরনের অস্বচ্ছ তথ্য দেয়া হয়নি। কোনো ধরনের প্রতারণারও আশ্রয় নেয়া হয়নি। গণমাধ্যমে যেসব প্রতিবেদন এসেছে এবং যার ওপর ভিত্তি করে টিআইবি বিবৃতি দিয়েছে, তার সবই মিথ্যা, অসত্য এবং বিভ্রান্তিকর। ’

তিনি বলেন, ‘সদ্য শেষ হওয়া ২০২১ সালের আর্থিক বিবরণী আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করবে পদ্মা ব্যাংক। যা স্বচ্ছতা-জবাবদিহির সঙ্গে তৈরি করা হচ্ছে। এখানে প্রতারণার প্রশ্ন কেন আসছে, আমি বুঝতে পারছি না। সাবেক ফারমার্স ব্যাংক থেকে নতুনভাবে পদ্মা ব্যাংক তার কার্যক্রম শুরু করার পর থেকে কোনো ধরনের প্রতারণা হয়নি; সবকিছু স্বচ্ছতা-জবাবদিহির সঙ্গে হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়ম-কানুন, বিধি-বিধান মেনেই হয়েছে। ’

বিষয়টি নিয়ে এহসান খসরু বলেন, ‘গত চার বছরে আমরা ব্যাংকটির অনেক উন্নতি করেছি। গ্রাহকদের আস্থা অর্জন করেছি, আমানত বেড়েছে। ঋণ বিতরণও করছি আমরা এখন। বাংলাদেশ ব্যাংকও আমাদের কাজে খুশি; আমাদের ওপর আস্থা রেখেছে। ডেলমর্গানও অ্যানালাইসিস করে দেখতে পেরেছে, এই ব্যাংকে বিনিয়োগ করলে তারা ভালো রিটার্ন পাবে। সে কারণেই বিনিয়োগের ব্যবস্থা করছে তারা। বাংলাদেশ ব্যাংকও সেই বিনিয়োগে সব ধরনের সহায়তা করছে। এখানে অস্বচ্ছভাবে কোনো কিছু হচ্ছে না। সব কিছু স্বচ্ছতা-জবাবদিহির সঙ্গেই হচ্ছে। ’

টিআইবির বিবৃতি প্রসঙ্গে পদ্মা ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী এহসান খসরু বলেন, ‘যারা (টিআইবি) স্বচ্ছতা নিয়ে কাজ করে, তারা অস্বচ্ছ ধারণা বা চিন্তা নিয়ে কী করে এ ধরনের বিবৃতি দেয়, আমি বুঝতে পারি না। ’

স্টকমার্কেটবিডি.কম/জেড

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *