ফাস ফাইন্যান্সের ৫২৩ কোটি টাকা আত্মসাতের তথ্যপ্রমাণ পেয়েছে দুদক

স্টকমার্কেটবিডি প্রতিবেদক :

আর্থিক প্রতিষ্ঠান ফাস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের অর্থ কেলেঙ্কারির অনুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে ৫২৩ কোটি টাকা আত্মসাতের তথ্যপ্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে গতকাল মঙ্গলবার একটি মামলা করার পর আজ বুধবার আরও ১২টি মামলা চূড়ান্ত করেছে দুদক। আগামীকাল বৃহস্পতিবার এই ১২টি মামলা করা হবে।

দুদক বলছে, প্রাথমিক অনুসন্ধানে তারা নিশ্চিত হয়েছে, অস্তিত্বহীন ১৩টি কাগুজে প্রতিষ্ঠানের নামে ফাস ফাইন্যান্স থেকে ৫২৩ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। এর মধ্যে অ্যান্ড বি ট্রেডিং নামের একটি প্রতিষ্ঠানের নামে জাল নথিপত্র তৈরি করে ৪৪ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়। প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী পি কে হালদারের বন্ধু সুব্রত দাসের স্ত্রী শুভ্রা রানী ঘোষ। এ অভিযোগে গতকাল পি কে হালদার, অ্যান্ড বি ট্রেডিং–এর শুভ্রা রানী ঘোষসহ ফাস ফাইন্যান্সের চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম, একাধিক পরিচালক, সাবেক এমডি রাসেল শাহরিয়ারসহ ১৩ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। তাঁদের মধ্যে রাসেলকে গতকাল বিকেলে মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

দুদক সূত্র জানায়, রাসেল ফাস ফাইন্যান্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) থাকা অবস্থায় ক্ষমতার অপব্যবহার করে একক স্বাক্ষরেই প্রায় ৫০০ কোটি টাকা ঋণ প্রস্তাব বোর্ডে উপস্থাপন করে অনুমোদন করান। পরে সে টাকা পি কে হালদারের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কোম্পানিতে স্থানান্তর করেন। এ বিষয়ে আরও তথ্য উদ্ধারের জন্য রাসেলকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।

দুদকের জনসংযোগ শাখা জানিয়েছে, ফাস ফাইন্যান্স থেকে অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় আজ আরও ১২টি মামলার অনুমোদন দিয়েছে দুদক। ১২টি কাগুজে প্রতিষ্ঠানের ৪৭৯ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়। এর মধ্যে ন্যাচার এন্টারপ্রাইজের নামে ৪৫ কোটি টাকা, নিউট্রিক্যালের নামে ৩০ কোটি টাকা, এসএ এন্টারপ্রাইজের নামে ৪২ কোটি টাকা, সুখাদার নামে ৪০ কোটি টাকা, এমটিবি মেরিনের নামে ৪০ কোটি টাকা, হাল ইন্টারন্যাশনালের নামে ৪৫ কোটি টাকা, স্বন্দীপ করপোরেশনের নামে ৪০ কোটি টাকা, দিয়া শিপিংয়ের নামে ৪৪ কোটি টাকা, মুন এন্টারপ্রাইজের নামে ৩৫ কোটি টাকা, বর্ণ নামক প্রতিষ্ঠানের নামে ৩৮ কোটি টাকা, আরবি নামের একটি প্রতিষ্ঠানের নামে ৪০ কোটি টাকা ও মেরিন ট্রাস্ট নামের একটি প্রতিষ্ঠানে নামে ৪০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়।

ইতিমধ্যে ফাস ফাইন্যান্সের চেয়ারম্যান, এমডি ও বোর্ডের সদস্যসহ ১৪ জন কর্মকর্তার বিদেশ গমনের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি থেকে ১ হাজার ৩০০ কোটি আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। অনুসন্ধান শেষে প্রাথমিকভাবে ৫২৩ কোটি টাকা আত্মসাতের তথ্য পেল দুদক।

পি কে হালদারের বিপুল অর্থ কেলেঙ্কারির অনুসন্ধান করছেন দুদকের উপপরিচালক মো. গুলশান আনোয়ার প্রধান। অ্যান্ড বি ট্রেডিংয়ের নামে ঋণ নিয়ে ৪৪ কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় গতকাল দায়ের করা মামলার বাদী ছিলেন তিনি।

স্টকমার্কেটবিডি.কম/জেড

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *