স্টকমার্কেটবিডি প্রতিবেদক :
প্রবাসীদের বৈধ পথে পাঠানো রেমিট্যান্সের ওপর প্রণোদনা বাড়ানো হয়েছে। আগে এ প্রণোদনা ২ শতাংশ ছিল, তবে ২০২২ সালের প্রথম দিন থেকে তা বেড়ে আড়াই শতাংশ করার ঘোষণা দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। গতকাল অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
রেমিটেন্সে সরকারি প্রণোদনার পরিমাণ বাড়ানোর এ বিষয়টিকে প্রবাসী বাংলাদেশী কর্মীদের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে নববর্ষের উপহার হিসেবে উল্লেখ করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মানুষের সার্বিক জীবনমান উন্নয়ন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি, মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেই বিবেচনায় বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশী শ্রমজীবী মানুষের কষ্টার্জিত বৈদেশিক আয় বৈধ উপায়ে দেশে প্রত্যাবাসন উৎসাহিত করার লক্ষ্যে রেমিট্যান্স পাঠানোর বিপরীতে সরকারের ২ শতাংশ প্রণোদনা/নগদ সহায়তা প্রদানের বিদ্যমান হার বাড়িয়ে ২ দশমিক ৫ শতাংশে নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বর্ধিত এ হার চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে।
এর আগে ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রথমবারের মতো রেমিট্যান্সের বিপরীতে ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা বা নগদ সহায়তা প্রদানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। যার কারণে ব্যাংকিং চ্যানেলে অর্থ পাঠানোর পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে ওই অর্থবছরে দাঁড়ায় ১৮ দশমিক ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। যা তার আগের অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ১৩ শতাংশ বেশি।
নভেল করোনাভাইরাসজনিত মহামারীর মধ্যে অপ্রত্যাশিত হারে বেড়েছিল প্রবাসী আয়। অর্থনীতির প্রতিটি সূচক বিধ্বস্ত হলেও চাঙ্গা ছিল রেমিট্যান্স প্রবাহ। ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রবাসীরা রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছিলেন। টাকার অংকে যা ছিল ২ হাজার ৪৭৭ কোটি ডলার। রেমিট্যান্সের এ প্রবৃদ্ধি ছিল ৩৬ শতাংশেরও বেশি।
যদিও চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের শুরু থেকেই রেমিট্যান্সের প্রবৃদ্ধির রথ থেমে গেছে। উল্টো অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) রেমিট্যান্স কমেছে প্রায় ২১ শতাংশ। শুধু তাই নয়, গত নভেম্বর মাসে রেমিট্যান্স আহরণ গত দেড় বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থায় নেমে আসে। এমন পরিস্থিতিতে এ খাতে প্রণোদনা বাড়ানোর ঘোষণা দিল সরকার।
গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত প্রতিবেদনে তথ্য বলছে, নভেম্বর মাসে ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসী বাংলাদেশীরা দেশে ১৫৫ কোটি ৩৭ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। প্রবাসী আয়ের এ অংক গত বছরের নভেম্বরের চেয়ে ২৫ শতাংশ বা ৫২ কোটি ৫০ লাখ টাকা কম। গত বছরের নভেম্বরের রেমিট্যান্স এসেছিল ২০৭ কোটি ৮৭ লাখ ডলার। শুধু তাই নয়, নভেম্বরের রেমিট্যান্সের এ পরিমাণ গত ১৮ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। এর আগে ২০২০ সালের মে মাসের দেশে সর্বনিম্ন ১৫০ কোটি ডলার রেমিট্যান্স আসে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ৮৬০ কোটি ৮৮ লাখ ডলার (বাংলাদেশী মুদ্রায় যার পরিমাণ ৭৩ হাজার ৮৬৪ কোটি টাকা)। যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২২৮ কোটি ৫২ লাখ ডলার বা প্রায় ২১ শতাংশ কম। ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে রেমিট্যান্স আসে ১ হাজার ৮৯ কোটি ৪১ লাখ ডলার। দেশীয় মুদ্রায় যার অংক ছিল ৯২ হাজার ৬০০ কোটি টাকা।
স্টকমার্কেটবিডি.কম/