বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশকে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করতে এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সরকার নিউক্লিয়ার বিদ্যুৎ কেন্দ্র, কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মতো বড় বড় নানা প্রকল্প গ্রহণ করে ইতিমধ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছে।
ইংরেজি পত্রিকা ডেইলি সান আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এক কথা বলেন।
মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর বসুন্ধরায় পত্রিকাটির কার্যালয়ে এ বৈঠকের আয়োজন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন পত্রিকাটির ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক এনামুল হক চৌধুরী।
বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের অর্জন ও ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা নিয়ে পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ হোসেন ‘জ্বালানি নিরাপত্তা ও ভিশন ২০৪১’ শীর্ষক মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
ডেইলি সানের নির্বাহী সম্পাদক শিয়াবুর রহমান শিহাবের সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব ড. আহমেদ কায়কাউস, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মঈন উদ্দিন, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) চেয়ারম্যান খালেদ মাহমুদ, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) খনিজসম্পদ বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তামিম, বাংলাদেশ-ভারত ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের (বিআইএসপিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক উজ্জ্বল কান্তি ভট্টাচার্য, বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, বিজিএমইএ’র সহসভাপতি মোহাম্মদ নাছির, বাংলাদেশ অটো রি-রোলিং অ্যান্ড স্টিল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. শহিদুল্লাহ প্রমুখ বক্তৃতা করেন।
নসরুল হামিদ বলেন, সরকার সার্কের পাশাপাশি বিমসটেককে কাজে লাগিয়ে চায়নাকে বিদ্যুৎ শেয়ারের অফার দিয়েছে। মিয়ানমার ও কম্বোডিয়া থেকেও বিদ্যুৎ আনার কথা চলছে বলে জানান।
বর্তমানে ১৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারপরও প্রতিনিয়ত বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ছে। এক সময় আরইবি’র ৩ হাজার মেগাওয়াট চাহিদা ছিল, এখন সাড়ে ৬ হাজার মেগাওয়াট দিয়েও সে চাহিদা পূরণ করা যাচ্ছে না। তাদের আরো বিদ্যুৎ চাহিদা আছে বলে তিনি জানান।
যত্রতত্র (আন প্ল্যান ওয়েতে) কলকারখানা স্থাপন না করার পরামর্শ দিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকার আগামী জুন থেকে কলকারখানায় নতুন গ্যাস সংযোগ দেয়া শুরু করবে। তবে ইকোনোমি জোন ছাড়া কোন কলকারখানায় গ্যাস সংযোগ দেয়া হবে না।
বৈঠকে অন্যান্য বক্তারা ২০২১ সালের মধ্যে দেশকে মধ্যম আয়ের ও ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত রাষ্ট্রে উন্নীত করতে জ্বালানি নিরাপত্তার উপর গুরুত্বারোপ করেন। বক্তারা জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জরুরী-স্বল্প-মধ্যম ও দীর্ঘ মেয়াদী বিদ্যুৎ উৎপাদন পরিকল্পনা, জ্বালানিতে বৈচিত্র্যতা আনয়ন এবং গ্যাসের চাহিদা পূরণে প্রাকৃতিক তরলীকৃত গ্যাস (এলএনজি) আমদানির উপর গুরুত্বারোপ করেন।
বক্তারা সরকারের পাওয়ার সিস্টেম মাস্টার প্ল্যান (পিএসএমপি ২০১৬) বাস্তবায়নের উপর জোর দিয়ে প্রতিবেশি দেশসমূহ থেকে বিদ্যুৎ আমদানিরও পরামর্শ দেন।
স্টকমার্কেটবিডি.কম/এমএ