রিজার্ভ থেকে ৫৫০০ কোটি টাকা ঋণ প্রদানের সিদ্ধান্ত

স্টকমার্কেটবিডি প্রতিবেদক :

সরকারের অগ্রাধিকার অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পে দেশের রিজার্ভ থেকে ঋণ দেওয়া হবে। সরকারের গ্যারান্টিতে বৈদেশিক মুদ্রায় এ ঋণ দিতে বাংলাদেশ ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট ফান্ড (বিআইডিএফ) বা বাংলাদেশ অবকাঠামো উন্নয়ন তহবিল গঠন করা হয়েছে। রিজার্ভ থেকে এ তহবিলের আওতায় বছরে সর্বোচ্চ ২০০ কোটি ডলার বা স্থানীয় মুদ্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হবে।

সুদের হার হবে সর্বোচ্চ ৪ শতাংশ। এর বাইরে অন্য কোনো ফি বা চার্জ আদায় করা যাবে না। সরকারের অগ্রাধিকার প্রকল্প বাস্তবায়নে বৈদেশিক ঋণের বিকল্প উৎস হিসাবে রিজার্ভ থেকে ঋণ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দেশে প্রথমবারের মতো এ ধরনের তহবিল গঠন করা হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়া এমনকি বিশ্বে এ ধরনের তহবিল গঠন এটাই প্রথম।

সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে তহবিলের কার্যক্রম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করেছেন। একই সঙ্গে প্রথম দিনে সরকারের অগ্রাধিকার পাওয়া উন্নয়ন প্রকল্প পায়রা বন্দরের রাবনাবাদ চ্যানেলের ড্রেজিং প্রকল্পে প্রায় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ দেওয়ার বিষয়ে পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সোনালী ব্যাংকের একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এ চুক্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয়ও স্বাক্ষর করেছে।

রিজার্ভ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক ঋণ দেবে সোনালী ব্যাংককে। সোনালী ব্যাংক দেবে পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষকে। এ ঋণের বিপরীতে গ্যারান্টি দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ। তিন বছরের মধ্যে পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষকে এ ঋণ দেওয়া হবে। এ তিন বছর থাকবে গ্রেস পিরিয়ড। অর্থাৎ ঋণের বিপরীতে কোনো কিস্তি পরিশোধ করতে হবে না।

তিন বছর পর থেকে কিস্তি পরিশোধ শুরু হবে। পরের সাত বছরের মধ্যে এ ঋণ সুদসহ শোধ করতে হবে। ঋণের মোট মেয়াদ হলো ১০ বছর। তবে ঋণের মেয়াদ পরে বাড়ানো হবে কি না, এ বিষয়ে চুক্তিতে কোনো উল্লেখ নেই। ঋণ ব্যবস্থাপনার জন্য সোনালী ব্যাংক একটি কমিশন পাবে।

বাংলাদেশ ব্যাংক প্রকল্পের সম্ভাবনা ও ঝুঁকি তদারকি করবে। সূত্র জানায়, এ তহবিল থেকে ঋণ পেতে হলে সরকারের অগ্রাধিকার পাওয়া অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রকল্প হতে হবে। এর বিপরীতে সরকারের গ্যারান্টি দিলে তবেই ঋণ পাওয়ার যোগ্য হবে। প্রকল্পকে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করতে হবে। দেশি-বিদেশি যেসব উদ্যোক্তা দেশের অবকাঠামো উন্নয়নে বিনিয়োগ করবে, তাদের এ প্রকল্প থেকে ঋণ দেওয়া হবে।

এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সাধারণ অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রকল্পে বাস্তবায়নের বৈদেশিক মুদ্রার জোগান উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে ঋণ হিসাবে অর্থায়ন করা হয়। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে এসব প্রকল্পে অর্থায়ন করতে এর তাত্ত্বিক ও প্রায়োগিক বিষয়াদি পর্যালোচনাসহ দেশের সম্ভাব্য আমদানি ও অন্যসব বৈদেশিক দায় পরিশোধের সক্ষমতা সংক্রান্ত সীমাবদ্ধতা ও ঝুঁকির বিষয়গুলো বিবেচনায় রাখা প্রয়োজন।

দেশের বর্তমান রিজার্ভ ৪ হাজার ৩০০ কোটি ডলার হলেও মধ্যম আয়ের অর্থনীতিতে উত্তরণকালে এটি পর্যাপ্ত কি না, তা নিশ্চিত করে বলা যায় না। বাংলাদেশকে পুরোপুরি উন্নয়নশীল দেশ হিসাবে উন্নীত করতে ব্যাপক হারে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ প্রয়োজন। এ লক্ষ্যে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আস্থা অর্জন এবং বৈদেশিক দায় পরিশোধের সক্ষমতার মানদণ্ড হিসাবে দেশে স্থিতিশীল বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সার্বক্ষণিকভাবে বজায় রাখা জরুরি।

স্টকমার্কেটবিডি.কম/এম

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *