সরকারি কোম্পানিগুলো শেয়ার ছাড়া ফের ১ বছর পিছালো

bsecবিশেষ প্রতিবেদক :

শেয়ারবাজারে শেয়ার অফলোডে (শেয়ার ছাড়া) আরও এক বছর সময় পেল সরকারি কোম্পানিগুলো। গতকাল অর্থ মন্ত্রণালয়ে সরকারি কোম্পানির শেয়ার অফলোডের সর্বশেষ অবস্থা নিয়ে অনুষ্ঠিত সভায় কোম্পানিগুলোকে এই সুযোগ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোসলেউদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটি আগামী চার মাসের মধ্যে কোম্পানিগুলোকে কীভাবে আগামী এক বছরের মধ্যে শেয়ারবাজারে নিয়ে আসা যায় তার প্রতিবেদন তৈরি করবে। বৈঠক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সরকারি শেয়ার বাজারে ছাড়া সংক্রান্ত বিষয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে অর্থমন্ত্রী সভাপতিত্ব করেন। বৈঠকে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র সচিব ইউনুসুর রহমান, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান ও সরকারি কোম্পানিগুলোর প্রতিনিধিসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক সূত্র জানায়, শেয়ারবাজারে কোম্পানির শেয়ার অফলোডে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের আওতাধীন এসেনসিয়াল ড্রাগস লিমিটেড জানিয়েছে তারা বর্তমানে বাজারে ৩০ শতাংশ কম দামে ওষুধ সরবরাহ করছে। সাধারণত সরকারি হাসপাতালগুলোতেই এসেনসিয়াল ড্রাগসের ওষুধ সরবরাহ করা হয়। এমন অবস্থায় শেয়ারবাজারে যাওয়ার বিষয়টি তাদের পর্ষদ সভায় আপাতত স্থগিত রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী কোম্পানিটিকে ২০১০ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে শেয়ার অফলোডের নির্দেশ দেওয়া হয়। এরপর অর্থমন্ত্রী কোম্পানিটিকে সর্বশেষ জুন ২০১১ সাল পর্যন্ত সময় বেঁধে দেন। ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত সভায় আইপিওর মাধ্যমে শেয়ার অফলোডের জন্য একই বছরের ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে মতামত প্রদানের সময় দেওয়া হয়। এর উত্তরে কোম্পানিটি জানিয়েছিল শেয়ারবাজারে শেয়ার অফলোডের বিষয়ে পর্ষদ সভায় এ কার্যক্রম আপাতত স্থগিত করেছে।

শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রায় সব প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠান বলে বৈঠকে উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, বাজারে শেয়ার ছাড়তে হলে সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোকে লাভজনক প্রতিষ্ঠান হতে হবে। কিন্তু শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রায় সব প্রতিষ্ঠানই ক্ষতিগ্রস্ত। একমাত্র ছাতক সিমেন্ট ফ্যাক্টরির সঙ্গে সৌদি আরবের একটি কোম্পানির কথা চলছে। তারা যৌথভাবে সিমেন্ট উত্পাদন করতে সম্মত হলে প্রতিষ্ঠানটি লাভের মুখ দেখতে পারে। তখন দেখা যাবে কী করা যায়।

বৈঠকে ইউনিলিভার প্রসঙ্গে বলা হয়, প্রতিষ্ঠানটি লিস্টেট হতে চাচ্ছে না। এ কারণে তারা পরিশোধিত মূলধনও বাড়াচ্ছে না। চেষ্টা করা হবে সরকারি শেয়ারের ১০ শতাংশ বাজারে ছাড়া যায় কি না। তবে কৌশলগত কারণে এসেনসিয়াল ড্রাগসের শেয়ার আপাতত ছাড়া হচ্ছে না বলে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

গতকালের বৈঠকের আগে শেয়ারবাজারে শেয়ার অফলোডের জন্য তালিকায় থাকা ২৬টি প্রতিষ্ঠানের মতামত প্রদানের সুযোগ দেওয়া হয়। এর মধ্যে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের আওতাধীন টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেড জানায়, শেয়ার অফলোডের লক্ষ্যে বিটিসিএলের গেল চার বছরের ব্যালেন্সশিট আইসিবি পর্যবেক্ষণ করছে। আইসিবির মতামত ইতিবাচক হলে শেয়ার অফলোডের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের ৩টি কোম্পানির মধ্যে শেরাটন হোটেল কর্তৃপক্ষ জানায়, বর্তমানে হোটেলটি রেনোভেশনের কাজ চলছে। তা ২০১৮ সালের প্রথমার্ধে শেষ হবে। রেনোভেশনের কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর রি-ব্রান্ডিং করে শেয়ার অফলোডের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সোনারগাঁও হোটেল শেয়ারবাজারে শেয়ার অফলোডের বিষয়ে জানিয়েছে, বর্তমানে সংস্থার সংস্কার ও সম্প্রসারণের কার্যক্রম চলছে। যার আনুমানিক ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৫০ কোটি টাকা। ওই কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ার পর শেয়ার অফলোডের উদ্দেশ্য অর্জন সম্ভব হবে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সরকারি অংশের শেয়ার শেয়ারবাজারে অফলোডের বিষয়ে জানিয়েছে, সিকিউরিটিজ আইন অনুযায়ী শেয়ার অফলোডর জন্য পর পর তিন বছর লাভজনক অবস্থায় থাকার বিধান রয়েছে। এক্ষেত্রে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে বিমান ২৭২ কোটি ২২ লাখ টাকা মুনাফা করেছে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরেও মুনাফা অর্জিত হয়েছে। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে লাভজনক অবস্থায় থাকলে শেয়ার অফলোডের বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।

স্টকমার্কেটবিডি.কম/এমএ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *