শেয়ারবাজার কারসাজির বিরুদ্ধে অকুতোভয় যোদ্ধা ছিলেন তিনি

স্টকমার্কেটবিডি ডেস্ক :

আর্থিকখাতের অনাচার, দুরাচার নিয়ে কথা বলার মানুষ দেশে এমনিতেই কম। হাতে গোনা যে কয়েকজন আছেন, তাদের অনেকেই আবার স্পষ্টভাবে নিজের ভাবনাগুলো বলেন না বা বলতে পারেন না। খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ এই জায়গাটায় ব্যতিক্রমী এক ব্যতিক্রম।

ঋণখেলাপীদের বিরুদ্ধে, ব্যাংকিং খাতের সুশাসনের পক্ষে, শেয়ারবাজারের কারসাজির বিরুদ্ধে তার মতো এমন অকুতোভয় যোদ্ধা বাংলাদেশে আর দ্বিতীয়টি ছিল না। অর্থপাচার ও শেয়ারবাজারের কারসাজির বিরুদ্ধে খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ ছিলেন অসম সাহসিকতায় সত্য বলা একজন।

২০১০ সাল ছিল শেয়ারবাজারের জন্য কলঙ্কজনক এক অধ্যায়। কারসাজি চক্রের খপ্পরে পড়ে অসংখ্য বিনিয়োগকারী নিঃস্ব হয়েছিল। ১১ বছর কেটে গেলেও শেয়ারবাজারের সেই ক্ষত আজও শুকায়নি। শেয়ারবাজারের সেই ভয়াবহ বিপর্যয়ের কারণ খতিয়ে দেখতে খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদের নেতৃত্বে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে সরকার। দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০১১ সালে তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদন তৎকালীন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের কাছে জমা দেন। নিয়ন্ত্রক সংস্থা এসইসি (বর্তমানে বিএসইসি) পুনর্গঠনসহ কমিটি সরকারের কাছে ২৫টি সুপারিশ করে।

এই সুপারিশের প্রেক্ষিতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা পুনর্গঠন করা হয়। শেয়ারবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ নীতিতে পরিবর্তন আনা হয়। বন্ধ করা হয় মার্চেন্ট ব্যাংকের অমনিবাস হিসাব। প্লেসমেন্ট শেয়ারের নীতিমালায় পরিবর্তন আনা হয়ে। স্টক এক্সচেঞ্জ ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন বা মালিকানা থেকে ব্যবস্থাপনা পৃথক করা হয়েছে। প্রতিটি শেয়ারের অভিহিত মূল্য ১০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ধরনের আরো কিছু যুগান্তকারী পরিবর্তন আসে শেয়ারবাজারে।

তবে যুগান্তকারী সেই ২৫ দফা সুপারিশমালার পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন দেখে যেতে পারলেন না খোন্দকার ইব্রাহিম। সবাইকে কাঁদিয়ে আজ বুধবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) না ফেরার দেশে চলে গেছেন অকুতোভয় এই যোদ্ধা।

খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ এমন সময় চলে গেলেন, যখন কিনা বাংলাদেশের আর্থিকখাতসহ সামগ্রিক সুশাসনের পক্ষে উচ্চস্বরে কথা বলার মানুষের সংখ্যাই কমে যাচ্ছে। আপনাকে শ্রদ্ধা খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ। সূত্র : সমকাল ডেস্ক

স্টকমার্কেটবিডি.কম/

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *